International

আইফেল টাওয়ারের কাছে পাঁচটি কফিন, লেখা ছিল, ‘ইউক্রেনের ফরাসি সেনারা’

ফ্রান্স তাদের রাজধানী প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের কাছে পাঁচটি কফিন পেয়েছে। এই ঘটনায় মস্কোর হাত রয়েছে বলে ধারণা করছেন ফরাসি গোয়েন্দারা।  ফ্রান্সের পতাকা দিয়ে মোড়ানো কফিনগুলোতে লেখা ছিল, ‘ইউক্রেনের ফরাসি সেনারা’।

গত শনিবার স্থানীয় সময় সকাল নয়টার দিকে একটি ভ্যানে করে কয়েকজন ব্যক্তিকে কফিনগুলো রেখে যেতে দেখা যায়। তবে কফিনের ভেতরে প্লাস্টিকের বস্তা ছাড়া কিছু পাওয়া যায়নি। ঘটনার পরপরই ভ্যানচালককে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত চালক পুলিশকে জানান, এতে তার কোনো দায় নেই। কফিনগুলো বহনের জন্য তাকে ৪০ ইউরো দিয়েছিলেন দুই ব্যক্তি। পুলিশ জানায়, এ ঘটনার এক দিন আগে ওই চালক বুলগেরিয়া থেকে প্যারিসে আসেন।

চালকের পর প্যারিসের কেন্দ্রস্থলের একটি বাসস্ট্যান্ড থেকে আরও দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা সেখান থেকে বাসে চড়ে জার্মানির বার্লিনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ওই দুজন পুলিশকে জানান, আইফেল টাওয়ারের কাছে কফিন রাখার জন্য তাদের ৪০০ ইউরো দেওয়া হয়েছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, ভ্যানচালক বুলগেরিয়ার নাগরিক। অপর দুজনের মধ্যে একজন ইউক্রেনের ও অন্যজন জার্মানির নাগরিক।

ফ্রান্সের কৌঁসুলির কার্যালয় জানিয়েছে, গ্রেফতার তিন ব্যক্তিকে রবিবার আদালতে হাজির করা হয়। ‘নাশকতার পরিকল্পনার’ অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্ত হতে পারে।

ফরাসি গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, এ ঘটনার পেছনে দেশের বাইরের কোনো শক্তির ইন্ধন রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এর সঙ্গে সাম্প্রতিক দুটি ঘটনার মিল খুঁজে পাচ্ছেন ফরাসি কর্মকর্তারা। সেই দুই ঘটনায় রাশিয়ার গুপ্তচরেরা জড়িত থাকতে পারেন বলে ধারণা ফরাসি পুলিশের।

ঘটনা দুটির একটি গত বছরের অক্টোবরে। ওই মাসে ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার শাসকগোষ্ঠী হামাস। এর কিছুদিন পর প্যারিসের বেশ কিছু দেয়ালে ইসরায়েলের পতাকার ছাপ দেখা যায়। ওই ঘটনায় মলদোভার এক দম্পতিকে গ্রেফতার করা হয়। ফরাসি পুলিশের ধারণা, এ কাজের জন্য রাশিয়ার গুপ্তচরেরা ওই দম্পতিকে অর্থ দিয়েছিলেন।

এরপর গত মাসে প্যারিসের একটি হলোকাস্ট স্মৃতিস্তম্ভে (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদি নিধনের স্মৃতিস্তম্ভ) রক্তাক্ত হাতের ছাপ দেওয়া হয়। পুলিশের ধারণা, যারা ওই ঘটনা ঘটিয়েছেন, তারা বিদেশে পালিয়ে গেছেন।

ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি বিবেচনাধীন বলে মন্তব্য করেছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁন। ওই সময় তিনি আরও বলেছিলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া যদি জিতে তাহলে ইউরোপের গ্রহণযোগ্যতা শূন্যে নেমে যাবে। 

 রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে পশ্চিমা সেনা নিয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। ইউরোপে ন্যাটো সদস্যরা আগুন নিয়ে খেলছে সতর্ক করে বলেন, তাদের এমন পদক্ষেপ ‍বিশ্বব্যাপী সংঘাতের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button