Bangladesh

‘অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ হতে পারে’

অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অধিকাংশ চিকিৎসকই মনে করেন প্রেসক্রিপশনে অ্যান্টিবায়োটিক না দিলেই হয় না। এর পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ হতে পারে।

বুধবার রাজধানীর মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) জাতীয়ভাবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ সার্ভেইলেন্স নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এই আশঙ্কার কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম বলেন, ‘অ্যান্টিবায়োটিকের যত্রতত্র ব্যবহারে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলো অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে উঠছে, যা শরীরে একটি নীরব ঘাতকের মতো কাজ করে। তাই আমাদের এ সমস্যা থেকে উত্তরণে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘রোগ প্রতিরোধে যেসব নিয়ম মানা উচিত সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এছাড়াও আমাদের গবেষণা প্রতিষ্ঠান যেগুলো রয়েছে, বিশেষ করে নিলমার্স, আইইডিসিআর, সিডিসিসহ ল্যাবগুলোকে আরও সক্ষম করে গড়ে তুলতে হবে।’

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটু মিয়া বলেন, ‘দেশে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণুর সংখ্যা বেড়েই চলছে। সঙ্গে মানুষের মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকর হয়ে উঠেছে। এজন্য অবশ্যই রোগীরা হাসপাতালে এলে তার আগে যেসব অ্যান্টিবায়োটিক নিয়েছে সে বিষয়ে ধারণা রাখতে হবে। এছাড়াও আমাদের দেশে কার্যকরী ল্যাব বৃদ্ধি করতে হবে। খামারে পালিত পশু-পাখির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার হয়ে থাকে, এটি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’ অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে আইইডিসিআর’র প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অধ্যাপক ডা. জাকির হোসেন হাবিব বলেন, ‘ডাক্তাররা প্রেসক্রিপশনে অ্যান্টিবায়োটিক লিখছেন। আর না দিলে আবার রোগীও অসন্তোষ প্রকাশ করে তাকে কোনো অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়নি, তার মানে তাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এই ট্রেন্ড থেকে বের হয়ে আসতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন মেডিকেল অডিট।’

তিনি বলেন, ‘ফার্মেসিগুলোতে অবারিত অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি বন্ধ করতে হবে। আর এজন্য ফার্মেসিগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসা প্রয়োজন। ফার্মেসিগুলোর নিবন্ধন অবশ্যই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে দিতে হবে। এতে করে প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর, নিপসমের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরাসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের কর্মকর্তারা।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button