আয়া সোফিয়ার ব্যাপক সংস্কার শুরু

ইস্তাম্বুলের আয়া সোফিয়া মসজিদের যুগান্তকারী সংস্কার কাজ শুরু করেছে তুরস্ক সরকার। দেড় হাজার বছরের পুরনো এই স্থাপনাটিতে গত ১৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ব্যাপক কাঠামোগত সংস্কার করা হচ্ছে। সংস্কারের লক্ষ্য প্রধান গম্বুজ এবং আশপাশের আধা-গম্বুজগুলোকে সম্ভাব্য ভূমিকম্প সহ্য করার জন্য শক্তিশালী করা। সংস্কার তত্ত্বাবধানকারী নির্মাণ প্রকৌশলী ও বৈজ্ঞানিক কাউন্সিলের সদস্য মেহমেত সেলিম ওকটেন বলেন, আমরা তিন বছর ধরে আয়া সোফিয়া ও এর আশপাশের কাঠামোগুলোতে ব্যাপক সংস্কারের প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছি। ইস্তাম্বুলে ভূমিকম্পের পরে আমরা এখন আয়া সোফিয়ার ভূমিকম্প সুরক্ষার ওপর মনোযোগ দিচ্ছি।
নামাজ বন্ধ না করেই সংস্কার কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ৪৩.৫ মিটার লম্বা চারটি স্তম্ভের ওপরে একটি ইস্পাত প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হচ্ছে। নতুন স্থাপিত টাওয়ার ক্রেন দিয়ে ওপরের অংশে বিভিন্ন উপকরণ বহন করা হবে। এ ছাড়াও সেখানে বিশেষজ্ঞরা শতাব্দী ধরে আগুন ও ভূমিকম্পের কারণে ভবনের ক্ষয়ক্ষতি পরীক্ষা করবেন। সংস্কৃতি ও পর্যটনমন্ত্রী মেহমেত নুরি এরসয় নিশ্চিত করেছেন যে মূল কাঠামো বা সাজসজ্জা কোনো পরিবর্তন করা হবে না। পুনরুদ্ধার শিক্ষাবিদ হাসান ফিরাত ডিকারকে বলেন, সবচেয়ে সঠিক ও দক্ষ কর্মীরা অত্যন্ত সাবধানতার সাথে তাড়াহুড়া ছাড়াই সংস্কার করা হবে।
৫০ বছরের বিস্তৃত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০২৩ সালে চালু হওয়া এই সংস্কারে আয়া সোফিয়ার কাঠামোর ‘শতাব্দী পুরনো দুর্বল কাঠামো” পুনঃ নির্মাণ করা হচ্ছে। ৫৩৭ সালে বাইজেন্টাইন ক্যাথেড্রাল হিসেবে নির্মিত এই স্থাপনাটি ১৪৫৩ সালে মসজিদে পরিণত হয় এবং পরে ১৯৩৫ সালে এটিকে একটি জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়। ২০২০ সালে আদালতের আদেশে এটি মসজিদে রূপান্তরিত হয়। ১৯৮৫ সাল থেকে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া আয়া সোফিয়া তুরস্কের সর্বাধিক পরিদর্শনযোগ্য স্থানগুলোর মধ্যে একটি। ২০২৩ সালে দক্ষিণ তুরস্কে সংঘটিত ভূমিকম্পের পর আশঙ্কা বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমান সংস্কারের ওপর গভীর নজর রাখা হচ্ছে।