Science & Tech

অ্যান্টার্কটিকার সবুজ এলাকার প্রথম মানচিত্র তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা

অ্যান্টার্কটিকা মানেই আমাদের সামনে ভেসে ওঠে সাদা এক বরফের মহাদেশ। পেঙ্গুইন, সিল আর তিমির অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত এই মহাদেশ নিয়ে রহস্যের শেষ নেই। সেখানে অসংখ্য হ্রদ থাকলেও পানি জমে বরফ হয়ে গেছে। ফলে সেখানে ঠান্ডায় বেঁচে থাকাই বেশ কঠিন। তবে বেশ কয়েক বছর ধরেই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অ্যান্টার্কটিকায় বরফ গলে অনুর্বর মাটির দেখা মিলছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, বরফ গলে যাওয়ার কারণে এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ ছোট কোনো দেশের আয়তনের সমান ভূমি দেখা যাবে অ্যান্টার্কটিকায়।

অ্যান্টার্কটিকা সবুজ এলাকার সন্ধান দিতে নতুন মানচিত্র তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। পুরো অ্যান্টার্কটিক মহাদেশের কোথায় কোথায় সবুজ উদ্ভিদ আছে, তা তুলে ধরা হয়েছে এই মানচিত্রে। বিভিন্ন স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যগুলো একত্রিত করে এই মানচিত্র তৈরি করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী ক্লডিয়া কোলেসিয়ে বলেন, ‘আমরা মোট ৪৪ দশমিক ২ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে উদ্ভিদ শনাক্ত করেছি। এসব উদ্ভিদের বেশির ভাগই অ্যান্টার্কটিকার উপদ্বীপ ও প্রতিবেশী দ্বীপগুলোতে রয়েছে, যা আয়তনে অ্যান্টার্কটিকার বরফমুক্ত এলাকার মাত্র শূন্য দশমিক ১২ শতাংশ।’

মানচিত্র তৈরির সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানীদের দলনেতা এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী শার্লট ওয়ালশ বলেন, ‘এই নতুন মানচিত্র আমাদের সামনে তথ্য পাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে। আমরা এই মানচিত্র নানাভাবে ব্যবহার করতে পারি। অ্যান্টার্কটিকায় উদ্ভিদের বিস্তার ও অবস্থান সম্পর্কে আমাদের নজর রাখতে সহায়তা করবে। অ্যান্টার্কটিকার উদ্ভিদগুলোকে বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে কঠিন পরিবেশের মুখোমুখি হতে হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এখানকার উদ্ভিদগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। নতুন মানচিত্রের মাধ্যমে আমরা জানি বিভিন্ন গাছ কোথায় খুঁজতে হবে। এসব গাছের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’

অ্যান্টার্কটিকায় এখন যে ভূমি বা মাটি দেখা যায়, সেখানে শেওলা ও সায়ানোব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। অ্যান্টার্কটিকার সবুজ হিসেবে লাইকেন ও শেওলাকে ধরা হয়। যদিও প্রায় ১০০ প্রজাতির বেশি উদ্ভিদ রয়েছে অ্যান্টার্কটিকায়, যার মধ্যে দ্রুতবর্ধনশীল সাধারণ লন ঘাসও রয়েছে। বর্তমানে অ্যান্টার্কটিকার দক্ষিণ জর্জিয়া থেকে লিভিংস্টন দ্বীপ পর্যন্ত এই ঘাস দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button