International

আগামীকাল পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন

রেকর্ড মূল্যস্ফীতি, বেকারত্ব আর নিরাপত্তাসহ নানামুখী সংকটে জর্জরিত পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন কাল। আগামী পাঁচ বছরের জন্য নতুন নেতৃত্ব ঠিক করবে, দেশটির প্রায় ১৩ কোটি ভোটার। জনমত জরিপের ইঙ্গিত, নির্বাসন থেকে ফেরা নওয়াজ শরিফের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন অনেকটা নিশ্চিত। তার জয়কে সুগম করতে পরিকল্পিতভাবে, ইমরান খানকে ভোট থেকে বিরত রাখা হয়েছে বলে অভিযোগও অনেকের। বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যম ডন নিউজ এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দাপুটে পদচারণার কারণে, ‘পাঞ্জাবের সিংহ’ উপাধি যার, পাকিস্তানের রাজনীতিতে, তার নতুন শুরুটা ছিলো শান্তির পায়রা উড়িয়ে। নির্বাসন থেকে অক্টোবরে দেশে ফিরেই, যে সমঝোতার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, তাতে এখন পর্যন্ত সফল নওয়াজ শরিফ। সামরিক বাহিনী ও আদালতের সাথে দুরত্ব ঘুচেছে, এখন জনগণের রায়ের অপেক্ষা।

জনমত জরিপ বলছে, বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে সহজ জয় পাবে, ৭৫ বছর বয়সী নওয়াজ শরিফের দল, পাকিস্তান মুসলিম লিগ। ভোটের মাঠে যাদের মূল লড়াই, ভুট্টো পরিবারের নেতৃত্বাধীন পিপিপি’র সাথে। তবে, তরুণ বিলাওয়াল ভুট্টোর ওপর এখনই পাকিস্তানিরা ভরসা রাখবেন কিনা তা নিয়ে সন্দিহান অনেকে।

প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী বিলাওয়াল ভুট্টো বলেছেন, এদেশের জনসংখ্যার ৬০ থেকে ৭০ ভাগই তরুণ। তাই তাদের দিকেই মনোযোগ দিতে চাই। আমি নিজেও তরুণ। ফলে, তাদের সাথে নিয়ে কাজ করা আমার জন্য সহজ হবে।

এবারের নির্বাচনকে ঘিরে সবচেয়ে বড় সমালোচনা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অনুপস্থিতি। আদালতের রায়ে প্রার্থী হতে পারেননি বিপুল জনপ্রিয় এ নেতা। দলীয় প্রতীকও পায়নি পিটিআই। তবে, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন দলটির অনেকে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইমরানের অনুপস্থিতি পুরো নির্বাচনকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ সাবের শাহ বলেন, এই নির্বাচন অনেকটাই এক তরফা। ইমরান খানকে নির্বাচনে আসতে দিচ্ছে না সেনাবাহিনী। কিন্তু নিষিদ্ধ হওয়া নওয়াজ শরীফকে দেশে ফিরে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সব সুযোগই দিচ্ছে। কতটুকু সুষ্ঠু হচ্ছে ভোট তা নিয়ে সন্দেহ রয়েই য়ায়।

অনেকেই বলছেন, ইমরানের ভাগ্য বিপর্যয়ের কারণেই কপাল খুলেছে নওয়াজের। ফিরে আসার গল্প অবশ্য নতুন নয় তার। এর আগে, দু’বার ক্ষমতাচ্যুত হয়েও, প্রধানমন্ত্রীর পদে ফিরেছিলেন। কিন্তু, রাজনীতিতে আজীবন নিষিদ্ধ হওয়ার পরও প্রত্যাবর্তনের হ্যাটট্রিক করবেন, ভাবা যায়নি কিছুদিন আগেও। যদিও, রাজনীতির এসব জটিল সমীকরণে খুব মাথাব্যথা নেই সাধারণ পাকিস্তানিদের। অর্থনীতির কঠিন অবস্থা থেকে মুক্তি চান তারা।

একজন পাকিস্তানি নাগরিক বলেন, সরকার পরিবর্তন হলেও আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। ভালো সরকার হলেও আমাদের ভাগ্য পরিবর্তন হবে না। তারা আমাদের জন্য ভাবে না। নির্বাচনের আগে জনগণের কথা বলে। নির্বাচন শেষ হলেই ভুলে যায়।

হাড্ডাহাড্ডি লড়াই না থাকলেও, পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নির্বাচন এবারের ভোট। জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ মিলিয়ে ৮৫৯ আসনের জন্য লড়ছেন, প্রায় ১৮ হাজার প্রার্থী; যাদের ১২ হাজারই স্বতন্ত্র। দেশটিতে এবার ভোটার ১৩ কোটি; যা ভারত, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের পর সবচেয়ে বেশি।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button