অ্যান্টার্কটিকের বরফস্তর ধসে যাওয়ার আশঙ্কা, ডুবে যেতে পারে বিভিন্ন শহর

রহস্যে ঘেরা মহাদেশ অ্যান্টার্কটিকা। সেই মহাদেশকে ঘিরে আছে অ্যান্টার্কটিক মহাসাগর। পশ্চিম অ্যান্টার্কটিক মহাসাগরের বিশাল এলাকাজুড়ে রয়েছে বরফস্তর। প্রায় ৭ লাখ ৬০ হাজার বর্গমাইল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত সেই বরফস্তরে বিপর্যয়কর ধসের অবস্থা তৈরি হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, বিশ্বব্যাপী কার্বন ডাই–অক্সাইডের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় সেখানকার বরফস্তর দুর্বল হয়ে পড়ছে। এর ফলে সেখানে থাকা বরফস্তর সম্পূর্ণরূপে ধসে পড়ার ঝুঁকি বাড়ছে। যদি বরফস্তরে ধস দেখা যায়, তাহলে পুরো বিশ্বের সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৯ দশমিক ৮ ফুট বা তিন মিটার বাড়তে পারে। ফলে বিভিন্ন দেশের উপকূলীয় শহর ডুবে যেতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী নেরিলি আব্রাম জানিয়েছেন, এরই মধ্যে অ্যান্টার্কটিকার বরফ, মহাসাগর ও বাস্তুতন্ত্রজুড়ে দ্রুত পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে প্রতি ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। সেখানে থাকা বরফস্তরটি পৃথিবীর বৃহত্তম বরফস্তরগুলোর মধ্যে একটি। এই বরফস্তর বিপর্যয়কর এক পতনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অ্যান্টার্কটিকার বরফ গলে গেলে দক্ষিণ মহাসাগরে গভীর সঞ্চালন স্রোতের উষ্ণায়ন হবে। মহাদেশজুড়ে বিভিন্ন পরিবর্তন শিগগিরই মারাত্মক আকার ধারণ করবে।
বিজ্ঞানী অধ্যাপক ম্যাথিউ ইংল্যান্ড বলেন, সবচেয়ে বড় প্রভাব দেখা যাবে অ্যান্টার্কটিকার বন্য প্রাণী ও সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রের ওপর। অ্যান্টার্কটিকার সমুদ্রের বরফের ক্ষয়ের কারণে এম্পেরর পেঙ্গুইনরা বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়বে। এসব পেঙ্গুইনের শাবক জলরোধী পালক বৃদ্ধির আগে স্থিতিশীল সমুদ্রের বরফের ওপর বসবাস করে। বরফ হারিয়ে গেলে এসব শাবক মারা পড়বে।
ক্লাইমেট সেন্ট্রালের তৈরি কোস্টাল রিস্ক স্ক্রিনিং টুলের তথ্যমতে, সমুদ্রের পানির উচ্চতা তিন মিটারের মতো বাড়লে বাংলাদেশের অবস্থাও বেশ নাজুক হতে পারে।সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে বঙ্গোপসাগরের আশপাশের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডের বিভিন্ন শহর তলিয়ে যেতে পারে।