Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

আতঙ্কের জনপদ মোহাম্মদপুর, লক্ষ্য অপরাধ সাম্রাজ্যের দখল

  • প্রকাশ্যে ছিনতাই-ডাকাতি, অহরহ গোলাগুলি ও বিস্ফোরণ
  • জেনেভা ক্যাম্প ঘিরে মাদকের ‘হাট’
  • ২ মাসে ৯ মৃত্যু, গুলিবিদ্ধ অর্ধশতাধিক
  • আতঙ্কে মোহাম্মদপুর ছাড়ছেন অনেকে

দিনেদুপুরে প্রকাশ্যে ছিনতাই, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ডাকাতি, গোলাগুলি, খুন, দলবাজিসহ নানা অপরাধে এখন আলোচনায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা। পরিস্থিতির উত্তরণে থানা ঘেরাও করে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে এলাকাবাসী, স্থাপন করা হয়েছে সেনা ক্যাম্প। তবে এতকিছুর পরও প্রকাশ্যে চলছে মাদকের কারবার, থেমে নেই ছিনতাই-ডাকাতি। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কে এলাকা ছাড়ছেন অনেকে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে রাজধানীর অন্যতম অপরাধপ্রবণ এলাকা হয়ে ওঠে মোহাম্মদপুর। মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণ ও বাজারসহ নানা খাতের দখল নিতে মরিয়া এই এলাকার বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপ। আর এ জন্য নিজেদের শক্তিমত্তা জানান দিতে প্রায়ই জড়াচ্ছে সংঘর্ষে। প্রদর্শন ও ব্যবহার করছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র।

এছাড়া ফাঁকা সড়কে কখনো সকালে, কখনো সন্ধ্যা বা রাতে এমনকি ভরদুপুরেও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে এই এলাকায়। দোকানে বসে থাকা মানুষদের কুপিয়ে একদল সন্ত্রাসীর অবলীলায় চলে যাওয়ার দৃশ্যও দেখা গেছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সীমাবদ্ধতার সুযোগ নিয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠে মোহাম্মদপুর এলাকায় সক্রিয় সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো।

অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মোহাম্মদপুরকে একটি বাণিজ্যিক এলাকা বলা চলে। সেটা মাদককেন্দ্রিক ও অন্যান্য আরও অনেক খাত নিয়ে। একটা দল দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকায় এই এলাকায় তাদের আধিপত্য রয়েছে। আবার অন্য একটি দল নতুন করে আধিপত্য বিস্তার করতে চাচ্ছে। এ নিয়েই এই এলাকায় সংঘাতের ঘটনা ঘটছে। এতে এলাকার মানুষসহ ব্যবসায়ীরাও আতঙ্কে রয়েছেন।

আর পুলিশ বলছে, মোহাম্মদপুরে জনসংখ্যার আধিক্য থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে তাদের কষ্ট হচ্ছে। এছাড়া এখানে বেশ কয়েকটি অপরাধী গ্রুপ সক্রিয়। আবার জেনেভা ক্যাম্পকেন্দ্রিক মাদক কারবার সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ।

মোহাম্মদপুরের সংঘাতময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নতুন করে এই এলাকায় সেনা ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। তবুও গতকাল রবিবারও মোড়ে মোড়ে দেখা গেছে মাদক কারবারিদের আনাগোনা। গত শনিবার রাতে জেনেভা ক্যাম্প এলাকায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে শিশুসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। রাতে এমন ঘটনা ঘটলেও সকাল হতেই আবার শুরু হয় মাদক কেনাবেচা। রাতে যেখানে গোলাগুলি হয়েছে, যৌথ বাহিনীর অভিযানে ৪৫ জনকে আটক করা হয়েছে সেখানেই দিনের বেলা ফের আগের চিত্র দেখা গেছে। এই এলাকায় আপন মনে সড়কে হেঁটে চললেও চারদিক থেকে একই বাক্য ভেসে আসে। আর তা হলো ‘কী লাগবে বড় ভাই’। বড় ভাইদের আপ্যায়নে যেন একটুও কমতি নেই মোহাম্মদপুরে।

রবিবার (২৭ অক্টোবর) সরেজমিনে মোহাম্মদপুরের কলেজ গেট থেকে গজনবী সড়ক ধরে জেনেভা ক্যাম্পের দিকে যেতে সবকিছু স্বাভাবিক দেখা গেলেও সামনে যেতেই বাধে বিপত্তি। গজনবী সড়ক থেকে হাতের ডানদিকে জেনেভা ক্যাম্পের সড়কে প্রবেশ করতেই দেখা মেলে প্রাপ্তবয়স্ক বিহারি যুবকদের আনাগোনা। নির্দিষ্ট কিছু স্থানে দাঁড়িয়ে আছে তারা। যুবক বয়সী ছেলেদের দেখা পেলেই উচ্চৈঃস্বরে বলে উঠছে ‘কী লাগবে বড় ভাই’। তাদের এই ডাকে কিছু যুবককে সাড়া দিতেও দেখা গেছে। এছাড়া রিকশাচালক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এখানে আসছে।

ভ্যানে সবজি বিক্রেতার কাছে ‘কী লাগবে বড় ভাই’ এমন ভাবে ডাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এরা সবাই গাঁজা বিক্রি করছে।’ শুধুই কি গাঁজা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না, এদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সব ধরনের নেশা তারা ম্যানেজ করে দিতে পারে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দা দেশ রূপান্তরকে বলেন, এখানে বিহারি ক্যাম্পের অধিকাংশই গাঁজা-ইয়াবা বিক্রেতা। তাদের পেশাই মাদক বিক্রি। এখানে তাদের কেউ কিছু বলে না। তারা এখানকার সরকার। কেউ তাদের কিছু বললে তাকে মেরে ফেলবে। থানা পুলিশ কেউ তাদের কিছুই করতে পারে না। এমন অভিযোগ একজনের নয়, এলাকাবাসীর সবার। তবে জেনেভা ক্যাম্পের ভেতরের বিষয় নিয়ে মোহাম্মদপুরের সবাই যেন মুখ খুলতে নারাজ।  নাম প্রকাশের তো প্রশ্নই আসে না।

এদিকে থানায় লোকবল সংকটে এমন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পুলিশকে হিমশিম খেতে হচ্ছে উল্লেখ করে মোহাম্মদপুর থানার ওসি ইফতেখার হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এ ঘটনায় আমরা আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছি। তবে, আমাদের থানা হিসেবে লোকবল কম থাকায় কিছুটা হিমশিম খেতে হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে সাংসদ জাহাঙ্গীর কবির নানক জেনেভা ক্যাম্পের মাদক কারবারিদের মধ্যে রাইফেল, ককটেল বোমাসহ নানা ধরনের ভারী অস্ত্র দেন। শেখ হাসিনার পতনের পর নানকের দেওয়া সেসব অবৈধ ভারী অস্ত্রের সঙ্গে গত ৫ আগস্ট মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানা থেকে লুট করা অস্ত্র দিয়ে গত দুই মাস মাদক কারবারিরা ভয়াবহ সংঘর্ষ চালায়।

গত দুই মাসে মোহাম্মদপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ৯জন খুন হয়েছে এবং অর্ধশতাধিক গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে। ভয়াবহ এই সংঘাতের পেছনে ক্যাম্পের শীর্ষ মাদক কারবারি সোহেল ওরফে বুনিয়া সোহেল, গালকাটা মনু, চুয়া সেলিম, আকরাম, শাহ আলম, পিচ্চি রাজা ও কলিম জাম্বুর জড়িত বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আলোচিত কয়েকটি ঘটনা

গত শনিবার জেনেভা ক্যাম্পে মাদক কারবারিদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গোলাগুলিতে শিশুসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। গত শুক্রবার রাতে বসিলায় একটি মিনি সুপারশপে অস্ত্রধারীদের ঢুকে ডাকাতির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

একই রাতে ঢাকা উদ্যান এলাকায় ‘গণ ছিনতাইকারী’ দুই দলের মধ্যে সশস্ত্র মহড়ার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। গত ২০ অক্টোবর মোহাম্মদীয়া হাউজিং লিমিটেড এলাকার সড়কে ‘নেসলে’ কোম্পানির একটি গাড়ি থামিয়ে ছুরি-চাপাতির মুখে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও ১৭ হাজার টাকার চেক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।

গত ১৮ অক্টোবর বাজার কমিটির দ্বন্দ্ব নিয়ে শিয়া মসজিদ কাঁচাবাজারের সভাপতি আবুল হোসেন ও তার ভাই মাহবুব হোসেনকে গুলির ঘটনা ঘটে। গত ১৭ অক্টোবর বসিলায় চোর সন্দেহে অটোরিকশা চালক শাহরিয়ার আশিককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। গত ১৬ অক্টোবর জেনেভা ক্যাম্পে আবারও গুলি, নিহত হন শাহনেওয়াজ।

গত ১০ অক্টোবর চুরির সময় আটকের জেরে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে ঢাকা উদ্যানের নৈশপ্রহরী রবিউল ইসলামকে হত্যা করা হয়। গত ২০ সেপ্টেম্বর সাদেক খান আড়তের কাছে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। নিহত হয় নাসির ও মুন্না।

গত ৪ সেপ্টেম্বর জেনেভা ক্যাম্পে আবার মাদকের দ্বন্দ্বে গুলিতে নিহত হয় রিকশাচালক সনু। গত ৬ আগস্ট জেনেভা ক্যাম্পে মাদকের দ্বন্দ্বে গুলিতে নিহত হয় শাহেন শাহ।

একের পর এক এমন অপরাধের ঘটনায় ক্ষুব্ধ মোহাম্মদপুরের একদল মানুষ গত শনিবার বিকেলে থানায় গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেয়। এর মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে থানায় অবস্থানের ঘোষণাও দেওয়া হয়।

এ দাবিকে যৌক্তিক বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ জিয়াউল হক দেশ রূপান্তরকে বলেন, মোহাম্মদপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আমরা স্থানীয়দেরও সহায়তা চেয়েছি। ইতিমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় বাড়তি ফোর্স মোতায়েনসহ টহল কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে।

মোহাম্মদপুর হঠাৎ কেন অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, এখানে আছে আটকেপড়া পাকিস্তানিদের জেনেভা ক্যাম্প। শেখ হাসিনার পতনের পর থানা ও গণভবন থেকে লুটের অস্ত্র জেনেভা ক্যাম্পের অপরাধীদের হাতে যাওয়ার তথ্য রয়েছে। এসব অস্ত্র হাতে পেয়ে সেখানকার মাদক কারবারিদের গ্রুপগুলো নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে জড়িয়েছে। জেনেভা ক্যাম্প ছাড়াও ওই থানা এলাকার অপরাধপ্রবণ এলাকা হলো বেড়িবাঁধ সংলগ্ন বসিলা, রায়েরবাজার, ঢাকা উদ্যান, চন্দ্রিমা উদ্যান এলাকা। এসব এলাকায় যানবাহন থেকে চাঁদাবাজি, ফুটপাত দখল ও চাঁদাবাজি এবং মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে নিজেদের মধ্যে সংঘাতে জড়াচ্ছে অপরাধীদের চক্রগুলো।

মোহাম্মদপুরের সংঘর্ষের বিষয়ে বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সদস্য ও দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত জিয়াউর রহমান জিয়া দেশ রূপান্তরকে বলেন, অপরাধীরা সব সময়ই অপরাধী। আমাদের দলে কোনো অপরাধীর জায়গা নেই। মোহাম্মদপুরের ঘটনায় যে সব বিএনপি নেতা জড়িত রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ওই এলাকার বিএনপি নেতাদের বলা হয়েছে, যে কোনো বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে সবাই সোচ্চার ও মানুষের বিপদে এগিয়ে আসতে হবে। নতুন করে আধিপত্য বিস্তার করে দলে কেউ স্থান করতে পারবে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদুল হক দেশ রূপান্তরকে বলেন, জেনেভা ক্যাম্পসহ মোহাম্মদপুর এলাকা আগে থেকেই অপরাধপ্রবণ। রাজনৈতিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই কারাগার থেকে বের হয়ে পূর্বের অবস্থানে ফিরে যেতে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে। আবার পুলিশ সক্রিয় থাকলেও অতীতের ঘটনায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে পারছে না। এই অপরাধ কার্যক্রম থেকে বের হতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেমন ভূমিকা প্রয়োজন ঠিক তেমন স্থানীয়দেরও ভূমিকা রেখে কাজ করতে হবে।

মোহাম্মদপুরের প্রতি হাউজিংয়ে সেনা ক্যাম্প গঠন

এই এলাকার অপরাধ রোধে মোহাম্মদপুরের প্রতিটি হাউজিংয়ে সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্প বসানো হচ্ছে বলে জানান ২৩ ইস্ট বেঙ্গলের উপ-অধিনায়ক মেজর নাজিম আহমেদ। গত শনিবার রাত ১২টায় বসিলা সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, মোহাম্মদপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন হাউজিং এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্প করা হবে। হাউজিং এলাকার মধ্যে একটি করে অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করা হবে। যেখান থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা পুরো এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করবেন। এছাড়াও এলাকাবাসীকে আতঙ্কিত না হয়ে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানানো হয়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto