Hot

আর্থিক কষ্টে জীবন রক্ষার ওষুধ কেনায়ও কাটছাঁট, মূল্য সমন্বয়ের নামে রোগীর কাঁধে বাড়তি চাপ

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের যোগসাজশে ৭ থেকে ১৪০ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়

জীবন বাঁচাতে অসুস্থ মানুষকে প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু ওষুধ খেতে হয়। নিত্যপণ্যের এই ঊর্ধ্বগতির বাজারে যেখানে সাধারণ মানুষের তিনবেলা আহারের জোগান দেওয়াই কষ্টকর, সেখানে জীবন রক্ষার জন্য দ্বিগুণ তিন গুণ দামে ওধুষ কিনতে গিয়ে অনেকে চরম অসাধ্য হয়ে পড়েছে। আর্থিক সংকটে অনেককে কাটছাঁট করে দরকারি ওষুধও কিনতে হচ্ছে। এতে করে যে রোগের জন্য রোগী ওষুধ নিচ্ছেন সেটিরও কোনো সুফল মিলছে না। এর ওপর আছে আসল আর নকল ওষুধের ধাপ্পাবাজি। দেশ যখন ওষুধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ- মাত্র ২ শতাংশ ওষুধ আমদানি করতে হয়, সে অবস্থায় দেশীয় উৎপাদিত ওষুধের দামও চলে যাচ্ছে নাগালের বাইরে। দেশে বর্তমানে ৩১০টি নিবন্ধিত ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানি রয়েছে। ৫৮টি কোম্পানি দেশে তৈরি ওষুধ বিশ্বের ১৫৭টি রাষ্ট্রে রপ্তানি করছে। কিন্তু দেশের বাজারে ওষুধের দাম ধাপে ধাপে শুধুই বাড়ছে। ফার্মেসি মালিক ও ভোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২০ সালের পর থেকে গত চার বছরে দেশীয় ও আমদানিনির্ভর প্রায় ৯০ শতাংশ ওষুধের দাম বেড়েছে। দাম বাড়ানোর কারণ হিসাবে ব্যবসায়ীরা কাঁচামাল আমদানি, বিশ্ববাজারে ডলার ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির দোহাই দিয়ে বাড়তি দাম চাপিয়ে দিচ্ছে ক্রেতা বা রোগীর ওপর। নিয়ন্ত্রক সংস্থা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এ ক্ষেত্রে তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না।

সরকারের আর কোনো সংস্থার তরফ থেকেও নেই কোনো তদারকি। স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশে উৎপাদিত ওষুধ বিদেশে রপ্তানি করে ব্যবসায়ীরা মুনাফা অর্জন করছেন। এর পরও বিভিন্ন অজুহাতে স্থানীয় বাজারে নিয়মিত দাম বাড়াচ্ছেন। চিকিৎসা ব্যয় মেটাতেই প্রতিবছর ৬১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে। যা মোট জনসংখ্যার ৩ দশমিক ৭ শতাংশ।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গত জুলাইয়ে প্রকাশিত এক গবেষণায় জানায়, একটি পরিবারের একজন সদস্য হাসপাতালে ভর্তি হলে গড়ে প্রায় ৫৫ হাজার টাকা ব্যয় করতে হয়। আর এ খরচের প্রায় ২৫ শতাংশ ওষুধের পেছনে ব্যয় হয়। হাসপাতালে ভর্তি না হওয়া রোগীদের ক্ষেত্রে ৫৪ শতাংশ ওষুধের পেছনে ব্যয় হয়। আর এসব ব্যয় নির্বাহ করতে গিয়ে আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়তে হয়।

দেশে ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো চার হাজার ১৮০টি জেনেরিকের (৯৭.২১ শতাংশ) ৩৫ হাজার ২৯০টি ব্র্যান্ডের ওষুধ উৎপাদন করে থাকে। ওষুধের বাজার প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার। এর মধ্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় এসেনশিয়াল ড্রাগ হিসাবে পরিচিত ১১৭টি জেনেরিকের (২ দশমিক ৭৯ শতাংশ) দাম ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। বাকি চার হাজার ৬৩টি ব্র্যান্ডের দাম প্রস্তুতকারী কোম্পানি নির্ধারণ করে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের যোগসাজশে গত এপ্রিল মাসে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বেশ কিছু কোম্পানি ৭ থেকে ১৪০ শতাংশ পর্যন্ত তাদের ওষুধের দাম বাড়ায়। অস্বাভাবিকভাবে দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে গত ২৯ এপ্রিল কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সব ধরনের ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়ে রুল দেন হাইকোর্ট। এর পরও কোনো কাজ হচ্ছে না।

গত এক সপ্তাহ সরেজমিন রাজধানীর শাহবাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা, পুরান ঢাকার মিটফোর্ড, নাজিরাবাজার ছাড়াও শ্যামলী, মহাখালীর একাধিক ফার্মেসি ঘুরে ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে অনেক ওষুধের অস্বাভাবিকভাবে দাম বাড়ানোর তথ্য পাওয়া গেছে।

ভোক্তা, ফার্মাসিস্ট ও বিপণন প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলতি বছর আগস্ট মাসে উৎপাদিত স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যথানাশক প্রতিপিচ টেরাক্স (১০ এমজি) ট্যাবলেটের দাম ছিল ১২ টাকা। সেপ্টেম্বরে সেটি বাড়িয়ে ২০ টাকা করা হয়। টেরাক্স ১০ এমজি মূলত অস্ত্রোপচার-পরবর্তী মাঝারি থেকে তীব্র ব্যথায় ব্যবহার করা হয়। ৫০ পিচের এক বক্স ওষুধের দাম এক মাসের ব্যবধানে ৬০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকায় পৌঁছায়। এত অল্প ব্যবধানে রোগীর ওপর ৪০০ টাকা বাড়তি চাপিয়ে দেওয়া হয়। প্রাপ্ত হিসাবে প্রায় ৬৭ শতাংশ বাড়তি দাম তাকে শোধ করতে হয়।

চুলকানি বা খোস-পাঁচড়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত এসিআইয়ের টেট্রাসল ২৫ শতাংশ সল্যুসনের ৩০ এমএল বোতলের দাম ছিল ৬৮ টাকা, যা বেড়ে এখন হয়েছে ১২৫ টাকা। দাম বৃদ্ধির হার ৬৭ শতাংশ। ইনসেপ্টা কোম্পানির অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টের জন্য ব্যবহৃত উইন্ডেল গ্লাস রেস্পিরেটর সল্যুসনের তিন এমএলের বোতলের দাম ২০ টাকা থেকে বেড়ে ২৫ টাকা হয়েছে। দাম বেড়েছে ২৫ শতাংশ। একই কোম্পানির অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টের জন্য ব্যবহৃত বুটিকট নেবুলাইজার সাসপেনশন বুডেসোনাইড দুই এমএলের দাম ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫ টাকা করা হয়েছে। দাম বেড়েছে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ।

ডায়াবেটিক রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহৃত ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সিজ (বিডি) লিমিটেড হিউমুলিন এন ইনজেকশন ৩ মিলি কুইকপেন ৫টির এক প্যাকের দাম তিন হাজার ৫০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে তিন হাজার ৬০০ টাকা। বেড়েছে প্রায় তিন শতাংশ। একই কোম্পানির ডায়াবেটিক রোগীর চিকিৎসায় ইনজেকশন হিউমুলিন আর ৩ মিলি কুইকপেনের দাম ৮৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৯০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। দামবৃদ্ধির হার প্রায় ৫ শতাংশ। অপসোনিন ফার্মার গ্যাস্ট্রিকের ট্যাবলেট ফিনিক্স ২০ এমজি প্রতি পিচের দাম সাত টাকা থেকে বাড়িয়ে আট টাকা করা হয়েছে। দাম বেড়েছে ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। বায়োফার্মার ট্যাবলেট নিউরেপ ভিটামিন বি১, বি৬ ও বি১২ প্রতি পিস ছয় টাকা থেকে বেড়ে আট টাকা হয়েছে। ১০টির এক পাতা ট্যাবলেটের দাম ৬০ থেকে ৮০ টাকা করা হয়েছে। দাম বেড়েছে ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ৫০০ টাকা দামের কাভারসিল ৪ এমজির ট্যাবলেট এক পাতা (৩০টি) ৫৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বাইজোরান ৫/২০ (৬০ পিচের বক্স) ট্যাবলেট কিছু দিন আগেও ছিল ৩০০ টাকা। এখন নেওয়া হচ্ছে ৩৬০ টাকা। বাইজোরান ৫/৪০ বক্স ছিল ৫৫০ টাকা, এখন নেওয়া হচ্ছে ৬০০ টাকা। জ্বর-ঠান্ডার এইচ সিরাপ ২৫ টাকা ছিল। সেটি এখন কিনতে হচ্ছে ৩৫ টাকায়। নাপা সিরাপের দামও একইভাবে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এক পাতা ১০ টাকা থেকে ১২ টাকা, নাপা এক্সটেন্ড প্রতি ট্যাবলেট দেড় টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ টাকা করা হয়েছে।

অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সেফাক্লাভ ৫০০ মিলিগ্রাম প্রতিটি ওষুধের দাম ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০ টাকা করা হয়েছে। এক পিচ ওষুধে ১০ টাকা বাড়তি নেওয়া হচ্ছে। একজন রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিকের এক কোর্স সম্পন্ন করতে আগের তুলনায় ৫০০ টাকারও বেশি অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে। ভিটামিনজাতীয় ট্যাবলেটের দামও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ৩০টি ট্যাবলেটের বিভিন্ন কৌটা ২৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৬০ টাকা করা হয়েছে। এক কৌটার দাম বাড়ানো হয়েছে ১৩০ টাকা।

আমিরুল ইসলাম নামে একজন ক্রেতা বলেন, মেয়ের চিকিৎসায় রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস কর্তৃক সুইজারল্যান্ড থেকে আমদানি করা সেলসেপ্ট ট্যাবলেট খাওয়াতে হয়। কিছু দিন আগেও ৫০০ এমজি প্রতিপিস ট্যাবলেটের দাম ৬৫ টাকায় কেনা যেত। এটি বর্তমানে ৮৫ টাকা হয়েছে। ৬৬৫ টাকার এক পাতা ওষুধের দাম ৮৫০ টাকা হয়েছে। এটা পাইকারি রেট। খুচরা আরও বেশি। তিনি আরও বলেন, এক বছর আগে ৫০টির এক বক্স সেলসেপ্ট ট্যাবলেট তিন হাজার ৪০০ টাকা করে কিনতেন। এখন চার হাজার ২৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। অর্থাৎ বক্স প্রতি ৮৫০ টাকা করে দামে কিনতে হচ্ছে।

মহাখালীর বাসিন্দা আব্দুল মজিদ বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শে দীর্ঘদিন ধরে লেক্সোটানিল সেবন করছেন। বিষণ্নতা থেকে মুক্তি ও মস্তিষ্ক শীতল রাখতে ব্যবহৃত আমদানিনির্ভর ১০টি ট্যাবলেটের একপাতা লেক্সোটানিল গত জানুয়ারিতে ৮০ টাকা ছিল। বর্তমানে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ওষুধ বিক্রেতা ও রোগীদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায় ব্যবহৃত অপসোনিন কোম্পানির ১০টি ট্যাবলেটের একপাতা জুলিয়াম গত ৫ জানুয়ারিতে ২৮ টাকা টাকায় বিক্রি করেছেন। দাম বাড়ায় এখন এক পাতা বিক্রি করছেন ৩৫ টাকায়।

ত্বকের খোস-পাঁচড়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত পেভিসন ক্রিম জানুয়ারিতে ৪৫ টাকা ছিল, বর্তমানে ৭০ টাকা বিক্রি করছেন। দাঁদ, অ্যালার্জি ও চুলকানির চিকিৎসায় ব্যবহৃত স্কয়ারের পেভিটিন ক্রিম ৫০ টাকা থেকে ৬৫ টাকা হয়েছে।

নিউমোনিয়া ও শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ এবং টনসিলাইটিসের জন্য ব্যবহৃত একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের ৫০০ এমজির প্রতিপিস অ্যামিজন ক্যাপসুল ৪৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫৫ টাকা করা হয়েছে। এভাবে ৬টির এক পাতা ওষুধ ২৭০ টাকা থেকে ৩৩০ টাকা অর্থাৎ ২২ শতাংশ দাম বেড়েছে।

চলতি বছর কতটি কোম্পানি ওষুধের দাম বৃদ্ধির আবেদন করেছে এবং কতটি আইটেমের দাম বাড়ানো হয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তিনজন কর্মকর্তার কাছে পৃথকভাবে জানতে চাইলেও কেউই সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। তারা জানান, প্রায় বছরজুড়েই দাম বাড়ানোর আবেদন জমা পড়ে।

পরে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আসরাফ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, একই ওষুধ বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন নামে বিক্রি করে। দামেরও পার্থক্য হয়। কোম্পানি দাম বাড়ানোর আবেদন করলে তখন আইনগতভাবেই অনুমতি দেওয়া হয়। তবে যেসব ওষুধের ম্যাক্সিমাম প্রাইজ (সর্বোচ্চ মূল্য) ৫০ টাকা আছে সেগুলোর দাম কোনোভাবেই বাড়ানো হচ্ছে না। যারা ২০১৪-১৫ সাল থেকে যে ওষুধ ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করে আসছে, এখন অন্য কোম্পানির দামের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে। এ হিসাবে গত ৬ মাসে ৮ থেকে ১০টা কোম্পানির ওষুধের দাম ৫ থেকে ৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। আর স্কয়ারের যে ওষুধের দাম ১২ থেকে ২০ টাকা করা হয়েছে, একই ওষুধ অন্য কোম্পানি ২৫ টাকা ৩২ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে বিক্রি করেছে।

ওষুধ প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, ওষুধ শিল্প খাতের পরিধি ও রোগীদের ওষুধ সেবনের চাহিদা বাড়ায় বিভিন্ন সময় কোম্পানিগুলো দাম বাড়িয়ে আসছে। ২০২০ সালে করোনা মহামারি শুরুর পর কাঁচামাল আমদানিসহ উৎপাদন খরচ আরও বেড়ে যায়। তখন থেকে ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠাগুলোর সংগঠন ‘বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউট্যালস ইন্ডাস্ট্রিজ (বিএপিআই) বিভিন্ন ফোরামে মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব করে আসছেন। অনেকে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন। এতে অধিদপ্তর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহায়তা করছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d