Bangladesh

অনুসন্ধানী রিপোর্টের জন্য জিআইজেএন এবার বাংলাদেশকে স্থান দিলো

২০২৩ সালে বাংলাদেশের সেরা অনুসন্ধানী প্রতিবেদনগুলোর একটি তালিকা প্রকাশ করেছে ‘গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম নেটওয়ার্ক’ বা জিআইজেএন। এতে মোট আটটি প্রতিবেদন স্থান পেয়েছে। নেটওয়ার্কটি জানিয়েছে, বছরের সেরা অনুসন্ধানী রিপোর্টগুলো খুঁজে বের করা বেশ দুঃসাধ্য একটি কাজ। তারপরেও তারা বাংলাদেশে ৪৫টি বেসরকারি টিভি চ্যানেল, ১২০০ দৈনিক সংবাদপত্র এবং শত শত অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঘেঁটে একটি তালিকা তৈরি করেছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বাংলাদেশ যখন পিছিয়ে পড়ছে তখন গণমাধ্যমগুলোর অসাধারণ সব অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের প্রশংসা করেছে জিআইজেএন। এখন দরজায় কড়া নাড়ছে জাতীয় নির্বাচন, বাড়ছে গুজব ও ডিজিটাল হুমকি, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ক্রমশ গভীর হচ্ছে এবং নাগরিক স্থান সংকুচিত হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে ২০২৩ সালের সেরা অনুসন্ধানী প্রতিবেদনগুলোর গুরুত্ব আরও বেড়ে গেছে। জিআইজেএনের বাছাই করা রিপোর্টগুলোতে স্থান পেয়েছে নির্বাচনের আগে ভুল তথ্য ছড়ানোর অপারেশন, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর হাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন, রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী ব্যক্তিদের দুর্নীতি, অনলাইনে নারীদের হেনস্তা, কৃষকদের ওপর শোষণ এবং স্বাস্থ্য খাতে পদ্ধতিগত অনিয়ম। রিপোর্টগুলোর তালিকা নিচে দেয়া হলো:

বাংলাদেশের নির্বাচনের আগে ভুয়া বিশেষজ্ঞরা গুজব ছড়াচ্ছে: তালিকায় প্রথমেই রয়েছে এএফপি’র এই রিপোর্ট। সংবাদ সংস্থাটির অনুসন্ধানে উঠে এসেছে কীভাবে ভুয়া পরিচয়, ছবি এবং নাম ব্যবহার করে গণমাধ্যমগুলোতে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন নীতির প্রশংসা করা হচ্ছে।

স্বাধীন বিশেষজ্ঞ পরিচয়ে সরকারের প্রশংসা করে শত শত লেখা প্রকাশিত হয়েছে। এএফপি’র অনুসন্ধানে এমন সাত শতাধিক প্রতিবেদনের কথা বলা হয়েছে। আর এসব লেখা লিখেছেন প্রায় তিন ডজন অপরিচিত কিংবা ভুয়া ‘বিশ্লেষক’। এসব লেখকদের সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা মূল ধারার কোনো গণমাধ্যমে উপস্থিতি নেই। এমনকি ভারতীয় নায়িকার ছবি ও ভুয়া নাম ব্যবহার করে একজন বর্তমান সরকারের প্রশংসা করে অন্তত ৬০টি আর্টিকেল প্রকাশ করেছেন।

চিকিৎসার ব্যয় বাড়াচ্ছে চিকিৎসকদের জন্য ব্যয়বহুল উপহার: চট্টগ্রামভিত্তিক গণমাধ্যম একুশে পত্রিকার এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো কীভাবে গাড়ি, বাড়ি ও অর্থসহ নানা উপহার দিয়ে থাকেন চিকিৎসকদের। এর মাধ্যমে তারা তাদের ওষুধের প্রচারণা চালান, যা ‘ফার্মাসিউটিক্যালস মার্কেটিং প্রাক্টিসের’ যে কোডগুলো রয়েছে তার লঙ্ঘন। ওষুধ কোম্পানিগুলোর এসব কাজের জন্য রোগীদের ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, রোগীদের দিয়ে অতিরিক্ত টেস্ট বা পরীক্ষা করানোর জন্য চিকিৎসকরা বড় আকারের কমিশন পান। ‘রেফারেল ফি’ নাম দিয়ে একেকটি টেস্টের জন্য চিকিৎসকদের ২০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন দেয়া হয়। আর এতে রোগীদের চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে যায়। মাসব্যাপী চলা এই অনুসন্ধানে সাংবাদিক সব ধরনের প্রমাণ সংগ্রহ করেন। চিকিৎসকদের দেয়া ৬৫টি ব্যাংক চেক, কয়েক ডজন প্রেসক্রিপশন এবং ওষুধ কোম্পানিগুলোর বেশ কয়েকজন হুইসেলব্লোয়ারের সাক্ষাৎকার নেন তিনি। 

কৈশোরেই কারাভোগের ট্রমা: সিভয়েস প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে জানা গেছে যে, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ২২০ জন বন্দির বয়স ১৮ বছরের কম। বয়স নির্ণয় ছাড়া, এমনকী কোনোরকম পরিচয়পত্র দাখিল না করে মামলার নথিতে তাদের প্রাপ্তবয়স্ক আসামি উল্লেখ করে চালান করে দেয়া হয় আদালতে। ফলে সংশোধনাগারের পরিবর্তে তাদের ঠাঁই হয় কারাগারে। ওই অনুসন্ধানে উদ্ঘাটিত হয়েছে এমন অন্তত ১০টি ঘটনা। এ ছাড়াও এসব শিশুর বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করার ঘটনাও ঘটেছে।

টেলিগ্রাম অ্যাপে নারীদের হেনস্তা, ব্ল্যাকমেইল: চ্যানেল-২৪ এর অনুসন্ধানী প্রোগ্রাম সার্চলাইটের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে টেলিগ্রাম অ্যাপভিত্তিক একটি অপরাধী চক্রের কার্যক্রম। তারা তরুণীদের ব্যক্তিগত ভিডিও ও ছবি টেলিগ্রাম অ্যাপের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছিল। অর্থের বিনিময়ে তারা এসব ছবি ও ভিডিও বিক্রি করতো। আবার কখনো কখনো ভিকটিমকে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় করতো তারা। 

ওই অনুসন্ধানী রিপোর্ট অনুযায়ী, দাবিকৃত টাকা না পেলে অনলাইনে এসব ব্যক্তিগত কনটেন্ট ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিতো অভিযুক্তরা। কনটেন্ট বিক্রি করতে তারা ফেসবুক, ইউটিউব ও ইনস্টাগ্রামে প্রমোশনাল ভিডিও তৈরি করতো, যাতে ওই ভিডিওর কিছু অংশ জুড়ে দেয়া থাকতো।

সাংবাদিক ওই টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হয়ে প্রিমিয়াম কনটেন্ট হিসেবে বিক্রি হওয়া বেশ কয়েকটি ভিডিও নথিভুক্ত করেন। এসব ভিডিও দুই শতাধিক ক্রেতার কাছে বিক্রি করা হয়। রিপোর্টে ভিকটিমের সাক্ষাৎকারও যুক্ত করা হয়েছে, যাদের একজন আত্মহত্যার কথাও ভেবেছিলেন। পুলিশ এরপর বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। শুধুমাত্র ইউটিউবেই এই এপিসোডটি ১.৩ মিলিয়ন ভিউ হয়েছে। 

পুলিশের ‘ডেথ স্কোয়াড’: র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র‍্যাবকে নিয়ে কয়েক মাস ধরে ডয়চে ভেলের ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিট এবং সুইডেনভিত্তিক নেত্র নিউজ যৌথ অনুসন্ধান চালিয়ে এই রিপোর্ট প্রকাশ করে। এই বাহিনীতে কাজ করা দুই সদস্য এই ‘ডেথ স্কোয়াড’-এর ভেতরের তথ্য জানান। র‍্যাব কীভাবে কাজ করে তার বিস্তারিত জানান তারা। প্রতিবেদনে হুইসেলব্লোয়ারদের দাবি নানাভাবে ক্রস-চেক করা হয়। 

তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই রিপোর্ট অস্বীকার করে একে ‘কাল্পনিক, বানোয়াট এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে অভিহিত করেছে। মার্কিন দূতাবাস র‌্যাবকে প্রশিক্ষণ ও সহায়তায় তার অতীতের ভূমিকা স্বীকার করেছে। কিন্তু তারা জানিয়েছে, ২০১৮ সালেই তারা তাদের ফান্ডিং বন্ধ করে দিয়েছে। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে র‌্যাব এবং কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। মানবাধিকার কর্মীরা দাবি করেছেন যে, ২০০৯ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে র‌্যাব ৭০০টিরও বেশি হত্যাকাণ্ডে জড়িত। 

হত্যা মামলার আসামির ডাকে দুবাইয়ে সাকিব: প্রতিদিনের বাংলাদেশের এক প্রতিবেদনে জানানো হয় যে, বাংলাদেশের সব থেকে জনপ্রিয় ক্রীড়া তারকা সাকিব আল-হাসান দুবাইতে একটি জুয়েলারি শপ উদ্বোধনে যান। কিন্তু যে ব্যক্তির আমন্ত্রণে তিনি দুবাই গিয়েছিলেন তিনি হচ্ছেন বাংলাদেশে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা মামলার আসামি। 

কীভাবে একজন পলাতক আসামি থেকে দুবাইতে এত বড় জুয়েলারি শপের মালিক হলেন ওই ব্যক্তি তা ওই রিপোর্টে উঠে এসেছে। ওই অপরাধ ঘটিয়ে তিনি পরিচয় পাল্টে ভারতে পালিয়ে যান। সেখানে বিয়ে করে পরে তিনি দুবাইতে স্থায়ী হন। প্রতিবেদনে তার ব্যবসার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। 

নিউ ইয়র্ক সিটিতে একজন রাজনীতিকের সন্দেহজনক সম্পত্তি ক্রয়: বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ৪০ লাখ ডলার ব্যয়ে একাধিক বাড়ি কিনেছেন। বিষয়টি নির্বাচনী হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেননি। এই তথ্য অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক ‘অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট’ বা ওসিসিআরপি তাদের ওয়েবসাইটে করা একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে। রিপোর্টে বলা হয়, তিনি ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে এই সম্পদ কিনেছেন। এর আগে তিনি অনেক কম বেতনে যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করতেন। এমনকি তিনি ক্যাব ড্রাইভার হিসেবেও কাজ করেছেন। ২০০৯ সালে তিনি বাংলাদেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রীর স্পেশাল এসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ শুরু করেন। ওই পদে নিযুক্ত হওয়ার পাঁচ বছরের মাথায় ২০১৪ সাল থেকে তিনি নিউ ইয়র্কে সম্পদ কিনতে থাকেন। ২০১৮ সালে নির্বাচিত হওয়ার পরেও তার সম্পদ ক্রয়ের ধারা অব্যাহত ছিল। ওসিসিআরপি প্রশ্ন উত্থাপন করেছে যে, ওই এমপি কীভাবে বাড়ি কিনতে এত এত অর্থ পেলো। যেহেতু তার সরকারি বেতন ছিল মাসে মাত্র এক হাজার মার্কিন ডলার।

পানি মোটরওয়ালাদের নিষ্পেশনের শিকার খরা-পীড়িত কৃষক: টিউবওয়েল মালিকরা (স্থানীয়ভাবে পানিদার বা পানি মোটরওয়ালা নামে পরিচিত) বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে লাখ লাখ কৃষকের জীবন নিয়ন্ত্রণ করে আসছে বহুদিন ধরে। দেশের বরেন্দ্র অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে প্রায় এক মাসব্যাপী সরজমিন ঘুরে এসে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে দ্য থার্ড পোল। ওই প্রতিবেদনটিতে উঠে এসেছে স্থানীয় কৃষকদের উপরে প্রভাবশালী পানি মোটরওয়ালাদের প্রবঞ্চনার নানা দিক। 
বাংলাদেশের ওই অঞ্চলটি দেশের ৪০ শতাংশ ধান উৎপাদন করে। কিন্তু এই পানি মোটরওয়ালাদের নিষ্পেষণের সামনে অসহায় এই কৃষকরা। গ্রীষ্ম মৌসুমে পানি সরবরাহের জন্য উচ্চমূল্য নির্ধারণ করে থাকে এই মোটরওয়ালারা। সরকারের পক্ষ থেকে যথেষ্ট তদারকি না থাকায়, এই ‘নব্য পানিদার’ বা পাম্প মালিকরা দরিদ্র কৃষকদের কাছ থেকে সেচের পানির জন্য চড়া মূল্য নিয়ে থাকে। রিপোর্টে কৃষকদের ওপর এই নিষ্পেষণের প্রভাব তুলে ধরা হয়েছে। এর প্রভাবে দুই কৃষকের আত্মহত্যার কথাও তুলে ধরা হয়েছে রিপোর্টে।

Show More

7 Comments

  1. I don’t know whether it’s just me or if everybody else experiencing problems
    with your website. It looks like some of the text in your content are running
    off the screen. Can somebody else please provide feedback
    and let me know if this is happening to them as well?
    This may be a issue with my browser because I’ve had this happen previously.
    Thank you

    my website – vpn coupon ucecf

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
totoslotgacor
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
toto gacor
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor
situs togel
Toto Slot
bacan4d
bacan4d