Hot

আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন-অগ্রগতি, নয় প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি

উন্নয়নের নামে নয়টি প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে পতিত আওয়ামী সরকারের শাসন আমলে। বিভিন্ন সময় তদন্তে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এলেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির তেমন নজির নেই বললেই চলে। অর্থাৎ যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। খোদ সরকারি সংস্থা বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) করা প্রতিবেদন থেকে এমন চিত্র উঠে এসেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্প মানেই যেন দুর্নীতি ও অনিয়মের মহোৎসব। ফলে যতটুকু কাজ হয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি অর্থ চলে গেছে প্রকল্প পরিচালকসহ দায়িত্বশীলদের পকেটে। এ বিষয়ে উদাসীন ছিলেন সব পক্ষই।

বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ও শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য ড. জাহিদ হোসেন শনিবার যুগান্তরকে বলেন, এখন সময় এসেছে আইএমইডির বিভিন্ন সময়ের করা প্রতিবেদনগুলো খতিয়ে দেখার। এজন্য যা করা দরকার সেটি হলো, বিভিন্ন সময় তৈরি কিছু প্রতিবেদন বিশেষ করে চলমান প্রকল্পের বিষয়ে যেসব অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছিল সেগুলোর উদাহরণ দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তুলে ধরা উচিত। এক্ষেত্রে যে সংস্থাটি বছরের পর বছর তাদের মূল্যায়ন প্রতিবেদন করেই গেছে, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি, সংস্থাটি যে অবহেলিত ছিল সেটিও তুলে ধরতে হবে। সেই সঙ্গে ওইসব প্রতিবেদন তৈরির পর কোথায় গিয়ে ঠেকেছিল সেখান থেকে পুনর্মূল্যায়ন করেও আইএমইডি সরকারের নজরে আনতে পারে। তাহলে এই সরকার বিষয়টি নিয়ে সহজেই ধরতে পারবে। এটি করা না গেলে প্রকল্পের অনিয়ম-দুর্নীতি তো ছিলই, এর সঙ্গে মূল্যায়নের নামে সরকারের বাড়তি অর্থ ও সময় অপচয় ছাড়া কিছুই ফল আসবে না।

প্রকল্পগুলো হলো-হাজামজা বা পতিত পুকুর পুনর্খননের মাধ্যমে সংগঠিত জনগোষ্ঠীর পাট পচানো পরবর্তী মাছ চাষের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন, হাতিয়া দ্বীপে বায়ু ও সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য হাইব্রিড সিস্টেম স্থাপন, রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড অগমেন্টেশন অব ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক অব ডিপিসিডি (সংশোধিত), কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প, শহিদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ উন্নয়ন, মিরপুর-১০-কচুক্ষেত রাস্তা প্রশস্তকরণ, ঢাকা মহানগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণ (ফেজ-১) প্রকল্প এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন কমপ্লেক্স নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্ব)। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আইএমইডির সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, প্রকল্প মূল্যায়ন করে আমরা সুপারিশ দিই। কিন্তু মন্ত্রণালয়গুলো ব্যবস্থা নেয় কিনা সেটি জানানোর বাধ্যবাধকতা থাকে না। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। এজন্য একটি ‘ন্যাশনাল ইভ্যালুয়েশন পলিসি’ তৈরি করে উপদেষ্টা পরিষদে পাঠানো হয়েছে। সেটি অনুমোদন পেলে এর আওতায় ইভ্যালুয়েশন আইন ও বিধিমালা করা হবে। তাহলে আমরা যেসব অনিয়ম, দুর্নীতি এবং অপচয়ের তথ্য তুলে আনব সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াটা বাধ্যবাধকতার মধ্যে পড়বে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দায়ী কারও বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। বিভিন্ন সময় আইএমইডির করা তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হয়েছে। ২০১৭ সালের তৈরি করা আইএমইডির এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, রাজধানীর জলাবদ্ধতা দূর করতে ঢাকা ওয়াসা হাতে নেয় ‘ঢাকা মহানগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণ (ফেজ-১)’ প্রকল্প। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে ১৬৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা। ২০১০ সাল থেকে শুরু হয়ে ২০১৪ সালে এটির বাস্তবায়ন কাজ শেষ হয়। এ প্রকল্পে পদে পদে অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ঠিকাদারকে অতিরিক্ত বিল দেওয়া, দরপত্র ছাড়াই ঠিকাদার নিয়োগ, সড়ক পুনর্নির্মাণ খাতে বরাদ্দ দেওয়া অর্থের সঠিক ব্যবহার না করা এবং নিম্নমানের কাজ করা। আরও আছে সমন্বয়হীন কাজ করে অর্থের অপচয় এবং পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দিতে অনুমোদিত ১১টির স্থলে দুশতাধিক প্যাকেজে কাজ দেওয়া। এসব দুর্নীতি ও অনিয়ম খতিয়ে দেখে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে আইএমইডি। কিন্তু ওই পর্যন্তই শেষ। কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি।

এছাড়া ২০২০ সালে ‘হাজামজা বা পতিত পুকুর পুনর্খননের মাধ্যমে সংগঠিত জনগোষ্ঠীর পাট পচানো পরবর্তী মাছ চাষের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন’ প্রকল্পের নিবিড় পরিবীক্ষণ সমীক্ষা করা হয়। এতে বলা হয়, প্রকল্পের মূল কাজ পুকুর পুনর্খননের কোনো খবর নেই। আনুষঙ্গিক কার্যক্রম বাস্তবায়নে ব্যস্ত ছিলেন কর্মকর্তারা। আগেই গাড়ি ও মোটরসাইকেল কেনা হয়েছে ২৯টি। ফলে যে উদ্দেশ্য নিয়ে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছিল সেটি পূরণ না হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়। এক্ষেত্রে মূল কাজ বাস্তবায়ন না করে আনুষঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করাকে অনিয়ম হিসাবে দেখেছে সংস্থাটি। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয় ৩৯ কোটি টাকা। পাটের আঁশ ও পানির গুণগত মান ঠিক রাখার লক্ষ্যে শ্রম ও ব্যয় সাশ্রয়ী আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য এ প্রকল্পটি হাতে নেয় পল্লি দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন (পিডিবিএফ)। কিন্তু তখন পর্যন্ত কোনো পুকুরেই (মূল্যায়নের সময়) একই সঙ্গে পাট পচানো এবং মাছ চাষ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়নি। সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ চাষি প্রচলিত সনাতন পদ্ধতিতে পাট পচিয়ে থাকেন। যার ফলে প্রকল্পের দ্বিতীয় ও তৃতীয় উদ্দেশ্যও পূরণ হয়নি। এছাড়া পুকুর পুনর্খননের ক্ষেত্রে ডিপিপির কাজের সঙ্গে দরপত্রের কাজে ব্যাপক অসামঞ্জস্যতা ছিল।

আইএমইডির ২০১৮ সালে করা এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, দুটি বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নানা অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। এগুলো হলো-উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সংশোধন ছাড়াই কাজের ধরন পরিবর্তন, টার্নকি চুক্তি না হলেও অর্থ ব্যয়, বরাদ্দের বেশি টাকার চুক্তি, মূল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ না করে প্রকল্প শেষ করা, কম পোল কিনে বেশি ব্যয় দেখানো, বরাদ্দের অতিরিক্ত ও অনুমোদনহীন ব্যয় এবং সরকারি অর্থায়নের বিপরীতে সুদের নামে অর্থ ব্যয় করা। হাতিয়া দ্বীপে বায়ু ও সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য হাইব্রিড সিস্টেম স্থাপন এবং রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড অগমেন্টেশন অব ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক অব ডিপিসিডি (সংশোধিত) প্রকল্প দুটির সমাপ্ত মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এমন চিত্র খুঁজে পায় সংস্থাটি। আলাদাভাবে মূল্যায়ন প্রতিবেদনে দেখা যায়, হাতিয়ায় বায়ু ও সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের হাইব্রিড সিস্টেম স্থাপন প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা ঘটে। ডিপিডিসির প্রকল্পেও অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনা আর্থিক শৃঙ্খলার পরিপন্থি। সূত্র জানায়, ‘ইনস্টলমেন্ট অব এন অফগ্রিড উইন্ড সোলার হাইব্রিড সিস্টেম ইউথ এইচএফও বেজড ইঞ্জিন প্রাইভেন জেনারেটর ইন হাতিয়া আইল্যান্ড’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১২ সালের মার্চ থেকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা ছিল। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সহায়তায় প্রকল্পটির ব্যয় ১৩১ কোটি টাকা ধরা হয়। কিন্তু মূল প্রকল্পে ৭ দশমিক ৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন হাইব্রিড বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র তৈরির সংস্থান থাকলেও সেটি শেষ পর্যন্ত হয়নি। দরপত্র তথ্যাবলি পরিবর্তন করে দুটি আলাদা লটে ভাগ করে টার্নকি পদ্ধতিতে ২০১৪ সালের ১৮ আগস্ট দরপত্র আহ্বান করা হয়। অনুমোদন ছাড়াই এই পরিবর্তন করা হয়েছিল। ফলে পরবর্তীকালে মূল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ছাড়াই ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পটি সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। তবে এরই মধ্যে ৯ কোটি ১৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। সেই টাকা খরচেও নানা দুর্নীতি ছিল। যেমন ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সালটেন্সি সার্ভিস-টার্নকি খাতে তিন কোটি ৩৬ লাখ টাকার বিপরীতে খরচ হয়েছে তিন কোটি ৩৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। কিন্তু আইএমইডি বলছে, প্রকল্পের আওতায় কোনো টার্নকি চুক্তি হয়নি, তাই এই টাকা ব্যয় করা যুক্তিযুক্ত নয়। এছাড়া কন্সালটেন্সি সার্ভিস খাতে বরাদ্দ ছিল তিন কোটি ৩৬ লাখ টাকা। কিন্তু এ সংশ্লিষ্ট ফার্ম বা ব্যক্তির সঙ্গে আট কোটি ৭৪ লাখ টাকার চুক্তি করা হয়। যা আর্থিক শৃঙ্খলার পরিপন্থি। সেই সঙ্গে প্রকল্প প্রস্তাবে এ খাতের অনুমোদিত মেয়াদকাল ছিল ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু কন্সালটেন্সি সার্ভিসের সঙ্গে ২০১৬ সালের ২২ আগস্ট পর্যন্ত মেয়াদ ধরে চুক্তি করা হয়। আইএমইডি বলছে, এটি মোটেই বাঞ্ছনীয় নয়।

এদিকে, ‘রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড অগমেন্টেশন অব ডিস্ট্রবিউশন নেটওয়ার্ক অব ডিপিডিসি’ ২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১২ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য একনেক অনুমোদন লাভ করে। এ সময় ১৬৯ কোটি সাত লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। পরবর্তী সময় সংশোধনীর মাধ্যমে ব্যয় বাড়িয়ে ২০১ কোটি ৩০ লাখ টাকা করা হয় এবং মেয়াদ ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) শেষ পর্যন্ত ১৯৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয় করে। ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সমাপ্ত হয় প্রকল্পটি। ডিপিপি অনুযায়ী ১১ হাজার ৩০০টি ১৫ মিটার পোল সংগ্রহের কথা থাকলেও বাস্তবে ১০ হাজার ৯১৭টি পোল সংগ্রহ করা হয়েছে। পরিমাণে কম হলেও অধিক ব্যয় দেখানো হয়। এছাড়া হার্ডওয়্যার ম্যাটেরিয়ালস ফর ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম খাতে ১১ কোটি ৭১ লাখ ৪২ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও ১৪ কোটি ২৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।

এছাড়া কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ স্থাপন প্রকল্পে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা ঘটে। প্রকল্পটিতে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি এবং বাস্তবায়নে দেরি হওয়ার পেছনে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আইএমইডির তদন্তে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশের পরও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এ পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রকল্প স্টিয়ারিং কমিটির সভায় বিরক্তি প্রকাশ করা হয়। এছাড়া সর্বশেষ ২০২১ সালে গঠিত আইএমইডির তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে নানা অনিয়মের চিত্র। সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ছাড়াই প্রকল্প গ্রহণ, দরপত্র প্রক্রিয়ায় আর্থিক ও পরিকল্পনা শৃঙ্খলার বিচ্যুতি ছিল। কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই ইচ্ছামতো প্লিন্থ এরিয়া পরিবর্তন করা হয়। আর্থিক ও পরিকল্পনা শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করে নির্মাণকাজ পরিবর্তনসহ নানা অনিয়ম ঘটে। সেই সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়নে তৈরি হয় দীর্ঘসূত্রতা। শেষ পর্যন্ত প্রকল্পে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৬৮২ কোটি ৪৬ লাখ টাকায়। প্রকল্পটি নিয়ে গঠিত হয় তদন্ত কমিটিও। ওই সময়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ও আইএমইডির সাবেক সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী শনিবার যুগান্তরকে বলেন, প্রকল্পটিতে নানা অভিযোগ বিষয়ে তদন্ত করা হয়। এর পর প্রতিবেদন তৈরি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও গণপূর্ত অধিদপ্তরে পাঠানো হয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। কিন্তু এরপর আইএমইডি এবং পরিকল্পনা বিভাগে সচিব হিসাবে থাকার সময় পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল কিনা সেটি জানতে পারিনি। ২০২৩ সালে মূল্যায়ন করা হয় ‘সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ’ প্রকল্পটির। এতে একই ধরনের যন্ত্র বিভিন্ন দামে (অতিরিক্ত) ক্রয়, যোগ্য ঠিকাদারকে বাদ দেওয়া, প্রকৃত কৃষক নির্বাচন না করাসহ ১০ অনিয়ম ও দুর্নীতি চিহ্নিত করে আইএমইডি। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে তখন উল্লেখ করা হয় নিরীক্ষা প্রতিবেদনেও। এতে বলা হয়, অডিটে উঠে আসা অন্য আপত্তি দেওয়া অনিয়মগুলো হলো-ডিপিপির (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) নির্দেশনা না মানা, কারিগরি কমিটির নির্দেশনা অমান্য করে বেশি দরে যন্ত্রপাতি কেনা এবং নতুন আসবাবপত্র মেরামত দেখিয়ে অর্থ ব্যয় করা। এছাড়া আরও আছে-বাজার দর যাচাই না করে উচ্চদরে যন্ত্র কেনা, নিম্নশক্তির যন্ত্র সরবরাহ করা হলেও জরিমানা না করে অনিয়মিতভাবে বিল পরিশোধ, কৃষকদের কাছে অতিরিক্ত অর্থ আদায় এবং বাৎসরিক সীমার অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করা। তবে অভিযোগগুলোর বেশির ভাগই ছিল অডিট আপত্তি। অন্য প্রকল্পগুলোতেও প্রায় একই ধরনে অনিয়ম ও দুর্নীতি হলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার নজির নেই বলে জানা গেছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
totoslotgacor
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
toto gacor
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor