Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Trending

অপ্রয়োজনীয় ঋণ থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ, সুদ দিতে হবে লক্ষাধিক কোটি টাকা

চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে অন্তর্বর্তী সরকারকে সুদ খাতে ব্যয় করতে হবে এক লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে নেওয়া ঋণের বিপরীতে ৯৩ হাজার কোটি টাকার সুদ গুনতে হবে। এ ছাড়া বিদেশী ঋণের সুদ ব্যয় ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। 
প্রতিবছর বিদেশী ঋণের ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ জুলাই মাসে উন্নয়ন সহযোগিরা অর্থছাড় করেছে প্রায় ৩৬ কোটি ডলার। অন্যদিকে, একই মাসে বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগীদের সুদ ও আসল মিলিয়ে মোট প্রায় ৩৯ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হয়েছে। 
অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে উন্নয়ন সহযোগীরা যে পরিমাণ অর্থছাড় করেছে, বাংলাদেশ তার চেয়ে বেশি পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করেছে। এ অবস্থায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও অপ্রয়োজনীয় ঋণ থেকে বেরিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকি অপেক্ষাকৃত কম প্রয়োজনীয় প্রকল্প থেকে সরে আসার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। 
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দিয়েছেন। তবে চলমান গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে উন্নয়ন সহযোগিদের সহায়তা চেয়েছেন তিনি।

দায়িত্ব গ্রহণের পর অর্থ উপদেষ্টা ইতোমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান এবং ভারতীয় কূটনৈতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠকে তিনি আগের সরকারের নেওয়া  বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে সরাসরি দাতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। 
উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে বৈঠকে বিভিন্ন প্রকল্পে নেওয়া ঋণের সুদের হার কমানো এবং পরিশোধের মেয়াদ বৃদ্ধিরও দাবি করেছেন অর্থ উপদেষ্টা। তবে এ বিষয়ে দাতারা ইতিবাচক আভাস দিলেও তাদের পক্ষ থেকে কোনো কিছু খোলাসা করা হয়নি। ফলে সুদ ও আসল পরিশোধের বিষয়টি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। চলতি অর্থবছরেই এ খাতে সরকারের ব্যয় হবে প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকা, যা অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে সবচেয়ে বেশি। 
জানা গেছে, বড় অবকাঠামো নির্মাণ, বিদ্যুৎ প্রকল্প এবং নানা উন্নয়ন কর্মকা-ের জন্য বাংলাদেশ যে বিদেশী ঋণ নিয়েছে তার পরিমাণ ১০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশ মুদ্রায় যা প্রায় ১২ লাখ কোটি টাকার বেশি। এসব ঋণের ৭৯ ভাগ নিয়েছে সরকার বাকি ২১ ভাগ নিয়েছে বেসরকারিখাত। বেশিরভাগ ঋণ ১০-১৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ড ধরে ৩০-৪০ বছরের মধ্যে পরিশোধ করার শর্তে নেওয়া হয়েছে। ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়ায় টাকার অঙ্কে বিদেশী ঋণ প্রায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। 
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে মূলত চীন, জাপান, ভারত, কোরিয়া এবং রাশিয়ার কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি ঋণ নিয়েছে। এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি) এবং বিদেশী বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে থাকে। যেসব প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে তা সময় মতো শেষ করতে না পারলে ঋণ আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। গত সাত বছরের মধ্যে দ্বিগুন  হয়েছে বিদেশি ঋণ। 
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, ঢাকার মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ে, পায়রাবন্দর, পদ্মায় রেল সংযোগ বা যাই হচ্ছে সব অর্থই বাইরে থেকে ঋণ করে আনতে হচ্ছে।

এগুলো ফেরত দেওয়ার পরিমাণটা কিন্তু আস্তে আস্তে বাড়তে থাকবে। এ কারণে সরকারের আয় বাড়ানোর দিকে বেশি নজর দিতে হবে। এটা মনে রাখতে হবে ঋণ পরিশোধের বাড়তি চাপ যেন দেশের মানুষের জীবনযাত্রার ওপর কোনো প্রভাব ফেলতে না পারে। এ ছাড়া অপ্রয়োজনীয় কিংবা কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প থেকে সরে আসা উচিত বলেও তিনি মনে করেন।

এদিকে, অর্থ বিভাগ কর্র্তৃক  সম্প্রতি প্রকাশিত ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৪-২০২৫ হতে ২০২৬-২৭’ এ প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে বিদেশী ও অভ্যন্তরীণ ঋণের আসল ও সুদ পরিশোধের পরিমাণ সামনের বছরগুলোতে আরও বাড়বে। এতে বলা হয়, চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে অন্তর্বর্তী সরকারকে সুদখাতে ব্যয় করতে হবে এক লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী আগামী ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ বাবদ ব্যয় বেড়ে হবে এক লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ সুদ ব্যয় এক লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশী সুদ ব্যয় হবে ২৩ হাজার কোটি টাকা। এর পরের অর্থবছরে অর্র্থাৎ, ২০২৬-২০২৭ তা আরো বৃদ্ধি পেয়ে হবে এক লাখ ৫৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে দেশী সুদ ব্যয় হবে এক লাখ ২৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বিদেশী সুদ বাবদ ব্যয় হবে ২৬ হাজার কোটি টাকা। 
আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রায় ১৬ বছরে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে বিদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণ ঋণ নেওয়া হয়। এসব মেগা প্রকল্পের কয়েকটি ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও অপ্রয়োজনীয়। এর মধ্যে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেল নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক করছেন সমালোচকরা।

তাঁরা বলছেন, বিপুল অঙ্কের ঋণ নিয়ে এই টানেল  করা ঠিক হয়নি। এতে অর্থের অপচয় করা হয়েছে। আবার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করা হলেও সেখানে চীনসহ অন্য দাতাদের সহযোগিতায় রেল সংযোগ করা হয়েছে। তবে জাপানের অর্থায়নে নির্মিত ঢাকার মেট্রোরেল ইতোমধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে বলে মনে করা হয়।  
জানা গেছে, ঋণের সুদ-আসল পরিশোধে সরকারকে বেগ পেতে হচ্ছে। এক বছরের ব্যবধানে বিদেশী ঋণের সুদ ব্যয়ই বেড়েছে ১৬২ শতাংশ পর্যন্ত। অর্থ বিভাগের করা সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যানে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। অর্থ বিভাগের পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে, গেল ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) বিদেশী ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় হয়েছে ১১ হাজার ৬০২ কোটি টাকা।

এর আগের বছর ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে একই সময়ে (জুলাই-মার্চ) সুদ পরিশোধে ব্যয় হয়েছিল চার হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বেড়েছে ১৬২ শতাংশ। টাকার অঙ্কে যা সাত হাজার ১৬৭ কোটি টাকা। 
অন্যদিকে, একই সময়ে দেশী ঋণের সুদ ব্যয় বেড়েছে ৭ শতাংশ। এই অভ্যন্তরীণ ঋণের মধ্যে ব্যাংক খাতে ঋণের সুদ বেড়েছে ২১ শতাংশ। কিন্তু নন-ব্যাংক বা সঞ্চয়পত্র থেকে সুদ ব্যয় নেগেটিভ হয়ে গেছে। গত অর্থবছরে নয় মাসে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ছিল, ৫৯ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছরে একই সময়ে যা ছিল ৫৫ হাজার ৯৬৯ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বেড়েছে তিনহাজার ৬২ কোটি টাকা। 
অর্থ বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে নয় মাসে সুদখাতে অর্থ ব্যয় হয়েছে ৭১ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ৬০ হাজার ৪০৪ কোটি টাকা। এক বছরে সুদ ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে ১৮ শতাংশ বা ১০ হাজার ৭৮৭ কোটি টাকা। এছাড়া অর্থ বিভাগের হিসেবে আগামী তিন অর্থবছরে শুধু সুদখাতে ব্যয় করতে হবে চার লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা। যা দিয়ে দেড় বছরের বেশি উন্নয়ন ব্যয় (এডিপি) মেটানো সম্ভব। 
চলতি অর্থবছরে এডিপি ব্যয় ধরা হয়েছে দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, তিন বছরের সুদ ব্যয় দিয়ে ১২টির অধিক পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব। উল্লেখ্য, পদ্মা সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল ৩২ হাজার ৬০৫ কোট টাকা। ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের জুলাই মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ ৫২.৩৪ শতাংশ বেড়েছে।

গত অর্থবছরের জুলাই মাসে বাংলাদেশ বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করেছিল ২৫৩.০৯ মিলিয়ন ডলার। এছাড়া গত অর্থবছরে (২০২৩-২৪) বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল মিলিয়ে বাংলাদেশকে প্রায় ৩৩৬ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হয়েছে। ফলে এই প্রথমবারের মতো এক বছরে বিদেশি ঋণ পরিশোধ ৩০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। পরিশোধ করা অর্থের মধ্যে আসল ২০১ কোটি ডলার, আর সুদের পরিমাণ প্রায় ১৩৫ কোটি ডলার।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto