আন্দোলন দমন, নিহত-আহতের বিস্তারিত প্রকাশ করুন: জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশন
দমন-পীড়নের ঘটনার নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বানও জানিয়েছেন হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক।
সম্প্রতি বাংলাদেশে সহিংসতার পর আন্দোলনকারীদের ওপর ‘ভয়াবহ দমন-পীড়নের‘ বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক। তিনি এসব ঘটনার নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বানও জানিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানান তিনি।
বিবৃতিতে জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার বলেন, ‘আমরা বুঝতে পেরেছি যে অনেক মানুষ সরকার সংশ্লিষ্ট একটি গোষ্ঠীর সহিংস হামলার শিকার হয়েছে এবং তাদের রক্ষা করার জন্য কোনো চেষ্টাই চালানো হয়নি।’
বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত সপ্তাহে সহিংসতায় কয়েকজন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১৯৩ জন নিহত হয়েছে বলে এএফপির একটি হিসাবে দেখা গেছে।
পরিস্থিতি সামলাতে সরকার দেশব্যাপী ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়, কারফিউ জারি ও সেনা মোতায়েন করে।
বিবৃতিতে সহিংসতায় আহত এক হাজারের বেশি মানুষের চিকিৎসা না পাওয়া এবং অনেকের নিখোঁজ থাকার কথা উল্লেখ করে জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক শোক প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অন্তত দুই জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন। বিরোধী দলের সদস্যসহ কয়েকশ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।’
‘যারা নিহত, আহত বা আটক হয়েছে তাদের পরিবারের জন্য সরকারকে অবশ্যই সবকিছুর বিস্তারিত বিবরণ দিতে হবে,’ বলা হয় এতে।
এছাড়া, সাংবাদিকসহ দেশের নাগরিকদের অবাধ যোগাযোগ নিশ্চিত করতে সরকারকে ইন্টারনেট সেবা পুরোপুরি চালুরও আহ্বান জানান ভলকার তুর্ক।
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ সময় ধরে ইচ্ছা করে ইন্টারনেট বন্ধ করার মতো স্থূলবুদ্ধির কাজ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন, যা মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারের মতো রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর মাধ্যমে আরও বিস্তৃতভাবে সংগঠন ও চলাচলের স্বাধীনতা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার অধিকার এবং বেশ কয়েকটি অর্থনৈতিক অধিকারের লঙ্ঘন হয়েছে।’
‘ইন্টারনেট বন্ধ করার মাধ্যমে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জনগণ কম জানতে পারছে এবং এ কারণে কৃতকর্মের জন্য দায়মুক্তির ঝুঁকি তৈরি হতে পারে,’ বলা হয় বিবৃতিতে।