Bangladesh

অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘হস্তক্ষেপ’ নিয়ে ভারতের গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেছেন পররাষ্ট্র সচিব

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, কোনো দেশ যদি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে, তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশ তাদের সাথে সম্পৃক্ত থাকার চেষ্টা করবে এবং তাদের বোঝানোর চেষ্টা করবে যে, বাংলাদেশের উদ্দেশ্য নিয়ে তাদের সন্দেহ করার কোনো কারণ নেই।

বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে ডব্লিউআইওএনের কূটনৈতিক প্রতিবেদক সিধান্ত সিবালকে তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, প্রতিটি দেশেরই তাদের অধিকার বা এখতিয়ার রয়েছে এবং তারা সবাই আমাদের উন্নয়ন সহযোগী।’

মাসুদ মোমেন বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিনয় মোহন কোয়াত্রা ২+২ ভারত-মার্কিন বৈঠকের পর ভারতের অবস্থান কী তা আগেই বলেছেন।

মাসুদ বলেন, ‘তিনি আমার কাছে এ কথার পুনরাবৃত্তি করেছেন এবং এই অবস্থানের প্রশংসা করেছেন যে নির্বাচন আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং আমাদের প্রতিষ্ঠান ও জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে এবং সরকারও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

মাসুদ বলেন, ‘বর্তমানে কয়েকটি রাজনৈতিক দল ছাড়া সব রাজনৈতিক দল প্রার্থী মনোনয়ন, বাছাইয়ের বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতেছে।’

আশা করে তিনি বলেন, জনগণের অংশগ্রহণে তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করবে এবং বিদেশী পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানানোর জন্য উন্মুক্ত থাকবে, যাতে তারা এসে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারে এবং দেখতে পারে যে তারা কতটা অবাধ ও সুষ্ঠু।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মাসুদ বলেন, কিছু কিছু কৃষিপণ্য আছে যেখানে ঘাটতি রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা যদি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কিছু নিশ্চয়তা পেতে পারি যে দ্রুত সময়ের মধ্যে এগুলো বাংলাদেশে সরবরাহ করা যেতে পারে, যদি না ভারতে কিছু অভ্যন্তরীণ বাধ্যবাধকতা যেমন ঘাটতি থাকে। সুতরাং, আপনি জানেন, যদি সেই আশ্বাস দেয়া হলে আমরা তাতে নীতিগতভাবে একমত হবো। তবে প্রাসঙ্গিক প্রতিষ্ঠান ও প্রাসঙ্গিক সংস্থাগুলোকে বাছাই করার সমস্যা এবং এটি কীভাবে করা যেতে পারে, সেই ব্যবস্থা করতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। তবে নীতিগতভাবে এটি দুর্দান্ত।’

মাসুদ বলেন, শুক্রবার তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিনয় মোহন কোয়াত্রার সাঘে খুব ফলপ্রসূ আলোচনা করেছেন এবং অনেক দ্বিপক্ষীয় বিষয় এবং আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় বিষয় নিয়েও আলোচনা করেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা ২০২৩ সালে সংঘটিত অনেক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি পর্যালোচনা করেছি এবং কীভাবে আমরা নিকট ভবিষ্যতে অর্থাৎ ২০২৪ এবং তার পরেও নিজেদের অবস্থান নির্ধারণ করতে চাই।’

বাংলাদেশ সফলভাবে এলডিসি উত্তরণের মানদণ্ড পূরণ করেছে এবং ২০২৬ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করায় তারা সিইপিএ নিয়ে আলোচনা করেন।

মাসুদ বলেন, ‘সুতরাং, সমস্ত আন্তর্জাতিক সহায়তা ব্যবস্থা প্রত্যাহার করা হবে, যদিও কিছু দেশ স্বতন্ত্রভাবে ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশকে কিছু রূপান্তর ব্যবস্থা দিয়েছে।’

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ভারত সাফটা’র বিধানসহ বিভিন্ন সহায়তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যার মাধ্যমে সার্কের অধীনে স্বল্পোন্নত দেশগুলো নির্দিষ্ট কিছু ক্যাটাগরিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে।

তাই ২০২৬ সালের পর পরিস্থিতি ভিন্ন হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ‘তাই আমরা সিইপিএ বা কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট নিয়ে আলোচনা করছি এবং দুই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একে অপরের সাথে যোগাযোগ রাখছে, তারা একটি কারিগরি কমিটি গঠন করেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সিইপিএ চালু করতে পারি, বিশেষ করে ২০২৬ সালের নভেম্বরের মধ্যে।’

পররাষ্ট্র সচিব ভারতীয় পররাষ্ট্র দফতরের সচিবের সাথে পরামর্শের জন্য নয়া দিল্লিতে ছিলেন।

সাক্ষাৎকালে পররাষ্ট্র সচিব কানেক্টিভিটি, রোহিঙ্গা সঙ্কট, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কোটাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button