Hot

অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন: ব্রিটিশ আইনজীবীর পরামর্শ চেয়েছিল শেখ হাসিনা সরকার

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্য আল জাজিরা ২০২১ সালে ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তথ্যচিত্রটি প্রচারের পর এর সঙ্গে যুক্ত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একজন ব্রিটিশ আইনজীবীর পরামর্শ চেয়েছিল শেখ হাসিনা সরকার। আজ রোববার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সানডে টাইমস।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স ম্যান’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ, তার পরিবার ও অন্যদের প্রসঙ্গ উঠে আসে। কীভাবে রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে প্রতিদ্বন্দ্বীকে অপহরণ এবং অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন তারা তা-ও তুলে ধরা হয়েছিল। শেখ হাসিনার আশকারায় কীভাবে দুর্নীতি হচ্ছিল প্রতিবেদনে সেটি তুলে ধরা হয়েছিল। 

প্রতিবেদনটি ইউটিউবে ১ কোটিরও বেশি বার দেখা হয়েছে। এটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করে। অপরদিকে প্রতিবেদনের জেরে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ এবং তার ভাইদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন। ওই সময় বাংলাদেশ সরকার প্রতিবেদনটিকে ‘মিথ্যা, মানহানিকর এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে অভিহিত করেছিল। এছাড়া এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর তথ্য ফাঁস করা হুইসেল ব্লোয়ার জুলকারনাইন সায়ের খানের ভাইকে লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়। যারা প্রতিবেদনে সহায়তা করেছিলেন তাদের অনেকে ভয়ে দেশ ছাড়তেও বাধ্য হন।

দ্য সানডে টাইমস জানিয়েছে, ব্রিটিশ আইনজীবী ডেসমন্ড ব্রাউনি কেসি একজন মানহানি বিশেষজ্ঞ। যিনি স্যার এলটন জন ও ভিক্টোরিয়া ব্যাকহামের জন্য কাজ করেছেন। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশন তার সঙ্গে যোগাযোগ করে।

গত ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুথানের পর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাঙচুর করা শোবার ঘরে টুকরো টুকরো করা নথি খুঁজে পায় সানডে টাইমস। এতে উল্লেখ আছে, ব্যারিস্টার ব্রাউনি এ ব্যাপারে সহায়তা করতে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে সম্মতি জানিয়েছেন। পরবর্তীতে ক্লার্ক উইলিয়ামস নামের এক আইনজীবীর সঙ্গে হাসিনার প্রতিনিধিদের যোগাযোগ করিয়ে দেন ব্রাউনি। যিনি যুক্তরাজ্যে ওই প্রতিবেদনের সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে মামলায় সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন।

সানডে টাইমস বলেছে, শেখ হাসিনার বাড়ি থেকে পাওয়া নথিতে উল্লেখ আছে, তার সরকার আলজাজিরার পাশাপাশি ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। বার্গম্যান প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহায়তা করেছিলেন। যুক্তরাজ্যে মানহানির মামলা দায়ের, এমনকি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আলাদা মামলা করার বিষয়েও পরামর্শ চেয়েছিলেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, তারা ডেভিড বার্গম্যানকে ডকুমেন্টারির মূল হোতা দাবি করে বাংলাদেশে গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা করেছিলেন।

ডেসমন্ড ব্রাউন শেখ হাসিনা সরকারকে প্রাথমিক পরামর্শ দেওয়ার কথা সানডে টাইমসকে নিশ্চিত করেছেন। তবে পরে এ ব্যাপারে আর কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে জানান তিনি। তবে আইনজীবী ক্লার্ক উইলিয়ামস এ বিষয়ে সানডে টাইমসকে কোনো মন্তব্য করেননি।

সানডে টাইমস জানায়, হাসিনা সরকার শেষ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে মামলা করার পরিকল্পনা থেকে সরে এসে প্রামাণ্যচিত্রটি সরিয়ে নিতে ইউটিউব ও ফেসবুককে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে উভয় প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button