Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

অর্থনীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ ১৫ বছরে ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার

আওয়ামী লীগের শাসনামলে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১৫ বছরে দেশ থেকে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। স্থানীয় মুদ্রায় যা ২৮ লাখ কোটি টাকা। এই অর্থ গত ৫ বছরে দেশের জাতীয় বাজেটের চেয়ে বেশি। আলোচ্য সময়ে প্রতিবছর পাচার হয়েছে ১৬ বিলিয়ন ডলার বা ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ১৫ বছরের পাচারের অর্থ দিয়েই ৭৮টি পদ্মা সেতু করা সম্ভব। অর্থনীতির অবস্থা মূল্যায়নে গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে অর্থ পাচারের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) রিপোর্টের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে রোববার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে শ্বেতপত্র সংক্রান্ত কমিটির প্রধান বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য নেতৃত্বাধীন কমিটি। প্রতিবেদনে বলা হয়, আলোচ্য সময়ে সবচেয়ে দুর্নীতি হয়েছে-ব্যাংকিং খাত, বিদ্যুৎ-জ্বালানি, উন্নয়ন প্রকল্প, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে। ২৯টি প্রকল্পের মধ্যে সাতটি বড় প্রকল্প পরীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতিটিতে অতিরিক্ত ব্যয় ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি। ব্যয়ের সুবিধা বিশ্লেষণ না করেই প্রকল্পের ব্যয় প্রায় ৭০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। ১৫ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ৭ লাখ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে। এর ৪০ শতাংশ অর্থ আমলারা লুটপাট করেছে। এ সময়ে কর অব্যাহতির পরিমাণ ছিল দেশের মোট জিডিপির ৬ শতাংশ। এটি অর্ধেকে নামিয়ে আনা গেলে শিক্ষা বাজেট দ্বিগুণ এবং স্বাস্থ্য বাজেট তিনগুণ করা যেত। বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। এর ১০ শতাংশ অবৈধ লেনদেন ধরা হলে পরিমাণ হবে কমপক্ষে ৩ বিলিয়ন ডলার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ব্ল্যাকহোলের গভীরে ব্যাংকিং খাত। খেলাপি ঋণ ৬ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থ পাচারে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে বিচারকাজ শুরুর সুপারিশ করেছে কমিটি। রিপোর্ট প্রদান অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস বলেন, এটি ঐতিহাসিক দলিল। বিষয়টি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘সমস্যাটি আমরা যতটা ভেবেছিলাম তার চেয়েও গভীর। শ্বেতপত্রে উঠে এসেছে কীভাবে চামচা পুঁজিবাদ অলিগার্কদের জন্ম দিয়েছে।

দেশের আর্থিক খাতের প্রকৃত অবস্থা মূল্যায়নে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে ২৮ আগস্ট ১১ সদস্য বিশিষ্ট শ্বেতপত্র প্রস্তুতি কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। কমিটিকে যেসব বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে সেগুলো হলো-সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনা, মূল্যস্ফীতি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা, জিডিপি প্রবৃদ্ধি, বহির্খাত (আমদানি, রপ্তানি, রেমিট্যান্স, এফডিআই, রিজার্ভ এবং বিদেশি ঋণ), ব্যাংকিং খাতের পরিস্থিতি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিস্থিতি, সরকারের ঋণ, পরিসংখ্যানের মান, বাণিজ্য, রাজস্ব, ব্যয়, মেগা প্রকল্প, ব্যবসার পরিবেশ, দারিদ্র্য ও সমতা, পুঁজিবাজার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী ও জলবায়ু ইস্যু, বেসরকারি বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান। কমিটি রোববার রিপোর্ট জমা দিয়েছে। সোমবার সংবাদ সম্মেলনে এসব কমিটির পক্ষ থেকে এসব বিষয়ের ব্যাখ্যা দেওয়া হবে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। বছরে পাচার হয়েছে ১৬ বিলিয়ন ডলার। প্রতিবছর মোট দেশজ উৎপাদনের ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। পাচারের অর্থ দেশের রপ্তানি ও রেমিট্যান্স মিলিয়ে মোট বৈদেশিক মুদ্রার এক-পঞ্চমাংশ এবং জাতীয় সঞ্চয়ের ১১ দশমিক ২ শতাংশ। বিভিন্ন উপায়ে এই অর্থ পাচার হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে-বাণিজ্যভিত্তিক মানি লন্ডারিং, নগদ মানি লন্ডারিং, ব্যাংক, শেয়ারবাজার এবং বিমা খাত ব্যবহার, অনলাইন পেমেন্ট, হুন্ডি, ব্যাংক গ্যারান্টির অপব্যবহার এবং স্বর্ণ স্মাগলিং অন্যতম। প্রতিবেদনে পাবলিক খাতে দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট কিছু খাত উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুস, করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি, পাসপোর্ট ইস্যুতে দুর্নীতি, ডিজিটাল সিকিউরিটি সার্ভিস। এছাড়াও ৭টি মেগা প্রকল্পের দুর্নীতি তুলে ধরা হয়েছে। এগুলো হলো-পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প, রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র, চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, পায়রাবন্দর ও বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং পূর্বাচল নিউটাউন প্রকল্প। এছাড়াও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে ব্যাংক খাতকে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত হিসাবে উল্লেখ করা হয়। এখানে সুনির্দিষ্টভাবে কয়েকটি খাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হলো-নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স প্রদান, খেলাপি ঋণ, ঋণ নবায়ন এবং হলমার্ক এবং বেসিক ব্যাংকসহ কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরা হয়। এসব দুর্নীতির তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে গণমাধ্যম চাপে ছিল। গণমাধ্যমের লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

বিদ্যুৎ খাতে নির্দিষ্ট কিছু ব্যবসায়ীকে কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বড় বড় বিদ্যুৎ প্রকল্পের মাধ্যমে দুর্নীতি হয়েছে। আইপিপি ইন্ডিপেডেন্টে পাওয়ার প্রকল্পের মাধ্যমে বিশাল লুট হয়েছে। ভবিষ্যতে এই প্রকল্প অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।

এদিকে শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দুর্নীতিগ্রস্ত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার শাসনামলের গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার অবৈধভাবে পাচার হয়েছে। কমিটি জানায়, শেখ হাসিনার শাসনামলের দুর্নীতি, লুণ্ঠন এবং ভয়ংকর রকমের আর্থিক কারচুপির যে চিত্র রিপোর্টে পাওয়া গেছে, তা আতঙ্কিত হওয়ার মতো। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস এই যুগান্তকারী কাজের জন্য কমিটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘এটি চূড়ান্ত হওয়ার পর এটি জনসাধারণের জন্য প্রকাশ করা উচিত। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করে শিক্ষার্থীদের পড়ানো উচিত।’ ‘এটি একটি ঐতিহাসিক দলিল। জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর অর্থনীতিকে যে ভঙ্গুর দশায় আমরা পেয়েছি, তা এই রিপোর্টে উঠে এসেছে। জাতি এই নথি থেকে উপকৃত হবে।’ প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমাদের গরিব মানুষের রক্ত পানি করা টাকা যেভাবে তারা লুণ্ঠন করেছে, তা আতঙ্কিত হওয়ার মতো। দুঃখের বিষয় হলো, তারা প্রকাশ্যে এই লুটপাট চালিয়েছে। আমাদের বেশিরভাগ অংশই এর মোকাবিলা করার সাহস করতে পারেনি। পতিত স্বৈরাচারী শাসনামলে ভয়ের রাজত্ব এতটাই ছিল, দেশের অর্থনীতি পর্যবেক্ষণকারী বহুপাক্ষিক সংস্থাগুলোও এই লুণ্ঠনের ঘটনায় অনেকাংশেই ছিল নীরব।’ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘সমস্যাটি আমরা যতটা ভেবেছিলাম তার চেয়েও গভীর। এই ৩০ অধ্যায়ের ৪০০ পৃষ্ঠার দীর্ঘ শ্বেতপত্রে উঠে এসেছে কীভাবে চামচা পুঁজিবাদ অলিগার্কদের জন্ম দিয়েছে। কীভাবে তারা নীতি প্রণয়ন নিয়ন্ত্রণ করেছে।’ কমিটির সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান জানান, তারা ২৯টি প্রকল্পের মধ্যে সাতটি বড় প্রকল্প পরীক্ষা করে দেখেছেন। প্রতিটিতে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে। ২৯টি বড় প্রকল্পে মোট ব্যয় ৮৭ বিলিয়ন ডলার। স্থানীয় মুদ্রায় যা ৭ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। পরীক্ষা করা সাতটি প্রকল্পের আনুমানিক প্রাথমিক ব্যয় ছিল ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। অতিরিক্ত উপাদান যোগ করে, জমির দাম বেশি দেখিয়ে এবং ক্রয়ের ক্ষেত্রে হেরফের করে প্রকল্পের ব্যয় সংশোধিত করে ১ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকা করা হয়। তিনি বলেন, ব্যয়ের সুবিধা বিশ্লেষণ না করেই প্রকল্পের ব্যয় প্রায় ৭০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। অর্থ পাচারে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে বিচারকাজ শুরুর পরামর্শও দেন তিনি। কমিটির আরেক সদস্য অধ্যাপক একে এনামুল হক বলেন, গত ১৫ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ৭ লাখ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে। এর ৪০ শতাংশ অর্থ আমলারা লুটপাট করেছে। কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আবু ইউসুফ জানান, বিগত শাসনামলে কর অব্যাহতির পরিমাণ ছিল দেশের মোট জিডিপির ৬ শতাংশ। এটি অর্ধেকে নামিয়ে আনা গেলে শিক্ষা বাজেট দ্বিগুণ এবং স্বাস্থ্য বাজেট তিনগুণ করা যেত। কমিটির আরেক সদস্য এম. তামিম বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। এর ১০ শতাংশ অবৈধ লেনদেন ধরা হলে পরিমাণ হবে কমপক্ষে ৩ বিলিয়ন ডলার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন সাথী এবং সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ।

শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন-ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনকিসের ডিন প্রফেসর একে এনামুল হক, গবেষণা সংস্থা বিল্ডের নির্বাহী পরিচালক ফেরদৌস আরা বেগম, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গর্ভন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন, উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. কাজী ইকবাল, বুয়েটের অধ্যাপক ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. এম তামিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির বিশেষ ফেলো প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শারমিন্দ নীলর্মী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব পলিটিক্যাল সায়েন্সের সাবেক অধ্যাপক ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রামরুর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার ড. তাসনিম আরেফা সিদ্দিকী এবং বিশ্বব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto