অ্যাপলের সবচেয়ে পাতলা আইফোন ‘আইফোন এয়ার’ সম্পর্কে ১০ তথ্য

গত মঙ্গলবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজিত ‘অ ড্রপিং’ অনুষ্ঠানে অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিম কুক আইফোন ১৭, আইফোন ১৭ প্রো, আইফোন ১৭ প্রো ম্যাক্স এবং আইফোন এয়ার নামের ৪টি মডেলের আইফোন বাজারে আনার ঘোষণা দেন। অনুষ্ঠানে মূল আকর্ষণ ছিল আইফোন এয়ার। অ্যাপলের দাবি, আইফোন এয়ার এখন পর্যন্ত তৈরি তাদের সবচেয়ে পাতলা আইফোন। এর ফলে মডেলটির বিষয়ে ক্রেতাদের মধ্যে বেশ কৌতূহল রয়েছে। আইফোন এয়ার সম্পর্কে ১০ তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
১. নকশা
আইফোন এয়ারের সবচেয়ে বড় আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে নকশা। ফোনটির পুরুত্ব মাত্র ৫ দশমিক ৬ মিলিমিটার, ওজন ১৬৫ গ্রাম। আইফোন ৬ মডেলের পর এটাই সবচেয়ে পাতলা মডেলের আইফোন। আইফোন ৬ ছিল ৬ দশমিক ৯ মিলিমিটার।
২. ব্যাটারি তুলনামূলক কম শক্তিশালী
অ্যাপলের তথ্য অনুযায়ী, আইফোন এয়ারে টানা ২৭ ঘণ্টা ভিডিও চালানো যাবে। তবে আইফোন ১৭ সিরিজের অন্য মডেলগুলো ৩০ ঘণ্টা পর্যন্ত ভিডিও চালাতে পারে। অর্থাৎ আইফোন এয়ার আইফোন ১৭ সিরিজের অন্য ফোনগুলোর তুলনায় ব্যাটারির দিক থেকে সবচেয়ে কম শক্তিশালী।
৩. টেকসই সিরামিক শিল্ডের ব্যবহার
পাতলা হওয়ায় অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠেছে, আইফোন এয়ার টেকসই হবে কি না। এর আগে আইফোন ৬ মডেলের বিরুদ্ধে ফোন বাঁকা হয়ে যাওয়ার একাধিক অভিযোগ উঠেছিল। এবার সেই ঝুঁকি কমাতে অ্যাপল ব্যবহার করেছে টাইটানিয়াম ও সিরামিক শিল্ড। এর ফলে আপাতদৃষ্টে আইফোন এয়ার যথেষ্ট মজবুত করে তৈরি করা হয়েছে।
৪. একটি ক্যামেরা
আইফোন এয়ার পাতলা করার জন্য অ্যাপলকে ফোনটির অভ্যন্তরে কিছু ছাড় দিতে হয়েছে। মূল হার্ডওয়্যার রাখা হয়েছে ওপরের দিকে, যাকে বলা হচ্ছে ‘প্লেটো’। এ জন্য আইফোন এয়ারে একাধিক ক্যামেরা যুক্ত করা সম্ভব হয়নি। এর ফলে আইফোন এয়ারে ৪৮ মেগাপিক্সেলের একটি মূল ক্যামেরা রয়েছে।
৫. উন্নত সেলফি ক্যামেরা
আইফোন এয়ারে ব্যবহার করা হয়েছে ১৮ মেগাপিক্সেলের ‘স্কয়ার’ ফ্রন্ট ক্যামেরা, যাতে রয়েছে সেন্টার স্টেজ সুবিধা। এর ফলে ফোন না ঘুরিয়েই ল্যান্ডস্কেপ সেলফি তোলা যাবে। আবার ফ্রেমে একাধিক ব্যক্তি থাকলেও ভিউ স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্বাচনের সুযোগ মিলবে।
৬. স্টেরিও স্পিকার নেই
দামি স্মার্টফোনে স্টেরিও স্পিকার এখন একটি সাধারণ বিষয়। কিন্তু আইফোন এয়ারে রাখা হয়েছে একটি স্পিকার। সাধারণ কাজে ব্যবহারের জন্য স্পিকারটি যথেষ্ট হলেও গান শোনার সময় স্টেরিও স্পিকারের অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে না।
৭. শক্তিশালী এ১৯ প্রো প্রসেসর
আইফোন এয়ারে ব্যবহার করা হয়েছে আইফোন ১৭ প্রো মডেলের এ১৯ প্রো প্রসেসর। তবে জিপিইউ কোর একটি কম। প্রো মডেলে যেখানে ৬টি কোর রয়েছে, সেখানে আইফোন এয়ারে রয়েছে ৫টি কোর। অবশ্য দৈনন্দিন ব্যবহারে এর প্রভাব তেমন বোঝা যাবে না।
৮. শুধুই ই-সিম
আইফোন এয়ার হলো প্রথম আইফোন, যা বিশ্বব্যাপী সিম স্লট ছাড়া বাজারে আসছে। অর্থাৎ শুধু ই-সিম দিয়েই ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে সেটআপ কিছুটা ঝামেলাপূর্ণ হতে পারে।
৯. নতুন প্রজন্মের ৫জি মডেম
আইফোন এয়ারে রয়েছে অ্যাপলের নিজস্ব সি১এক্স ৫জি মডেম। অ্যাপলের দাবি, এটি আগের সি১ মডেমের চেয়ে দ্বিগুণ দ্রুত এবং কোয়ালকমের মডেমের তুলনায় ৩০ শতাংশ কম শক্তি খরচ করে।
১০. চার্জ ও তথ্য স্থানান্তরের গতি ধীর
আইফোন ১৭ সিরিজের অন্যান্য মডেল নতুন ৪০ ওয়াট চার্জারে মাত্র ২০ মিনিটে ৫০ শতাংশ চার্জ হয়। তবে আইফোন এয়ারে একই চার্জ হতে সময় লাগে ৩০ মিনিট। আর চার্জারও ২০ ওয়াটের। তথ্য স্থানান্তরের ক্ষেত্রেও সীমাবদ্ধতা রয়েছে আইফোন এয়ারের। আইফোন এয়ারে ইউএসবি সি পোর্টে ইউএসবি ২ গতিতে ফাইল স্থানান্তর সম্ভব। এর তুলনায় প্রো মডেলগুলো সমর্থন করে ইউএসবি ৩, যা দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে সর্বোচ্চ ১০ গিগাবাইট গতিতে তথ্য স্থানান্তর করা যায়।