অসহিষ্ণুতা কাটিয়ে মনুষ্যত্ব অর্জনই হোক আমাদের অঙ্গীকার : তারেক রহমান

‘ব্যাঙ কিন্তু এই এডিস মশার লার্ভাটা খেয়ে থাকে, মশার বিস্তারটা রোধ করতে সাহায্য করে, ন্যাচারাল উপায় প্রাকৃতিক উপায়। সুতরাং এ বিষাক্ত মশার বিস্তার রোধের জন্য বিশেষ করে শহরে নগরে ব্যাঙের জন্য নিরাপদ আবাসস্থল করা দরকার।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, মানুষ যখন প্রাণীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়, প্রাণীদের নিরাপদ আবাসস্থল নিশ্চিত করে, তখন এটা মানব সমাজের পরিপক্কতা এবং উন্নত নৈতিকতারই প্রতিফলন ঘটায়। সুতরাং মানুষে নিজের প্রয়োজন প্রাণীদের বাঁচিয়ে রাখা। প্রাণীদের আবাস অক্ষত রাখা।
তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, গণতন্ত্রের সাথে মানুষের অধিকারের সম্পর্কটা যেমন, বাস্তুতন্ত্রের সাথে পশুপাখি এবং বন্য প্রাণীর অধিকারের সম্পর্কটা তেমন। সুতরাং রাষ্ট্র-রাজনীতিতে গণতন্ত্র এবং শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠিত থাকলে বাস্তবিকভাবেই বাস্তুতন্ত্র নিরাপদ থাকে। আমার মনে হয়- গত দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে একজন মানুষ একজন নাগরিক হিসেবে সকল গণতান্ত্রিক-রাজনৈতিক অধিকার হারানোর কারণে আমাদের অনেকের মনে হয়তো এক ধরনের অসহিষ্ণুতা জন্ম নিয়েছে, এই অসহিষ্ণুতা কাটিয়ে একজন মানবিক মানুষ হয়ে ওঠার জন্য মনুষ্যত্ব অর্জন আর পশুত্ব বর্জনই হোক আমাদের অঙ্গীকার।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘প্রাণী ও প্রাণের মিলনমেলা’ প্রদর্শনীতে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তারেক রহমান এসব কথা বলেন। এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন। ‘প্রাণ বাঁচাও, প্রাণী বাঁচাও, দেশ হোক সকল প্রাণের নিরাপদ আশ্রয়স্থল’ এই প্রত্যাশা রেখে স্লোগান দেন তিনি।
প্রাণীকুলের গুরুত্ব তুলে ধরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ব্যাঙ কিন্তু এই এডিস মশার লার্ভাটা খেয়ে থাকে, মশার বিস্তারটা রোধ করতে সাহায্য করে, ন্যাচারাল উপায় প্রাকৃতিক উপায়। সুতরাং এ বিষাক্ত মশার বিস্তার রোধের জন্য বিশেষ করে শহরে নগরে ব্যাঙের জন্য নিরাপদ আবাসস্থল করা দরকার। এভাবেই সকল প্রাণীর গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি।
আন্তর্জাতিক সংস্থার জরিপ তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, দেশে ১৬ শ’র বেশি প্রজাতির প্রাণী ছিল। এই ১৬ শ’র ভেতরে প্রায় ৩ শ’ প্রজাতি কিন্তু বিলুপ্তির মুখে চলে গেছে। এবং এটা শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের আরো অনেক দেশেই কিন্তু মানুষের সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে অনেক প্রজাতির অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন। আশির দশকে বাংলাদেশে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল খুব সম্ভবত ৪ শ’র বেশি। সর্বশেষ যে জরিপটা হয়েছে, বাঘের সংখ্যা কমতে কমতে এখন এক শ’র কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়েছে। হাতির সংখ্যাও এখন কমে ২ শ’র নিচে চলে এসেছে।
তিনি বলেন, প্রাণী কল্যাণ আইন-২০১৯, বন্য প্রাণীর সংরক্ষণ নিরাপত্তা আইন, জীব বৈচিত্র রক্ষা আইন, পরিবেশ উন্নয়ন আইন, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট আইন, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দেশের অনেকগুলো আইন রয়েছে। ইনশাআল্লাহ, জনগণের রায়ে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে পশুপাখি বন্যপ্রাণী তথা বাস্তুতন্ত্রের নিরাপত্তার জন্য এই আইনগুলোকে সময় উপযোগী করব। এই আইনের অনেকগুলোর পরিবর্তন প্রয়োজন আছে।
বাংলাদেশ অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ারের আহ্বায়ক চিত্রনায়ক আদনান আজাদের সভাপত্বিতে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার, বিএনপি কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত, বিএনপির সহ-স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শাম্মি আকতার, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনোয়ার হোসেন তুহিন, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল খান, বাংলাদেশ অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান উদ্যোক্তা আতিকুর রহমান রুমন, আবুল হাসান মোরশেদ ইমন দীপান্বিতা রিদি, চিত্র নায়িকা আইরিন সুলতানা, রহিমা আনজুম পুষ্প, ইঞ্জিনিয়ার আবুল হানিফ প্রমুখ।
উপস্থিতি ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী অভীক ইসকান্দার, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর, বিএনপির মিডিয়া সেল সদস্য শায়রুল কবির খান, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’র উপদেষ্টা মো: আবুল কাশেম, ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা-ই জামান সেলিম, সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, সদস্য মাসুদ রানা লিটন, শাকিল আহমেদ, ফরহাদ আলী সজীব, শাহাদত হোসেন,
জাতীয় ক্রিকেটার শফিউল আলম, বাংলাদেশ অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ারের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক বাপ্পি খান, বিএডাব্লিউইএ-আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিশাত তামান্না জামান, ইঞ্জিনিয়ার আবু হানিফ, ডা: আতিকুর রহমান মিঠু প্রমুখ।