USA

আমেরিকানদের হত্যায় জড়িত অভিবাসীদের মৃত্যুদণ্ড চান ট্রাম্প

অভিবাসীদের বিপজ্জনক অপরাধী বলে উল্লেখ করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে তিনি আমেরিকার নাগরিক এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের হত্যাকারী অভিবাসীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোর অরোরায় এক নির্বাচনি সমাবেশে তিনি এ আহ্বান জানান।

ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার নির্বাচনি প্রচারে বেশি বেশি অভিবাসনবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন। শুক্রবার রাতেও তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসীদের নিয়ে সেই মিথ্যা আর বিভ্রান্তিকর বক্তব্যেরই পুনরাবৃত্তি করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি মার্কিন জনতাকে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। 

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘যেসব অভিবাসী আমেরিকার নাগরিক বা আইন প্রয়োগকারীদের হত্যা করেছেন, আমি তাদের ফাঁসির সাজা দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’ আমেরিকায় আসা অভিবাসীদের ‘আগ্রাসনকারী’ হিসাবে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, সারা বিশ্বজুড়ে আমেরিকা এখন অভিবাসীদের দখলকারী আমেরিকা বলে পরিচিত হচ্ছে। 

এবারের নির্বাচনে জয় লাভ করলে প্রথম দিনই তিনি অভিবাসন নিয়ে ‘গণ বহিষ্কারের’ মতো কঠোর নীতি বাস্তবায়নের ইঙ্গিত দিয়েছেন। ট্রাম্প বলেন, কলোরাডোর বাসিন্দাসহ সারা দেশের সবাইকে আমি প্রতিশ্রুতি দিতে চাই যে, ২০২৪ সালের ৫ নভেম্বর হবে আমেরিকার জন্য স্বাধীনতা দিবস। তিনি অরোরাসহ অন্যান্য শহরকে অভিবাসীদের কবল থেকে মুক্ত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে আমেরিকার ইতিহাসে আমরা সবচেয়ে বড় অভিযান শুরু করব। আমরা সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে অবৈধ অভিবাসীদের আমাদের দেশে আসা বন্ধ করে দেব। এভাবেই আমরা আমাদের ভূখ- রক্ষা করব।   

ভেনেজুয়েলাভিত্তিক অপরাধী চক্রে গ্যাং ট্রেন ডে আরাগুয়ার সদস্যদের পোস্টারের সামনে দাঁড়িয়ে ট্রাম্প বলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তিনি অপরাধী চক্রের সদস্যদের দমনে ‘অপারেশন অরোরা’ নামে একটি অভিযান শুরু করবেন। এ সমাবেশে তিনি অভিবাসীদের নিয়ে বর্ণবাদী এবং বৈষম্যমূলক মন্তব্যও করেন।

তিনি বলেন, অভিবাসীরা রোগের জীবাণু বহন করে। তারা অসুস্থ দুর্বল হয়েই আমাদের দেশে আসছে। সংক্রামক রোগ নিয়ে এসে তারা আমাদের দেশে সংক্রমণ ছড়ায়। 

এর আগে নারী ও শিশুদের পাচার করে অনৈতিককর্মে বাধ্য করাসহ কিছু গুরুতর অপরাধের সাজা হিসাবেও তিনি ফাঁসির বিধান রাখার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। অলাভজনক সংগঠন মৃত্যুদণ্ডের তথ্যকেন্দ্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় অর্ধেক অঙ্গরাজ্যে মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ। তবে কেন্দ্রীয়ভাবে এ সাজা দেওয়ার বিধান রয়েছে।

আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস। অভিবাসীবিরোধী কথাবার্তা বা বক্তব্যের জন্য এরই মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন ট্রাম্প।

ট্রাম্পের এ প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাইলে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি কমলা হ্যারিসের নির্বাচনি প্রচারশিবির। কমলা হ্যারিস নির্বাচনে প্রার্থী মনোনীত হওয়ার পর থেকে সীমান্ত নিরাপত্তার বিষয়ে কঠোর অবস্থান ধরে রেখেছেন। এ বছরের শুরুর দিকে কংগ্রেসে একটি দ্বিপক্ষীয় সীমান্ত নিরাপত্তা চুক্তি রুখে দিতে সহায়তার জন্য ট্রাম্পকে দোষারোপ করেছেন কমলা।

একটি মতামত জরিপে দেখা গেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটারদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে অভিবাসননীতি। অনেক ভোটারই মনে করছেন, ট্রাম্পই এ সমস্যা সমাধানে সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button