Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Bangladesh

আগের মতোই উদ্বেগের শঙ্কার সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ

  • ৮টি ধারা বাদ নিয়ে নতুন কিছু ধারা যুক্ত করা হয়েছে
  • অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা না হওয়ায় এর উদ্দেশ্য ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা

বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ বাতিল করে অন্তর্বর্তী সরকার নতুন সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর যে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে তাতে ৮টি ধারা বাদ নিয়ে নতুন কিছু ধারা যুক্ত করা হয়েছে। গেজেট প্রকাশের অপেক্ষায় থাকা নতুন এই আইনের অনেক ভালো দিক থাকলেও কিছু ক্ষেত্রে আগের মতোই উদ্বেগ রয়ে গেছে।

এছাড়া অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদনের আগে সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা না হওয়ায় এর উদ্দেশ্য ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের জন্যও এটা হুমকি তৈরি করবে বলেও মনে করা হচ্ছে।

গত ২৪ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর খসড়া অনুমোদন হয়। এখন এটির গেজেট প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। সরকার বলছে, এ অধ্যাদেশ দ্বারা সাইবার স্পেস এবং একই সঙ্গে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সুরক্ষিত হবে।

অধ্যাদেশে আমলযোগ্য ও অজামিনযোগ্য মামলার ধারা হিসেবে রয়েছে ১৭, ১৮ এর উপধারা ১ এর দফা গ, ধারা ১৯, ২২ ও ২৩, যা মূলত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বেআইনি প্রবেশ, কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার সিস্টেম, সাইবার স্পেসের ভৌত অবকাঠামো ইত্যাদিতে বেআইনি প্রবেশ, সাইবার স্পেসে প্রতারণা এবং সাইবার সন্ত্রাসী কার্য সংঘটনের অপরাধের জন্য।

অনুমোদিত অধ্যাদেশে ‘সাইবার সুরক্ষা’ বলতে ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার, ট্যাবলেট, স্মার্টফোন, ডিজিটাল ওয়্যারলেস, কম্পিউটার সিস্টেম, কম্পিউটার ডাটা, সিগন্যালিং ডাটা, ট্রাফিক ডাটা, ডাটা সেন্টার ও ক্লাউডসহ সাইবার স্পেসে ভৌত অবকাঠামোর সুরক্ষার পাশাপাশি ব্যক্তিগত, প্রাতিষ্ঠানিক, আর্থিক ও ব্যবসায়িক তথ্যের সুরক্ষা, সরকারি-বেসরকারি সফটওয়্যার, এপিআই, কোডিং, সফটওয়্যার অ্যালগরিদম, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল এবং পোর্টাল বা নেটওয়ার্কে সঠিক ও অনুমোদিত প্রবেশাধিকার সীমায় কেবল ব্যক্তিদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করাও বোঝানো হয়েছে।

এছাড়া ব্যক্তির পাশাপাশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এজেন্ট বা টুলের প্রবেশাধিকারও বোঝানো হবে এখানে। অধ্যাদেশে নাগরিকদের সার্বক্ষণিক ইন্টারনেট-প্রাপ্তির অধিকার রাখা হয়েছে।

যেসব বিষয়ে আপত্তি

অধ্যাদেশে বেশ কিছু ভালো দিক থাকলেও কিছু ক্ষেত্রে সংজ্ঞার অস্পষ্টতা থাকার কারণে আগের আইনের মতো ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, যে কোনো বিষয়কে অপমান হিসেবে মনে করতে পারে এমন আশঙ্কায় মানুষ সমালোচনা করতে ভয় পাবে। সেক্ষেত্রে সাংবাদিকদেরও বিপদে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ও পরিচালক ড. বি এম মইনুল হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, এতে অপরাধগুলোকে যথাযথভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়নি। তাছাড়া কোনো বিষয়কে একজন মানুষের মানহানি বলে মনে করা হবে সেটি এখানে পরিষ্কার নয়। আরও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দরকার ছিল। কাজটি কঠিন হলেও যতদূর সম্ভব করতে হবে। আর ভালোভাবে সংজ্ঞায়িত করা না গেলে সেটি এখানে যুক্ত করার কোনো দরকার নেই। এর ফলে মানহানি ও অপমানের মতো বিষয় প্রচারের অভিযোগে মামলা করার ঝুঁকি থাকায় এর অপব্যবহার আগের মতোই হবে।

ড. বি এম মইনুল হোসেন আরও বলেন, ধারা (৮) অনুযায়ী, প্রস্তাবিত এজেন্সির মহাপরিচালক নিজে অথবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুরোধে বিশেষ কোনো তথ্য-উপাত্ত অপসারণ বা ব্লক করার জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) অনুরোধ করতে পারবেন এবং বিটিআরসি উপযুক্ত ক্ষেত্রে তথ্য-উপাত্ত অপসারণ বা ব্লক করতে পারবে। প্রশ্ন হলো, ‘উপযুক্ত ক্ষেত্র’ কীভাবে নির্ধারণ করা হবে? সেটির সংজ্ঞা কী?- প্রশ্ন তোলেন মইনুল হোসেন।

ধারা (১৬) এর উপধারা (২) এ বলা হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোসমূহ পরিবীক্ষণপূর্বক একটি প্রতিবেদন প্রতিবছর কাউন্সিলের কাছে উপস্থাপন করবে এবং মহাপরিচালককে অবহিত করবে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোর জন্য এক বছর অনেক বড় সময়। এগুলোর পরিবীক্ষণ বিভিন্ন পর্যায়ে হওয়া প্রয়োজন। দৈনিক-সাপ্তাহিক নিরীক্ষণ তো থাকবেই, সঙ্গে সঙ্গে সামগ্রিক কিছু মূল্যায়ন একটু ছোট পরিসরে হলেও অন্তত তিন মাস অন্তর অন্তর হওয়া প্রয়োজন।

ধারা (৩৫) এ পরোয়ানা ব্যতিরেকে তল্লাশি, জব্দ ও গ্রেপ্তারের যে অনুমতি দেওয়া আছে, সে তল্লাশি পরিচালনার রিপোর্ট ট্রাইব্যুনালের কাছে দাখিল করার বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু সেটির জন্য কোনো সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি। যেহেতু পরোয়ানা ব্যতিরেকে তল্লাশির মাধ্যমে হেনস্তা করার সুযোগ থাকে, সেহেতু এ ক্ষেত্রে তল্লাশির কারণসহ রিপোর্ট যৌক্তিক সময়সীমার মধ্যে পেশ করার বাধ্যবাধকতা থাকা উচিত।

ধারা (৪৭) এর উপধারা (৩)-এ আছে, ‘বাজেয়াপ্তযোগ্য কোনো সাইবার উপকরণের সহিত যদি কোনো বৈধ সাইবার উপকরণ পাওয়া যায়, তাহা হইলে সেইগুলোও বাজেয়াপ্তযোগ্য হইবে।’

এটির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ড. বি এম মইনুল হোসেন বলেন, এর মাধ্যমে তো পুরো একটি প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা বা উদ্যোগকে কার্যত বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব। বৈধ সাইবার উপকরণ যদি বৈধই হয়, সেগুলো যদি অপরাধ সংঘটনে ব্যবহার করা না হয় বা সম্ভাব্য অপরাধের কারণ না হয়, তাহলে সেগুলো জব্দ করার কোনো কারণ নেই।

অনুমোদিত অধ্যাদেশে যিনি কোনো সাইবার অপরাধের ব্যাপারে তথ্য দিয়ে রাষ্ট্র বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা করবেন, তাকে সুরক্ষা দেওয়ার কোনো মাধ্যম নেই। বিশ্বব্যাপী সাইবার আক্রমণের খুব বড় একটা মাধ্যম হয় পরিবহন ও স্বাস্থ্য খাত, যেটির সঙ্গে অনেক মানুষের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট। গণপরিবহন বা হাসপাতালগুলো সাইবার আক্রমণের লক্ষ্যে পরিণত করা খুব সহজ। সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে এ দুটি খাতসংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে যুক্ত করা জরুরি বলে মনে করেন এই বিশেষজ্ঞ।

বাতিল ৮টি ধারা

আগের আইনের আটটি ধারা বাদ দেওয়া হয়েছে যেগুলো বিভিন্ন মহলে বিতর্ক রয়েছে। এগুলো হলো- মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকা সম্পর্কে বিদ্বেষ, বিভ্রান্তি ও কুৎসামূলক প্রচারণার দণ্ড; পরিচয় প্রতারণা বা ছদ্মবেশ ধারণ; আক্রমণাত্মক, মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শন, তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ, প্রকাশ; অনুমতি ছাড়া পরিচিতি তথ্য সংগ্রহ, ব্যবহার ইত্যাদির দণ্ড; মানহানিকর তথ্য প্রকাশ, প্রচার ইত্যাদি।

যেসব বিষয় সংযোজন হয়েছে

অপরাধের আওতায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে- সাইবার বুলিং, ব্ল্যাককমেইলিং বা অশ্লীল বিষয়বস্তুর প্রকাশসংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ড এতে বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিকস মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে কোনো ব্যক্তিকে অপমান, হয়রানি, ব্ল্যাকমেইল বা হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে কোনো তথ্য, অশ্লীল ভিডিও চিত্র, অডিও ভিজ্যুয়াল চিত্র, স্থিরচিত্র, গ্রাফিক্স বা অন্য কোনো উপায়ে ধারণকৃত বা সম্পাদিত, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা নির্মিত বা সম্পাদিত ও প্রদর্শনযোগ্য এবং যার কোনো শৈল্পিক বা শিক্ষাগত মূল্য নেই, এমন কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ, প্রকাশ বা প্রচার করলে বা হুমকি প্রদান করলে এবং যা আক্রমণাত্মক, ভীতি প্রদর্শন বা ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদাকে ক্ষতি করে, তাহলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ ধরনের অপরাধের জন্য অনধিক দুই বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড প্রযোজ্য হবে।

এ ধরনের অপরাধ যদি কোনো নারী বা ১৮ বছরের নিচে কোনো শিশুর বিরুদ্ধে হয়, তাহলে ৩ বছর ও ২০ লাখ টাকার অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড প্রযোজ্য হবে।

এছাড়া যে কারও মামলা করার সুযোগ বন্ধ করে অনুমোদিত খসড়ায় বলা হয়েছে, সরাসরি সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা তার নিয়োগকৃত ব্যক্তি অথবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য বাদে অন্য কেউ এ আইনের অধীন মামলা করতে পারবেন না। আগের আইনে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা উৎসাহ নিয়ে মামলা করতেন, যা বেশির ভাগই ছিল প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও রাজনৈতিক নেতাদের অবমাননার জন্য।

অনুমোদিত খসড়াটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, নতুন অধ্যাদেশে সাইবার স্পেসে জুয়াখেলার অপরাধ ও দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, জুয়াখেলার জন্য কোনো অ্যাপ, ডিভাইস তৈরি বা খেলায় অংশগ্রহণ বা সহায়তা করলে এবং উৎসাহ দিতে বিজ্ঞাপনে অংশ নিলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ ছাড়া থাকছে সাইবার স্পেসে ধর্মীয় মূল্যবোধ বা অনুভূতিতে আঘাত করে এমন কোনো তথ্য প্রকাশের দণ্ড। এর দায়ে অনধিক দুই বছর কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ লাখ টাকা অথবা উভয় দণ্ড। এখানে সাইবার স্পেসে সংজ্ঞা হিসেবে বলা হয়েছে, সব ধরনের ডিজিটাল নেটওয়ার্কগুলো ভার্চুয়াল জগৎ। পরোয়ানা ছাড়া তল্লাশি, জব্দ ও গ্রেপ্তারের বিধানও থাকছে, যা নিয়ে আগেও সমালোচনা ছিল।

আরও সময় নিয়ে পর্যাপ্ত বিশ্লেষণের দাবি

গত ১৭ ডিসেম্বর ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) অধ্যাদেশটি জারির আগে সংশ্লিষ্টজন কর্তৃক খসড়া পর্যালোচনা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য সরকারকে কমপক্ষে এক মাস সময় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছিলেন, ‘ভিন্নমত দমন ও গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত এবং ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়া প্রস্তুত করা সব নাগরিকের মনে স্বস্তির সঞ্চার করেছে। তিনি বলেন, ‘এই খসড়া পর্যালোচনার জন্য মাত্র তিন কর্মদিবস ওয়েবসাইট উন্মুক্ত করা হয়েছিল, যা শেষ হয়েছে এবং তা ইতিমধ্যে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ এই অধ্যাদেশ সংশ্লিষ্ট অংশীজন কর্তৃক পর্যাপ্ত বিশ্লেষণ অন্তর্ভুক্তিমূলক পর্যালোচনা ব্যতিরেকে জারি করা হলে এর মূল উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করার ঝুঁকি থাকবে।

অধ্যাদেশ অনুমোদনের আগে একটি অংশীজন বৈঠক এবং একটি কর্মশালা করেছেন বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী।

ব্যাপক সমালোচিত ও বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ রহিত করে গত বছরের সেপ্টেম্বরে আওয়ামী লীগ সরকার সাইবার নিরাপত্তা ২০২৩ নামে একটি আইন পাস করে। দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংস্থা ও অধিকারকর্মীরা এটিকে নতুন মোড়কে পুরনো নিবর্তনমূলক ধারাসংবলিত আইন বলে এসেছেন।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) চলতি বছরের এপ্রিলে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পাঁচ বছরের চিত্র নিয়ে কঠিন পরীক্ষা’ নামে একটি গবেষণা প্রকাশ করে। সেখানে ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা ১ হাজার ৪৩৬টি মামলার তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়।

সিজিএস জানায়, অভিযুক্তের মধ্যে ৩২ শতাংশের বেশি রাজনীতিবিদ, ২৯ দশমিক ৪০ শতাংশ সাংবাদিক। অভিযোগকারীর প্রায় ৭৮ শতাংশই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে এবং ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। ৭ নভেম্বর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর আইন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬; ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩-এর অধীন গত আগস্ট পর্যন্ত দেশের ৮টি সাইবার ট্রাইব্যুনালে মোট ৫ হাজার ৮১৮টি মামলা চলেছে। বর্তমানে স্পিচ অফেন্স-সম্পর্কিত মোট ১ হাজার ৩৪০টি মামলা চলমান, যার মধ্যে ৪৬১টি মামলা তদন্তাধীন। ৮৭৯টি মামলা দেশের ৮টি সাইবার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন। এসব মামলার মধ্যে ডিজিটাল মাধ্যমে মুক্তমত প্রকাশের কারণে দায়ের হওয়া মামলাগুলোকে ‘স্পিচ অফেন্স’ এবং কম্পিউটার হ্যাকিং বা অন্য কোনো ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে জালিয়াতিকে ‘কম্পিউটার অফেন্স’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

বর্তমান সরকার স্পিচ অফেন্স-সংক্রান্ত মামলাগুলো দ্রুত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১ হাজার ৩৪০টি স্পিচ অফেন্স-সম্পর্কিত মামলার মধ্যে বিচারাধীন ৮৭৯টি মামলা আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে দ্রুত প্রত্যাহার করা হবে। তদন্তাধীন ৪৬১টি মামলা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের মাধ্যমে দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হবে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto