অভিষেকের আগে শি জিনপিংকে ট্রাম্পের ফোন
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং’এর সাথে ফোনালাপ করেছেন। এর ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগে, চীন ঘোষণা করে যে তারা সোমবার ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভাইস প্রেসিডেন্ট হান ঝেংকে ওয়াশিংটনে পাঠাচ্ছে।
ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম “ট্রুথ সোশ্যাল” ‘এ এই ফোনালাপকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের জন্য “খুব ভালো” বলে অভিহিত করেন এবং বলেন যে তারা বাণিজ্যিক ভারসাম্য, ফেন্টানিল, টিকটক ও “আরও অনেক বিষয়ে” আলোচনা করেন। ভয়েস অফ আমেরিকার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ট্রাম্প ওই পোস্টে লেখেন, “এটি আমার আশা যে আমরা একত্রে বহু সমস্যার সমাধান করতে পারবো এবং তা অবিলম্বে শুরু হবে। এই পৃথিবীকে আরও শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ করার জন্য প্রেসিডেন্ট শি এবং আমি সাধ্যমত সবকিছু করবো।” চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম জানায় ফোনালাপের সময়ে ট্রাম্পকে তার নির্বাচনী বিজয়ের জন্য শি শুভেচ্ছা জানান এবং আগামি চার বছর যুক্তরাষ্ট্র চীন সম্পর্কের উন্নয়নের বিষয়ে তাঁর এবং নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের গভীর প্রত্যাশা রয়েছে। চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারক সিসিটিভিতে প্রকাশিত শি’র বক্তব্যে বলা হয়,“আমরা উভয়ই আমাদের মধ্যে আলাপকে খুব গুরুত্ব দিচ্ছি, আমরা উভয়ই আশা করছি আমেরিকার প্রেসিডেন্টের এই নতুন মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের সূচনা হবে শুভ এবং আমরা উভয়ই চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে চাই যাতে নতুন করে এই সূচনা পর্ব থেকে আমরা আরও অগ্রগতি সাধন করতে পারি।”
শি বলেন যদিও বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে মতপার্থক্য থাকবে তবু প্রধান বিষয়টি হচ্ছে, “পরস্পরের মূল স্বার্থ ও প্রধান উদ্বেগগুলির প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং সমস্যার যথার্থ সমাধান খুঁজে বের করা”। শি তাইওয়ানের বিষয়টি “যতœসহকারে” দেখার জন্য ট্রাম্পের প্রতি জোর আবেদন জানান। বেইজিং দাবি করে যে গণতান্ত্রিক তাইওয়ান হচ্ছে তাদের এলাকার অংশ এবং ওই দ্বীপটিকে চীনে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রয়োজনবোধে শক্তি প্রয়োগের হুমকি দিয়েছে। চীনের বিবরণ অনুযায়ী, শি ও ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ, ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যকার সংঘাত আর প্রধান সব আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে মত বিনিময় করেন।
শুক্রবার দিনে আরো আগের দিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা করে যে অভিষেক অনুষ্ঠানে শি ‘র প্রতিনিধিত্ব করবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট হান ঝেং। তার অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ট্রাম্প, প্রেসিডেন্ট শি ও অন্যান্য বিদেশি নেতাদের আমন্ত্রণ জানানোর এক মাসেরও বেশি সময় পরে এ ঘোষণাটি আসলো। এটি অভূতপূর্ব একটি পদক্ষেপ যা আগের ঐতিহ্য থেকে ভিন্ন কারণ অতীতে বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, হানকে পাঠিয়ে বেইজিং নতুন ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি তাদের “বন্ধুত্বের মনোভাব” প্রদর্শন করছে।