Hot

আপিল বিভাগের স্থিতাবস্থা আদেশ শিক্ষার্থীদের ‘প্রত্যাখ্যান’, অবরোধে ঢাকাসহ অচলাবস্থায় দেশ

সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে ‘অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক’ কোটা বাতিলের এক দফা দাবিতে আন্দোলনে রাজধানীসহ সারাদেশ অবরোধ কর্মসূচিতে সারাদেশের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করা দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি এবং কোনো ট্রেন প্রবেশ করতে পারেনি। ঢাকা মহানগরের ২০ স্থানে ‘বাংলা ব্লকেড’ করে শিক্ষার্থীরা দিনভর বিক্ষোভ ও অবস্থান গ্রহণ করায় রাজধানী ‘স্থবির’ হয়ে পড়ে। দাবি আদায়ে তৃতীয় দিন রাজধানীসহ সারা দেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি আন্দোলনকারীরা সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ মোড় অবরোধ করেন।

রাজপথের অন্তত ২০টি স্থান তারা অবরুদ্ধ করায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একমাত্র মেট্রোরেল চললেও যাত্রীর চাপে সেটাও বন্ধ রাখা হয়। এদিকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর আপিল বিভাগ এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করলেও আপিল বিভাগের এই আদেশ প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলন করে কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। আজ বৃহস্পতিবার অবরোধ শুরু বিকেল সাড়ে ৩টায়। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে এই কর্মসূচি পালিত হবে। শাহবাগ মোড়ে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, আমরা দাবি করেছি কোটা সংস্কারের বিষয়টি সরকারের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সমাধান করার। কোটা সংস্কার আমাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি সমাধানের জন্য জাতীয় সংসদে আইন তুলে তা পাস করার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব। এটা আদালতের কোনো বিষয় নয়।

কোটা আন্দোলনে কার্যত সারাদেশ স্থবির হয়ে পড়ে। অবরোধ করায় রাজধানী ঢাকামুখী ঢাকা টু চট্টগ্রাম মহাসড়কে ২০ কিলোমিটার, ঢাকা টু রংপুর মহাসড়কে ১৫ কিলোমিটার, ঢাকা টু মানিকগঞ্জ মহাসড়কে কয়েক কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা রাজধানীর শাহবাগ ও সায়েন্স ল্যাব মোড় ব্লক করেন। পরে একে একে কাঁটাবন, নীলক্ষেত, ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, বাংলামোটর, কাওরানবাজার, ফার্মগেট, বিজয় সরণি, মহাখালী, চানখাঁরপুল, বঙ্গবাজার, শিক্ষা চত্বর, মৎস্য ভবন, জিপিও, গুলিস্তান, রামপুরা ব্রিজ, আগারগাঁও, হাতির ঝিলের মোড়ে ও মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারসহ ২০টির বেশি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে ‘ব্লকেড’ তৈরি করেন। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ফ্লাইওভার ও মগবাজার-সাতরাস্তা ফ্লাইওভারও ব্লক করে দেন আন্দোলনকারীরা। মহাখালী ও কারওয়ানবাজার রেলক্রসিংয়ে কাঠের গুঁড়ি ফেলে রেলপথ বন্ধ করে দেন। এতে ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ ৬ ঘণ্টা বন্ধ থাকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা রাহাদ উদ্দীন জানান, তৃতীয় দিনের মতো ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেছে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা। পূর্বঘোষিত এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার রাজধানীর শাহবাগ, মিন্টু রোড, বাংলামোটর, কারওয়ানবাজার, ফার্মগেট, রামপুরা, বাড্ডা, সায়েন্স ল্যাব, নীলক্ষেত মোড়, চানখারপুল ও গুলিস্তান জিরো পয়েন্টসহ রাজধানীর জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক মোড় অবরোধ করেছেন আন্দোলনকারীরা। গতকাল বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এ অবরোধ। ফলে এদিন ঢাকা শহরের একটা বড় অংশে যানচলাচল থমকে ছিল।

বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি শেষে আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে অন্যতম সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ বলেন, আমাদের বৃহস্পতিবার কর্মসূচি হিসেবে বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে সারাদেশের শিক্ষার্থীরা বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করবে। সড়ক ও রেলপথগুলো এই কর্মসূচির আওতায় থাকবে। আমরা নির্বাহী বিভাগকে বলতে চাই অতি দ্রুত আমাদের দাবিটি মেনে নেন, যাতে আমরা পড়ার টেবিলে বসতে পারি। আসিফ আরো বলেন, ২০১৮ সালে যে পরিপত্র দেওয়া হয়েছিল হাইকোর্ট সেটি বাতিল করেছে। আমরা এই আইনের প্রক্রিয়ায় হাইকোর্টের বারান্দায় যেতে চাই না। আমরা আমাদের রুটিন কার্যক্রম চালিয়ে যেতে চাই। যতদিন না আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে ততদিন পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমাদের যে এক দফা দাবি জানিয়েছি সে ব্যাপারে সরকারের নির্বাহী বিভাগ থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য আসতে হবে। একটি কমিশন গঠন করে এই কোটা সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হবে।

সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা বাতিল সংক্রান্ত ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালসহ ৪ দফা দাবিতে গত এক সপ্তাহ যাবত আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে এ আন্দোলন করছেন তারা। তবে গত রোববার (৭ জুলাই) থেকে নতুন করে ৪ দফার পরিবর্তে এক দফা দাবিতে সারাদেশে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচির নাম দিয়েছেন ‘বাংলা ব্লকেড’।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলমান অবস্থায় গত মঙ্গলবার ২০১৮ সালের সরকারের জারিকৃত পরিপত্র পুনর্বহাল করতে আপিল বিভাগে রিট করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। ঢাবির এ দুই শিক্ষার্থী ও রাষ্ট্রপক্ষের রিটের প্রেক্ষিতে গতকাল উচ্চ আদালতের রায় এক মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করে। ফলে আগামী এক মাস সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা অকার্যকর থাকবে। তবে আপিল বিভাগের এমন রায়ে সন্তুষ্ট নন শিক্ষার্থীরা। গতকাল সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলছেন আমরা কোনো ঝুলন্ত রায় চাইনি। আমরা এর চূড়ান্ত সমাধান চেয়েছি। তাছাড়া আমাদের আন্দোলন আদালতকেন্দ্রিক নয়। আমাদের আন্দোলনটা নির্বাহী বিভাগের প্রতি। আমরা চাই অতি দ্রুত সরকারি চাকরিতে সকল গ্রেডে সকল ধরনের অযৌক্তিক বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংসদে আইন পাস করতে হবে।

পূর্বঘোষিত সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ এর অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার সকাল থেকেই রাজধানীর শাহবাগ, বাংলামোটর, কারওয়ানবাজার, মিন্টু রোড, ফার্মগেট, সায়েন্স ল্যাব, মৎস্য ভবন মোড়, পল্টন, জিরো পয়েন্ট, নীলক্ষেত, চানখারপুলসহ প্রায় পুরো ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সব সড়ক মোড় অবরোধ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), ঢাকা কলেজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা সিটি কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, তিতুমীর কলেজসহ আশপাশের বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সকাল ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে জড়ো হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী। অতঃপর বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন, হল পাড়া, মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ প্রদক্ষিণ করে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা। চানখারপুল মোড় ও মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার মোড় অবরোধ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হল, ড. মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ হল ও ফজলুল হক হলের শিক্ষার্থীরা। ফলে ঢাকার সাথে আশপাশ জেলার সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হয়।

দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে ফার্মগেট অবরোধ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে ৪টা ৫০ মিনিটে ব্লকেড কর্মসূচি শেষে খুলে দেওয়া হয় ফার্মগেটের সড়ক। সরেজমিন দেখা যায়, ব্লকেড কর্মসূচি শেষ হতেই ফার্মগেট, বিজয় সরণি, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের রাস্তা খুলে দেওয়া হয়।

অবরোধ কর্মসূচির বৃহৎ অংশ ছিল রাজধানীর শাহবাগ চত্বরে। কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে সেøাগানে, গানে মুখরিত হয় রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এই পয়েন্ট। আন্দোলনের সমন্বয়করাও ছিলেন এই এলাকায়। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী শাহবাগ মোড় অবরোধ করে আশপাশের বিভিন্ন মোড়ে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা আপিল বিভাগের আদেশ প্রত্যাখ্যান করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমরা জোর নিবেদন জানাই, যেন নির্বাহী আদেশে এটি বাতিল করা হয়। আপনারা অনতিবিলম্বে ছাত্রসমাজের এক দফা দাবি মেনে নিন। আমরা পড়ার টেবিলে ফিরতে চাই। আমাদের পড়ার টেবিলে ফেরার সুযোগ দিন। আমরা তিন দিন ধরে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি দিয়ে সারা দেশ অচল করে দিয়েছি। তাই বলতে চাই আমাদের দাবি মেনে নিন। আর যদি আমাদের দাবি মানা না হয়, তাহলে আমরা আরো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।

গতকাল বেশ কয়েকটি অবরোধ স্পট ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে জাতীয় পতাকা। মুখে মুখে সেøাগান আর গান। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’Ñ ইত্যাদি সেøাগান দিতে দেখা যায়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হাসান রাকিব জানান, ‘সকাল-সন্ধ্যা বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির আওতায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। এছাড়া হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর আপিল বিভাগের স্থিতাবস্থা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। গতকাল সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে সড়কের উভয় লেনে যানজটের সৃষ্টি হয়। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

এদিকে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ইস্যুতে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর আপিল বিভাগের স্থিতাবস্থা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জাবি শিক্ষার্থীরা। দুপুর সাড়ে ১২টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফ সোহেল এ ঘোষণা দেন।

এছাড়া কোটা সংস্কারের দাবিতে অবরোধস্থলে একাটি প্রতিবাদী পথনাটক ‘একটি নন ফিকশন’ মঞ্চস্থ করেন শিক্ষার্থীরা। পথনাটকটি জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের (টিএসসি) ১১৪তম পরিবেশনা। এই নাটকের রচনা ও নির্দেশনায় ছিলেন মাহফুজুল আলম মাসুম। পথনাটকে দেশের ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা, নিয়োগ বাণিজ্য ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

অন্যদিকে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর মোহাম্মদ আলমগীর কবীর শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। তবে কোটা সংস্কারের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে অবরোধ তুলে নিলেও নতুন কর্মসূচির ব্যাপারে কিছু জানাননি আন্দোলনকারীরা। পরবর্তীতে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে গণমাধ্যমকে জানান তারা।

এদিকে শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছেন বিশ^বিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন প্রফেসর মোজামে¥ল হক, বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. শামীম হোসেন ও পাবনার বাসিন্দা পথচারী দুলাল হোসেন। সহকারী অধ্যাপক মো. শামীম হোসেন বলেন, যেসব জায়গায় মেধা, মনন ও চিন্তার প্রয়োজন আছে সেসব জায়গায় মেধার মূল্যায়ন করতে হবে। মেধার জায়গায় কোটা দেওয়া অর্থ রাষ্ট্রের ক্ষতি করা। কিন্তু আজকে কোটা সমস্যার সাথে যোগ হয়েছে প্রশ্ন ফাঁস যেটা একটা দেশ ও জাতিকে ধ্বংস করে দেয়। চাকরিতে মেধার যথাযথ মূল্যায়ন, প্রশ্নফাঁস এবং দুর্নীতি বন্ধ না করে কোনোভাবেই একটা দেশকে উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছানো সম্ভব না।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আকিজ মাহমুদ জানান, কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ ও শহরে টাইগার পাস এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান নিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও চবি অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম স্টেশন নিকটস্থ দেওয়ানহাটে অবস্থান নেন তারা। ফলে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন কার্যত পুরো বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার মনিরুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলনের কারণে চট্টগ্রামে ৫টি ট্রেন আটকা পড়েছে। ৭০৪ নম্বর মহানগর প্রভাতি ফৌজদারহাটে, ৮১৬ নম্বর পর্যটক এক্সপ্রেস পাহাড়তলীতে, ৮১৩ নম্বর কক্সবাজার এক্সপ্রেস ষোলশহরে এবং ৭২১ নম্বর মহানগর এক্সপ্রেস ও ৭০৩ নম্বর মহানগর গোধূলি চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ডকে।

তিনি আরো বলেন, ৫টি ট্রেন আটকা পড়ায় ট্রেনের শিডিউলে ব্যাপক বিপর্যয় ঘটে। এতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার যাত্রী দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। তাছাড়া, ঢাকার ট্রেনগুলোও বিভিন্ন জায়গায় আটকা পড়েছে। যার কারণে শিডিউল বিপর্যয় আরো বাড়তে পারে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শাহজালাল ইসলাম তুহিন জানান, ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের সাথে একাত্মতা পোষণ করে বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেন। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন রাস্তায় অবস্থান নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস-সংলগ্ন বিহাস মোড়ে অবস্থান নেন।

এতে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। তবে অবরোধ চলাকালে শিক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্স ও রোগী বহনকারী ইজিবাইক চলাচলের ব্যবস্থা করে দেন। এর আগে, সকাল ১১টার দিকে সকল হল থেকে প্যারিস রোডে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। পরে এক বিশাল মিছিল নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক আমান উল্লাহ খান বলেন, আমরা সারা বাংলাদেশের সাথে একাত্মতা পোষণ করে আজকে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছি। কোটা সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত সারাদেশের সাথে একাত্মতা পোষণ করে আমাদের আন্দোলনও চলমান থাকবে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাকিব রিফাত জানান, দেশব্যাপী বাংলা ব্লকেড কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বেলা ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের সামনে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। এতে মহাসড়ক স্থবির হয়ে পড়ে। উভয় পাশে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ক্যাম্পাসের বটতলায় বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে তারা কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কে অবস্থান নেন। মহাসড়কের ওপর অবস্থানকালীন বিভিন্ন প্রতিবাদী গান, নাটিকা ও কবিতা আবৃত্তি করতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হাবিবুর রহমান জানান, চতুর্থ দিনের মতো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। এতে রাস্তার দু’পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এসময় বিক্ষোভ মিছিল থেকে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।

এদিকে অবরোধের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উভয় পাশে যানবাহনের দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। তবে রোগী বহনকারী গাড়ি ও জরুরি সেবার গাড়ি ছেড়ে দিতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের।

বরিশাল ব্যুরো জানায়, বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা, বরিশাল-ভোলা-চট্টগ্রাম, বরিশাল-কুয়াকাটা ও বরিশাল-খুলনা জাতীয় মহাসড়কগুলোতে অবস্থান নিয়ে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, নগরীর নবগ্রাম রোড-চৌমহনী এলাকায় সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের এবং দুপুর থেকে নগরীর নথুল্লাবাদে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় সরকারি বিএম কলেজ শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়ে অবরোধ কমর্সূচি পালন করেন।

বরিশাল মহানগর পুলিশের একাধিক টিম এসব অবরোধ স্থলে অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। বন্দর থানার ওসি আব্দুর রহমান মুকুল জানান, ‘সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে ব্লকেড কর্মসূচি পালন করায় বরিশাল-কুয়াকাটা ও বরিশাল-ভোলা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।’ এর আগে ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবন থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাস ঘুরে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে এসে অবরোধ শুরু করে।

মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার ওসি এ টি এম আরিচুল হক জানান, ‘নগরীর চৌমাথা এলাকায় সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের শিক্ষার্থীরা অবরোধকালে সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। তবে ছাত্ররা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন।’ নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে অবস্থান নেয়া সরকারি বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা অবরোধকালে সড়ক দিয়ে কোনো রিকশাও চলাচল করতে দেননি। এসময় কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে দেশের সকল রুটের বাস চলাচল বন্ধ ছিল।

স্টাফ রিপোর্টার, মাদারীপুর থেকে জানান, সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন মাদারীপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরে তারা কলেজ ক্যাম্পাসে দীর্ঘ সময় অবস্থান কর্মসূচি করে কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে স্লোগান দেন। পূর্ব ঘোষণা মোতাবেক গতকাল সকাল ১০টার দিকে মাদারীপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে সকাল ১১টার দিকে মাদারীপুর-শরীয়তপুর সড়কের ডিসি ব্রিজ এলাকায় সড়কের ওপর অবস্থান নিয়ে সকল ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেন। তারা প্রায় এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে কোটাবিরোধী স্লোগান দেন। এ সময় রাস্তার দু’পাশে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সদর থানা পুলিশ এসে শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করলে অবরোধ তুলে নেয়া হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অন্যতম সংগঠক মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘দাবি আদায় না হলে আরো কঠোর কর্মসূচি দিলে আমরা মাদারীপুর জেলা থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অংশ নেবো।
পাবনা জেলা সংবাদদাতা জানান, মহাসড়ক অবরোধ করে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় সেখানে অবস্থান নিয়ে কোটা বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে অবরোধের কারণে ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। পাবনা সদর থানার ওসি রওশন আলী বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা জানান, আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) ক্যাম্পাস। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা গতকাল বেলা ১১টায় পবিপ্রবি’র প্রধান ফটকে এবং বেলা ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত পটুয়াখালী-ঢাকা মহাসড়কের লেবুখালীর পাগলায় পায়রা সেতুর টোলপ্লাজায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এ সময় বাউফল-দুমকি-বরিশাল ও কুয়াকাটা-ঢাকাসহ সকল রুটের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। টানা দু’ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধে উভয় দিকের কয়েকশ’ অভ্যন্তরীণ রুট ও দূরপাল্লার পরিবহন বাস আটকে দেন বিক্ষোভকারীরা। রোগী পরিবহনের অ্যাম্বুলেন্স ও সেনা ক্যাম্পের স্কুলবাস ছাড়া সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় বিভিন্ন রুটের শত শত যাত্রী চরম দুর্ভোগের শিকার হয়।

অপরদিকে সার্বজনীন পেনশন নীতিমালা বাতিলসহ ৭ দফা দাবিতে পবিপ্রবি’র শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারী পরিষদের ব্যানারে লাগাতার কর্মবিরতির দশম দিনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। প্রশাসনিক ভবনের সামনে কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিষদ ও অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বে পৃথক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. জেহাদ পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মো. আসাদুজ্জামান মিয়া, কর্মকর্তা পরিষদ সভাপতি কৃষিবিদ মো. সাইদুর রহমান জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ মো. ওয়াজকুরুনী প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এ উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের কলেজ গেইট, কালিবাড়ি মোড়, টি এ রোডসহ প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে শিক্ষার্থীরা সেখানে অবস্থান কর্মসূচি করেন।

এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সমন্বয়কারী ফাহিম মুনতাসির, সানিউর রহমান, আইরিন মৃধা, প্রহর আচার্য, সোস্মিতা দাসসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, ফরিদপুরে বৈষম্যমূলক কোটা পুনর্বহালের রায় বাতিল এবং সরকারি চাকুরীর সকল গ্রেডে কোটা সংস্কারের দাবিতে ‘বাংলা অবরোধ’ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। গতকাল সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ ফরিদপুর জেলা শাখার উদ্যোগে উক্ত কর্মসূচি পালন করা হয়।

ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অনার্স ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. আশরাফ শেখ এর সভাপতিত্বে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে ফরিদপুর পৌর সুপার মার্কেটের সামনের রাস্তা পর্যন্ত ‘বাংলা অবরোধ’ পালিত হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি আবরার নাদিম ইতু, ফরিদপুর জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সদস্য মো. আরাফাত, রাজেন্দ্র কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জনি বিশ্বাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী প্রত্যুষ কর্মকার, হাবিবুর রহমান ফাহিম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ দাশসহ স্থানীয় বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা।

দুমকি (পটুয়াখালী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (প্রবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। এতে সড়কের উভয় দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল বেলা ১১টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত দুমকির লেবুখালী-বগা মহাসড়কে ও পরে ২টা পর্যন্ত লেবুখালি পায়রা সেতুর টোল প্লাজায় ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে পটুয়াখালী, কুয়াকাটা, বাউফল, গলাচিপা, দশমিনা চলাচল করা যানবাহন ও যাত্রীরা আটকা পড়ে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button