Science & Tech

আইফোন তৈরির সক্ষমতা বাড়াচ্ছে টাটা

বিশ্বের অন্যতম জনবহুল দেশ ভারতে অ্যাপল পণ্যের বেশ চাহিদা রয়েছে। ভারতে অ্যাপলের আইফোন উৎপাদনকারী তিনটি প্রতিষ্ঠানের একটি হচ্ছে টাটা ইলেকট্রনিক্স।

আইফোন উৎপাদনের জন্য ইতোমধ্যেই দুটি কারখানা রয়েছে টাটার। এবার তৃতীয় একটি কারখানার সিংহভাগ শেয়ার অধিগ্রহণ করতে যাচ্ছে দেশটির অন্যতম শীর্ষ এই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি। 

বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আইফোনের তাইওয়ান-ভিত্তিক সাপ্লায়ার পেগাট্রন-এর তামিল নাড়ু ইউনিটের ৬০ শতাংশ শেয়ার কিনে নিতে যাচ্ছে টাটা। চুক্তি অনুসারে, আইফোন তৈরির এই কারখানার প্রতিদিনের কার্যক্রম তদারকি করবে তাঁরা। অন্যদিকে, ৪০ শতাংশ শেয়ার নিয়ে পেগাট্রন টেকনিক্যাল সাপোর্ট প্রদান করবে। 

তবে চুক্তির বিষয়ে টাটা, পেগাট্রন কিংবা অ্যাপলের তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।

আইফোনসহ অ্যাপলের বিভিন্ন পণ্যের সিংহভাগই উৎপাদিত হয় চীনে। তবে বিগত কয়েক বছরে প্রযুক্তি খাতে আমেরিকা-চীন দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটে অ্যাপল তাদের পণ্যের সরবরাহ চ্যানেলকে চীনের বাইরে আরও বহুমুখী করতে চাইছে।

অর্থাৎ চীনের উপর নির্ভরশীলতা কমাতে চাইছে মার্কিন এই প্রতিষ্ঠানটি। আর সে কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে নিজেদের ম্যানুফ্যাকচারিং নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করার উদ্যোগ নিয়েছে অ্যাপল

সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে নিজেদের ম্যানুফ্যাকচারিং নেটওয়ার্ক বেশ দ্রুততার সাথেই বৃদ্ধি করেছে অ্যাপল। স্থানীয় পর্যায়ে সরকারি ভর্তুকি, দক্ষ জনশক্তি এবং প্রযুক্তিগত সক্ষমতার কারণে চীনের বিকল্প হিসেবে ভারতকে বেশ গুরুত্বের সাথেই নিয়েছে অ্যাপল।

সম্প্রতি জানা গেছে, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে ভারতে তৈরি প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের আইফোন বিদেশে রপ্তানি করা হয়েছে। সংখ্যাটা এর আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ গুণ। এর মধ্যে টাটা ইলেকট্রনিক্সের অবদান ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। উল্লেখ্য, গত অর্থবছরে (২০২৩-২০২৪) ভারতে তৈরি হয়েছে ১৪ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের আইফোন। 

চলতি বছরের এপ্রিল মাসের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে প্রতি ৭টি আইফোনের ১টি ভারতে তৈরি হচ্ছে। অর্থাৎ, আইফোনের বৈশ্বিক উৎপাদনের ১৪ শতাংশ এখন ভারত থেকে যোগান দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে পেগাট্রন ১৭ শতাংশ আইফোন অ্যাসেম্বল করে থাকে এবং ফক্সকনের অবদান ৬৭ শতাংশ। 

অ্যাপলের সরবরাহ চেইনে ভারতের গুরুত্ব প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্লেষকদের ধারণা, চলতি অর্থবছরে আইফোনের বৈশ্বিক শিপমেন্টের ২০-২৫ শতাংশই হবে ভারত হবে। যেটা ২০২৩ সালে ছিল ১২ থেকে ১৪ শতাংশের মধ্যে।

চীনের জন্য বিষয়টি যে সুখকর নয় সেটা অনুমিতই। তবে অচিরেই চীনকে টপকে ভারত শীর্ষ আইফোন সাপ্লায়ার হয়ে উঠবে, এমন সম্ভাবনা নেই। কেননা সূক্ষ্ম ও উন্নত যন্ত্রাংশ তৈরিতে চীনের সক্ষমতা এখনও অর্জন করতে পারেনি ভারত।  

অ্যাপল আইফোনের কোনো যন্ত্রাংশই (পার্টস) নিজে তৈরি করে না। এমনকি বিভিন্ন যন্ত্রাংশ অ্যাসেম্বল করার কাজটিও তাঁরা একাধিক সাপ্লায়ার (সরবরাহকারি) প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে করিয়ে নেয়। তবে যন্ত্রাংশ ডিজাইন করা থেকে শুরু করে অ্যাসেম্বল হওয়া পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াটির প্রতিটি ধাপ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে গুণগত মান সুনিশ্চিত করে অ্যাপল। 

অ্যাপলের জন্য ভারতের বাজার আকর্ষণীয় হয়ে উঠার আরও একটি কারণ রয়েছে। দেশটিতে সাম্প্রতিক সময়ে আইফোনের বিক্রি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্লুমবার্গ ইন্টেলিজেন্স-এর করা ভবিষ্যৎবাণী অনুযায়ী, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটিতে আইফোনের বার্ষিক বাজার ৩৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছতে পারে। 

চীনের বাজার অ্যাপলের জন্য এখনও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বিগত এক বছরে দেশটিতে বেশ অম্ল-মধুর অভিজ্ঞতাই পেতে হয়েছে তাদেরকে। বিশেষ করে হুয়াওয়ের মতো স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে কেন্দ্র করে চীনের বাজারে যে জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ ঘটেছে, সেখানে শত্রুভাবাপন্ন দেশের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান অ্যাপলকে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে যে বেগ পেতে হবে সেটাই স্বাভাবিক।

এখন দেখার বিষয়, আইফোন তৈরির ইকোসিস্টেমে এবং আইফোনের বাজার হিসেবে ভারত কতটা চীনের বিকল্প হয়ে উঠতে পারে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d