আয়নাঘর, ২০১৩ সালে হেফাজতের ওপর হামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন জিয়াউল: দাবি পুলিশের
রিমান্ড আবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের সহিংস দমন-পীড়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল জিয়াউলের, যা তিনি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।
সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের ওপর আক্রমণ ও নিধন, আড়িপাতার যন্ত্র পেগাসাস সফটওয়্যার ক্রয় ও আয়নাঘরের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে সাবেক এই সেনা কর্মকর্তার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে করা আবেদনে এমনটাই দাবি করেছে পুলিশ। এতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এসব ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
তবে আদালতে শুনানির সময় এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জিয়াউল আহসান। আজ শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে রিমান্ড আবেদনের বিষয়ে শুনানির জন্য তাকে আদালতে আনা হয়।
রিমান্ড আবেদনে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, জিয়াউল ইসরায়েলি সফটওয়্যার পেগাসাস কেনার কথা স্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে আদালতে জিজ্ঞাসা করা হলে জিয়াউল বলেন, ‘পেগাসাস বলে কিছু নেই। আমি কারো ফোন ট্র্যাক করিনি।’
পুলিশ আরও দাবি করে, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক এই মহাপরিচালক ‘আয়নাঘর’র সঙ্গেও জড়িত।
তবে জিয়াউল আহসান আদালতে বলেন, ‘আমি কোনো হত্যাকাণ্ড বা গুমের সঙ্গে জড়িত নই। যারা আয়নাঘর থেকে মুক্তি পেয়েছে তাদের কাউকে জিজ্ঞাসা করেন যে আমি তাদের সেখানে আটকে রেখেছি কি না।’
পুলিশের দাবির পাল্টা জবাবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত ৭ আগস্ট তাকে তার বাড়ি থেকে ডিজিএফআই তুলে নিয়ে গিয়েছিল এবং আট দিন আয়নাঘরে বন্দি করে রেখেছিল।
রিমান্ড আবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের সহিংস দমন-পীড়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল জিয়াউলের, যা তিনি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।
রাজধানীর নিউমার্কেট থানার একটি হত্যা মামলায় চাকরি থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত জিয়াউল আহসানকে গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ (১৬ আগস্ট) সকালে তাকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত ৬ আগস্ট মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
তিনি ২০২২ সাল থেকে এনটিএমসির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এর আগে তিনি ওই কোম্পানির পরিচালক ছিলেন। এর আগে ২০০৯ সালে তিনি র্যাব-২ এর ভাইস-ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব পান। একই বছর তিনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে পদোন্নতি পেয়ে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক নিযুক্ত হন।