Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন-অগ্রগতি পরিসংখ্যানের বিশ্বাস অর্জনে ব্যর্থ বিবিএস

পরিসংখ্যানের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসন আমলে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয়, মূল্যস্ফীতি, প্রত্যাশিত গড় আয়, বেকারত্বের হার, জনসংখ্যার চিত্র, দরিদ্রতার হারসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদনের চিত্রসহ নানা তথ্য ও সূচক ছিল বাস্তবতাবিবর্জিত।

সন্দেহের বাইরে ছিল না কোনো কিছুরই হিসাব। বারবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে তথ্য-উপাত্ত। এমনকি সংস্থাটির নিজের করা জরিপেও উঠে এসেছে আস্থাহীনতার চিত্র। সম্প্রতি শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির কাছে খোদ ব্যুরোর দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলেছেন, রাজনৈতিক চাপে সঠিক তথ্য দিতে অসহায় ছিলেন তারা। কেননা সে সময় পরিকল্পনামন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন ছাড়া অর্থনীতির মৌলিক অনেক সূচকই প্রকাশ পেত না। সময় সময় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন নীতিনির্ধারকরাও। এমনকি তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় তোপের মুখেও পড়তে হয়েছিল বিশ্বব্যাংকের মতো সংস্থার তৎকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফানকেও।

জানতে চাইলে পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সম্প্রতি যুগান্তরকে বলেন, শুধু আমাদের দেশেই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই পরিসংখ্যানের তথ্য নিয়ে কথা হয়। আফ্রিকার দেশগুলোতে অবস্থা আরও খারাপ। সেই তুলনায় বাংলাদেশ ভালো আছে। তবে এখনো বিবিএস’র দক্ষতায় ঘাটতি আছে। ফলে বিভিন্ন সময় তাদের তথ্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কিন্তু আগের তুলনায় জনবল ও সক্ষমতা বেড়েছে। সেই সঙ্গে নতুন নতুন কাজের ব্যাপ্তিও বেড়েছে অনেক। তিনি আরও বলেন, জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতিসহ বিভিন্ন তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে আগে মন্ত্রীর অনুমোদন লাগত। এখন আমি বলে দিয়েছি, আমার কাছে আসতে হবে না। স্বাধীনভাবে মাঠ পর্যায় থেকে যে তথ্য পাওয়া যায় তাই প্রকাশ করতে হবে।

বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ও শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য ড. জাহিদ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ‘এতদিন পরিসংখ্যান ব্যুরোকে যে কোনো তথ্য দিতে গেলে শুধু পরিকল্পনামন্ত্রীই নন, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরেরও অনুমোদন নিতে হতো। এখন সে অবস্থা নেই। তাই প্রকৃত তথ্য প্রকাশের চর্চাটা করতে হবে বিবিএসকে। ভয় ও শঙ্কার ঊর্ধ্বে উঠে প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে হবে।

শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য জানান, রাজনৈতিক চাপে সরকারি কর্মকর্তারা সঠিক তথ্য দিতে অসহায় ছিলেন। ফলে তারা বাধ্য হয়েই যে কোনো বিষয়ে সরকারি তথ্য প্রাক্কলন করতেন। গত ১৭ সেপ্টেম্বর তথ্য তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠকে এমন কথা বলেছেন পরিসংখ্যান ব্যুরোর কর্মকর্তারা। বৈঠক শেষে ড. দেবপ্রিয় বলেন, যারা ভয়ে বা চাপে এতদিন সঠিক তথ্য দিতে পারেননি, তাদের বলা হয়েছে এখন সময় এসেছে এই পরিবেশকে কাজে লাগান। তিনি আরও বলেন, জিডিপি, জাতীয় আয়, মূল্যস্ফীতি এবং এডিপির প্রাক্কলন যেভাবে করা হয় এগুলোর বস্তুত ভিত্তি অত্যন্ত দুর্বল।

সূত্র জানায়, সম্প্রতি প্রকাশ করা হয় বিবিএস’র নিজের করা এক জরিপের চূড়ান্ত প্রতিবেদন। সেখানে বলা হয়েছে, বিবিএসের তথ্য ব্যবহারকারীদের বড় একটি অংশই পরিসংখ্যান বিশ্বাসযোগ্য মনে করেন না। মোট ব্যবহারকারীর মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বা ৩৩ দশমিক ১৬ শতাংশ বিবিএসের মূল্যস্ফীতিসংক্রান্ত পরিসংখ্যানকে নির্ভরযোগ্য মনে করেন না। ব্যবহারকারীদের ২৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ মনে করেন, এ-সংক্রান্ত তথ্যের নির্ভরযোগ্যতা কম। আর একেবারেই অনির্ভরযোগ্য মনে করেন ৫ দশমিক ৭২ শতাংশ ব্যবহারকারী। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সঙ্গে যৌথভাবে বিবিএস ‘ব্যবহারকারী সন্তুষ্টি জরিপ-২০২৪’ নামের এ জরিপ পরিচালনা করে সংস্থাটি।

এর আগে ২০১০ সালের ৬ জুন তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী প্রশ্ন তোলেন পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য নিয়ে। শুধু তাই নয়, কৃষিমন্ত্রীর তোপের মুখে পড়েছিলেন বিবিএস’র কর্মকর্তারাও। অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে ওই বছরের বোরো মৌসুমে উৎপাদনের ভুল তথ্য দেওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। সচিবালয়ে কৃষিতথ্য পরিবেশন নিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং পরিসংখ্যান ব্যুরোর সঙ্গে এক সমন্বয় সভায় মন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ওই সময় মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘আপনাদের ভুল তথ্যের কারণে আমাদের সব চেষ্টা, পরিকল্পনা প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশে গত দুই অর্থবছরজুড়েই মূল্যস্ফীতির গড় হার ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে। যদিও বিবিএস প্রকাশিত মূল্যস্ফীতির পরিসংখ্যান নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন ছিল। বাজারে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির হারের সঙ্গে সংস্থাটির দেওয়া মূল্যস্ফীতির তথ্যের ব্যবধান অনেক বেশি বলে দাবি করে আসছিলেন অর্থনীতিবিদ, বিশ্লেষক এবং বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা। পাশাপাশি জিডিপি প্রবৃদ্ধির তথ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বিশ্বব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাও। এ নিয়ে বিরোধ বেধে যায় তৎকালীন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে। এমনকি তখনকার বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন ব্যাপক চাপের মুখে পড়েছিলেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ড. জাহিদ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ‘২০১৭ সালের কথা। সে সময় বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল। সেটির এক-তৃতীয়াংশই ছিল জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে। আমরা বলেছিলাম, বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধি বাড়ছে, কিন্তু তার হিসাবের সঙ্গে রেলিভেন্ট অন্যান্য বিষয়ের মিল নেই। তাহলে প্রবৃদ্ধি এত বেশি হচ্ছে কীভাবে? এটি নিয়ে নিউজ হওয়ার পর তখনকার পরিকল্পনামন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। আমরা ব্যাপক তোপের মুখে পড়েছিলাম। পরদিন আমাদের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফানকে ডেকে দেড় ঘণ্টা রাগ ঝাড়েন।

বিবিএস’র সদ্য প্রকাশিত জরিপে বলা হয়েছে, বিবিএস’র তথ্যকে কম নির্ভরশীল মনে করে ৩৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ মানুষ। এর পরই ২৬ শতাংশ মানুষ ন্যাশনাল অ্যাকাউন্ট পরিসংখ্যান নিয়ে সন্দিহান। এর মাধ্যমে জিডিপির হিসাব-নিকাশ হয়। আর ২৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ মানুষ আয় ও দারিদ্র্যের হিসাব নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ে সন্দেহ রয়েছে ২৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ মানুষের। ২৩ শতাংশের বেশি মানুষ শিল্প, শ্রমিক ও শিক্ষা পরিসংখ্যান নিয়ে দ্বিধায় থাকেন। এছাড়া ৪০ শতাংশ মানুষ মনে করছে, সংস্থাটির তথ্য নির্ভরশীল। প্রায় ১৯ শতাংশ মানুষ বিবিএসের তথ্যকে অন্য দেশের সঙ্গে তুলনীয় মনে করছে। ৮০ শতাংশ ব্যবহারকারী বলছেন, প্রয়োজনীয় ডাটা পাওয়া গেলেও তা পর্যাপ্ত নয়। জরিপে উঠে আসে, ৪২ দশমিক ৮৮ শতাংশ ব্যবহারকারী বিবিএসের তথ্য প্রকাশের ধারাবাহিকতা নিয়ে অসন্তুষ্ট। প্রায় ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ ব্যবহারকারী এ বিষয়ে কিছু জানেন না।

বিবিএস’র সাবেক মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমান সোমবার যুগান্তরকে বলেন, আমাদের মতো দেশগুলোতে কখনো পরিসংখ্যানকে শতভাগ নিশ্চিত করে বলা যায় না। উন্নত বিশ্বের দেশ হলে জনগণ তাদের তথ্য ই-মেইলে পাঠিয়ে দেয়, সবার বাড়িঘর থাকে। জনগণও সচেতন থাকে। ফলে সেখানে তথ্য অনেক বেশি সঠিক হয়। কিন্তু এরপরও বলব আগে কী হয়েছে না হয়েছে আমার জানা নেই। তবে আমি যতদিন দায়িত্বে ছিলাম তখন মান এবং নিয়মকানুনের সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করিনি। কিন্তু মানুষের মধ্যে কিছু ভুল ধারণা থাকে। যেমন বাজারে চাল, তেল বা ডালের দাম বেড়ে গেলেই মনে করে মূল্যস্ফীতি বাড়ল না কেন। কিন্তু খাদ্য মূল্যস্ফীতির হিসাবে ১৫০টির মতো পণ্যের দাম বিবেচনা করা হয়। এটা অনেকেই জানেন না। আবার জনশুমারি জাতিসংঘের যে নিয়ম আছে সেটি মানা হয়, বেকারত্বের ক্ষেত্রে আইএলও’র নিয়ম মানা হয়। এর পরও শতভাগ তথ্য নিশ্চিত হবে সেটি বলা যাবে না। তবে অনেক ক্ষেত্রে বিবিএস সম্পর্কে মানুষের ভুল বোঝাবুঝিও আছে।

পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন সম্প্রতি বিবিএস-এ এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমি এই জায়গায় আসার আগে মনে করেছিলাম, বিবিএস বানিয়ে রিপোর্ট দেয়। কিন্তু এই ধারণা ভুল। এখন এসে দেখছি বিবিএস’র দক্ষ কর্মীরা অনেক পরিশ্রম করে এবং আইন-কানুন মেনেই প্রতিবেদন তৈরি করে। এখানে বানানোর সুযোগ কম।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto