আওয়ামী লীগের ঘরের প্রার্থীরাই মূল প্রতিদ্বন্দ্বী, নৌকা পেয়েও টেনশনে
প্রতিটি আসনেই দল ও সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতা * দলের মনোনয়নবঞ্চিত দুই ডজন বর্তমান এমপির স্বতন্ত্র লড়াইয়ের ঘোষণা
বিএনপি ও তাদের মিত্ররা ভোটে না আসার সিদ্ধান্তে অনড়। এ কারণে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতা এড়াতে এবং ভোটের আমেজ ধরে রাখতে নির্বাচনে কৌশলী অবস্থানে আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে দলটি প্রতি আসনে ডামি প্রার্থী রাখার বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাবের কথা জানিয়েছে। দলের হাইকমান্ডের এমন অবস্থানের কারণে এবার ভোটের মাঠ ছাড়তে নারাজ মনোনয়নবঞ্চিতরা। ইতোমধ্যে দলের মনোনয়নবঞ্চিত দুই ডজন বর্তমান এমপি স্বতন্ত্র লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন।
অন্যদিকে দীর্ঘদিন এলাকায় আধিপত্য ধরে রাখা এমপিদের বিরুদ্ধে লড়তে অনড় অনেক প্রার্থী। সব মিলিয়ে সারা দেশের প্রায় প্রতিটি আসনেই ক্ষমতাসীন দল ও তাদের সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতা ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইসি থেকে মনোনয়নপত্রও কিনতে শুরু করেছেন অনেকেই। ফলে প্রধান প্রতিপক্ষ মাঠে না থাকায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এবার নৌকার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ঘরের প্রার্থীরাই। এ নিয়ে টেনশনে আছেন দলের অনেক প্রার্থী।
এছাড়া আওয়ামী লীগ যে ২৯৮ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে, তাদের সবাই যে শেষ পর্যন্ত নৌকা নিয়ে নির্বাচন করতে পারবেন এমন নয়। কারণ, জোট শরিক ও অন্য দলের সঙ্গে আসন সমঝোতা ও ছাড় দেওয়ার বিষয়টি এখনো ফয়সালা হয়নি। তবে আওয়ামী লীগ আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছে, তারা ১৪ দলীয় জোটগতভাবেই নির্বাচন করবে। এর সঙ্গে রয়েছে তাদের রাজনৈতিক মিত্র জাতীয় পার্টি। ভোটে আনার সমীকরণে নতুন ও ছোট কয়েকটি দলকেও আওয়ামী লীগ আসন ছাড়তে পারে বলে আলোচনা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে শিগগিরই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসন ভাগাভাগির বিষয়টি ফয়সালা করবেন। শরিক ও মিত্রদের সঙ্গে আসন ছাড়ের এই অঙ্কেও ছাড় দিতে হবে অনেককেই। সব মিলিয়ে দলীয় মনোনয়ন পেয়েও টেনশন কাটছে না আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের। তারা যত সহজে নির্বাচনে পাশের চিন্তা করেছিলেন বাস্তবে ততটা সহজ হবে না বলে অনেকেই মনে করছেন। জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন, আমরা ১৪ দলীয় জোটগতভাবেই নির্বাচন করব। আমরা (আওয়ামী লীগ) আমাদের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করেছি। এটা আমাদের দলের প্রার্থী তালিকা। এখন শিগগিরই আমাদের নেত্রী (আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) জোট শরিকদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে আসন ভাগাভাগির বিষয়টি চূড়ান্ত করবেন।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতা এড়াতে ডামি প্রার্থীর কথা বলা হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচনে যেন ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়ে। এমন সিদ্ধান্তে দলের প্রার্থীরা টেনশনে পড়ে গেল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, দলের প্রার্থীদের অসুবিধার বিষয়টি অবশ্যই আমরা দেখব। এখনো তো সময় আছে। ৩০ তারিখ মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময়। এরপর যাচাই-বাছাই চলবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে। আমরা পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধন্ত নেব। ফলে এই মুহূর্তে এত চিন্তা করার কিছু নেই। তবে আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গেই লক্ষ্য রাখব।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপি ও শরিকরা ভোট বর্জন করায় ওই নির্বাচনে ১৫১ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন মহাজোটের প্রার্থীরা। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ পায় ১২৭টি আসন, জাতীয় পার্টি ১৮টি, জেপি একটি, জাসদ তিনটি এবং ওয়ার্কার্স পার্টি দুটি আসন পেয়েছিল। ওই নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা মহলের সমালোচনা শুনতে হয়েছিল আওয়ামী লীগকে। ফলে এবার আর সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি চায় না ক্ষমতাসীনরা। বিএনপি না এলেও ভোটের মাঠে যত বেশি সম্ভব দল ও প্রার্থীদের আনার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। এছাড়া দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করলেও কৌশল হিসাবে স্বতন্ত্র ও ডামি প্রার্থীদের মাঠে রাখতে চাইছে আওয়ামী লীগ।
এবার ৩০০ আসনের বিপরীতে ৩৩৬২টি দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছিল আওয়ামী লীগ। বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত টানা তিন দিন দলের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড বৈঠক করে দলের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে। রোববার বিকালে প্রার্থীদের নাম ঘোষণার আগে গণভবনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সভায় তিনি বলেন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ পাশ করে আসতে পারবেন না। প্রত্যেক প্রার্থীকেই একজন করে দলীয় ডামি প্রার্থী রাখতে হবে। দলীয় প্রতীকের প্রার্থীর পাশাপাশি দলের যে কোনো নেতা বা ব্যক্তি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারবেন। কারণ নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক করতে হবে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সোমবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর অনুমতি দলের প্রয়োজনে কৌশলগত সিদ্ধান্ত। তিনি আরও বলেন, দল দলের কৌশল ঠিক করে। দলের অবস্থান অনুযায়ী দলের ভবিষ্যৎকে মাথায় রেখে দলীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেন এবং সিদ্ধান্ত দেন। নতুন সময়ে নতুন কৌশলও দলকে গ্রহণ করতে হবে। এ সময় যে কৌশল দরকার আমাদের নেত্রী সে কৌশলই ঠিক করেছেন এবং গতকাল (রোববার) তার বক্তব্যে প্রকাশ করেছেন।
২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিবিহীন ওই নির্বাচনে ৫৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিল না। ওই আসনগুলো মহাজোট শরিকদের ছেড়েছিল দলটি। এরপর ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে জোট শরিক ও মিত্রদের ৩৯ আসন ছেড়ে ছিল আওয়ামী লীগ।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ২৬১ প্রার্থীর তিনজন বাদে সবাই জয়ী হন। ফলে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে একটি ধারণা ছিল দলের মনোনয়ন পেলেই নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত। এ কারণে এতদিন দলের মনোনয়নপ্রাপ্তিতেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন তারা। নানা মাধ্যমে চেষ্টা চালিয়েছেন নৌকার প্রার্থী হতে। তবে শেষ পর্যন্ত নৌকা পেলেও এবার আর টেনশন দূর হয়নি আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ঘোষণার পর যারা বঞ্চিত হয়েছেন তাদের অনেকেই নির্বাচনি মাঠে থেকে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। নতুন মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে যারা এবার দলের সমর্থন পাননি তারাও দলের ইতিবাচক অবস্থানের কারণে ভোট করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়নপত্রও কিনেছেন অনেকেই। মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ার পরেও অনেক নেতার কর্মী-সমর্থকরা মিছিল করছেন। প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিও করেছেন অনেকেই।
রাজশাহী ও বাঘা : রাজশাহী-১ আসনে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির মনোনয়নপত্র তোলা হয়েছে। সেখানে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুসারে প্রার্থী হিসেবে মাহিয়া মাহির নাম লেখা হয়েছে শারমিন আক্তার নিপা।
মনোনয়নপত্র তোলার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন নায়িকা নিজেই। তিনি বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবেই নির্বাচন করতে চেয়েছিলাম। এ জন্য দুটি আসনের মনোনয়ন ফরম তুলেছিলাম। তবে দল আমাকে বিবেচনা করতে পারেনি। এ জন্য অবশ্য আমার মনে কোনো কষ্ট নেই।’ ২৭ বছর ধরে বিভিন্ন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন ইসরাফ্রিল বিশ্বাস।
সংসদ নির্বাচন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, পৌর নির্বাচন থেকে শুরু করে সব নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। কিন্তু তিনি কোনো নির্বাচনে জামানত ফেরত পাননি। ইসরাফ্রিল বিশ্বাস রাজশাহীর বাঘা পৌরসভার বলিহার গ্রামের বাসিন্দা। রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আখতারের কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম তুলেছেন।
যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা (ঢাকা) : স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা-৫ আসনের সংসদ-সদস্য প্রয়াত হাবিবুর রহমান মোল্লার বড় ছেলে ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজল। সোমবার যাত্রাবাড়ীর কাঠেরপুল বালুর মাঠে সকাল থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ঢাকা-৫ আসনের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় মশিউর রহমান মোল্লা এ ঘোষণা দেন। সভাশেষে তিনি কাঠেরপুল থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে কোনাপাড়া হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।
নাটোর ও লালপুর : নাটোর-১ আসনে তৃণমূল আওয়ামী লীগের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক সংসদ-সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন। তিনি বিএনপি সরকারের আমলে খুন হওয়া সাবেক সংসদ-সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ উদ্দিনের ছোট ভাই ও সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সদস্য শেফালী মমতাজের দেবর।
লালপুর উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে তার পক্ষে মনোনয়নপত্র তোলা হয়েছে। আবুল কালাম আজাদ দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় সোমবার ভোর থেকেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা তার বাসভবনে ভিড় করেন। পরে তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে এক সভায় মিলিত হন। সেখানে তাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার দাবি জানান নেতাকর্মীরা। কিন্তু তিনি তাতে রাজি না হওয়ায় নেতাকর্মীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এক পর্যায়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
কুষ্টিয়া : স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসন থেকে সাবেক সংসদ-সদস্য রেজাউল হক চৌধুরী, কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য আব্দুর রউফ ও কুষ্টিয়া-১ (সদর) আসনে পৌর মেয়র আনোয়ার আলীর ছেলে পারভেজ আনোয়ার তনু মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তনু বলেন, এবার শেখ হাসিনা নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য ও উৎসবমুখর করতে হবে বলে নির্দেশনা দিয়েছেন। শেখ হাসিনার কথায় আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মাঠে নেমেছি।
বাগেরহাট : বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) আসন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করবেন নায়ক শাকিল খান। জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে শাকিল খানের পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন তার ভাগ্নে শাহরিয়ার নাজিম। নায়ক শাকিল খান ছাড়াও বাগেরহাট-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মেনোওয়েল সরকার ও বাগেরহাট-৪ আসনে মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি এমআর জামিল হোসাইন জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন।
কুমিল্লা, ব্রাহ্মণপাড়া, চান্দিনা ও দাউদকান্দি : কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে পাঁচজন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে বুড়িচং উপজেলা থেকে চার ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা থেকে একজন রয়েছেন।
তারা হলেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাবেক ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর খান চৌধুরী এবং কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এহতেশামুল হাসান ভূইয়া রুমি, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির কেন্দ্রীয় পরিষদের নির্বাহী ও কুমিল্লা জেলা সভাপতি মুফতি বাকী বিল্লাহ আল আযহারী ও আব্দুল জলিল।
কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ টিটু। কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-তিতাস) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়া, তার সহধর্মিণী মাহমুদা ভূঁইয়া ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ব্যারিস্টার নাইম হাসান।
ধোবাউড়া (ময়মনসিংহ) : ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করবেন হালুয়াঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক সায়েম। সোমবার বিকালে মহিলা ডিগ্রি কলেজ প্রাঙ্গণে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়তোষ বিশ্বাস বাবুলের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে তিনি প্রার্থিতা ঘোষণা দেন।
সরিষাবাড়ী (জামালপুর) : স্বতন্ত্র পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ঢাকার তেজগাঁও থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট শহীদুল ইসলাম মনোনয়ন ফরম তুলেছেন।
মানিকগঞ্জ : সংসদ-সদস্য মমতাজকে রুখতে ইতোমধ্যে চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজেদের জানান দিয়েছে। মানিকগঞ্জ-২ সিংগাইর উপজেলা পরিষদের দুই বারের চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান খান হান্নান স্বতন্ত্র প্রার্থিতার ঘোষণা দিয়ে চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ শিল্পপতি দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। টুলুর চাচাতো ভাই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুল নির্বাচন করবেন।
এ ছাড়া সাবেক সংসদ-সদস্য সামসুদ্দিন আহমেদের ছেলে ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাহাবুদ্দিন আহমেদ চঞ্চল নির্বাচন করবেন। হরিরামপুরের উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক দেওয়ান সাইদুর রহমান ঘোষণা দিয়েছেন মমতাজের বিপক্ষে অবস্থানের কথা। মানিকগঞ্জ-১ (শিবালয়-ঘিওর-দৌলতপুর) আসনে জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দিন মাহমুদ (এসএম জাহিদ) স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা দিয়েছেন।
টঙ্গী পশ্চিম, পূর্ব ও কালিয়াকৈর (গাজীপুর) : গাজীপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন গাজীপুর মহানগর যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. সাইফুল ইসলাম। গাজীপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন কালিয়াকৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাসেল ও নুরে আলম সিদ্দিকী।
ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) : সদ্য পদ্যত্যাগ করা ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত অ্যাডভোকেট জাহিদুল ইসলাম ও ব্যবসায়ী জালাল আহমেদের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।
নেত্রকোনা : নেত্রকোনা-২ (সদর-বারহাট্টা) আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামছুর রহমান লিটন ও সাবেক উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। নেত্রকোনা-১ (কলমাকান্দা-দুর্গাপুর) আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন সদ্য পদত্যাগকারী দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জান্নাতুল ফেরদৌস আরা ঝুমা তালুকদার।
কাউখালী (পিরোজপুর) : কাউখালীতে পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহিউদ্দিন মহারাজ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেছেন।
সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জ-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন সুনামগঞ্জ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, জেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি সেলিম আহমদ।