আর্থিক খাতে ফিরছে গতি
সাড়ে ১৮ লাখ কোটি টাকার ঋণ রেখে পালিয়েছে হাসিনা লুটপাটকারী শতাধিক মন্ত্রী-এমপি-আমলা-পুলিশ কর্তার ব্যাংক হিসাব জব্দ :: পাচারকৃত অর্থ ফেরাতে ১২ দেশে ৭১ চিঠি
অন্তর্বর্তী সরকারের ঘাড়ে সাড়ে ১৮ লাখ কোটি টাকার ঋণ রেখে পালিয়েছে ফ্যাসিস্ট হাসিনা। জাতির মাথায় শুধু কি ঋণের বোঝা; ডলারের তীব্র সঙ্কট, ঋণের নামে ব্যাংক লুটপাট, বিদেশে অর্থ পাচারে মরিয়া হয়ে উঠেছিল আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও নেতারা। উচ্চ মূল্যস্ফীতির পারদ চরিয়ে পিষ্ট করেছে দেশের জনগণকে। অন্তর্র্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেয়ার দ্বিতীয় মাস পূরণ হচ্ছে আজ। এই সময়ে অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে আসে নতুন নতুন নেতৃত্ব। আর্থিক খাতে চুক্তিভিত্তিক সব নিয়োগই বাতিল করেছে সরকার।
রাজনৈতিক প্রকল্প ব্যয় খতিয়ে দেখার পাশাপাশি অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র জানতে শ্বেতপত্র প্রণয়নে কমিটি গঠন করেছে সরকার। ইতোমধ্যে গত আওয়ামী লীগ সরকারের লুটপাটকারী শতাধিক মন্ত্রী-এমপি ও নেতার ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। ব্যাংকের নগদ টাকার সঙ্কট সামাল দিতে ধারের যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তাতে ব্যাংকিং খাতে কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরতে শুরু করেছে। যদিও রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংকের এমডির নিয়োগ বাতিল করায় ব্যাংকগুলোতে কিছুটা বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। তবে বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনতে বিশ্বের ১২টি দেশে ৭১টি চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে ২৭টি চিঠির জবাব পেয়েছে সংস্থাটি। রীতিমতো প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে উল্লম্ফন দেখেছে দেশবাসী। ফলে রিজার্ভেও গতি ফিরছে। তবে তৈরি পোশাক খাতে অস্থিরতা ও শেয়ারবাজারে টানা দরপতনে অর্থনীতি ঠিকভাবে ঘুরতে বাধা সৃষ্টি করছে। যদিও সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী খুব শিগগিরই স্বাভাবিক হবে দেশের অর্থনীতি। টানা ১৫ বছরের বেশি ক্ষমতায় থেকেও অর্থনীতির রক্তক্ষরণ বন্ধে আওয়ামী লীগ সরকার যেসব উদ্যোগ নিতে পারেনি, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার দুই মাসের মধ্যেই সে সব উদ্যোগ নিতে শুরু করেছে। অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্ব পরিবর্তনের মাধ্যমে সংস্কার ও পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। বিশেষ করে আর্থিক খাতে এ বার্তা দেয়া হয়েছে যে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতাসীনদের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে ব্যাংক দখল করে নামে-বেনামে ঋণ নেয়ার দিন শেষ হয়েছে। যদিও পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ গতকাল বলেছেন, দেশে দুর্নীতি কিছুটা কমলেও চাঁদাবাজি কমেনি। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে দেশের পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করেছে। এতে কিছুটা কমেছে দুর্নীতির পরিমাণ। তবে চাঁদাবাজি এখনো রয়ে গেছে। তেমন একটা কমেনি।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, নতুন সরকার দায়িত্ব নিয়ে অর্থনীতি আর আর্থিক খাতের পুনর্গঠনে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে। এ বিষয়ে পরিষ্কার একটি বার্তাও এসেছে অর্থনীতি-বিষয়ক নেতৃত্বের কাছ থেকে। তবে নীতি সুদহার কিছুটা বাড়ানো ছাড়া উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এখনো বড় কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসায় শিল্প খাতে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে পোশাক খাতের। অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্ব পরিবর্তনের মাধ্যমে সংস্কার ও পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। বিশেষ করে আর্থিক খাতে এ বার্তা দেয়া হয়েছে যে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতাসীনদের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে ব্যাংক দখল করে নামে-বেনামে ঋণ নেয়ার দিন শেষ হয়েছে।
বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, গত দুই মাসে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পূরণের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর, ব্যাংকসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে যে প্রাতিষ্ঠানিক শূন্যতা তৈরি হয়েছিল, তা পূরণে সরকার ব্যস্ত ছিল। এসব সংস্থায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে। দেখা গেছে, ব্যাংক খাতে ব্যাপক রক্তক্ষরণ হয়েছে। মূলত এত দিন অর্থনীতি যে বিকল অবস্থায় ছিল, তা পুনর্গঠন করে স্বাভাবিক অবস্থায় আনার পূর্বশর্ত হিসেবে এসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বন্ধ করা একটি বড় পদক্ষেপ বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। এ ছাড়া ক্রলিং পেগের মাধ্যমে ডলারের দাম নির্ধারণের নমনীয়তাও প্রবাসী আয় আনার ক্ষেত্রে ভালো উদ্যোগ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রেমিট্যান্সের গতিতে রিজার্ভ নিয়ে দুশ্চিন্তা কমেছে
গত আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই প্রবাসী বাংলাদেরিা রেমিট্যান্স পাঠানো বাড়িয়েছেন। ওই মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২২২ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই মাসের তুলনায় ৩৯ শতাংশ বেশি ছিল। সেপ্টেম্বরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২৪০ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই মাসের তুলনায় ৮০ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি। সরকার পতনের পর থেকেই বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। আবার বৈধ পথে ডলারের দর বৃদ্ধিতে হুন্ডি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন তারা। এতে রেমিট্যান্স আসার গতি বাড়ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। গত বছর ডলারের দাম নির্ধারণে ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন আন্তঃব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যান্ড ছিল ১ শতাংশ। ১৮ আগস্ট এই ব্যান্ড আড়াই শতাংশ করার সিদ্ধান্ত হয়। ফলে ডলারের মধ্যবর্তী দাম দাঁড়ায় সর্বোচ্চ ১২০ টাকা। এ সিদ্ধান্তের কারণে ব্যাংকগুলো এখন ডলারের দাম কিছুটা বেশি দিতে পারছে, ফলে বাড়ছে প্রবাসী আয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, আইএমএফের বিপিএম-৬ হিসাব মান অনুযায়ী ২ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৯৭৬ কোটি ডলার। আর গ্রস বা মোট রিজার্ভের পরিমাণ দুই হাজার ৪৭৬ কোটি ডলার। যদিও এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল ইতোমধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। সেপ্টেম্বরে মাসে আকুর জুলাই-আগস্ট মাসের ১ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধ করা হয়েছে। এরপর রিজার্ভ কমে গেছে। তবে যে অনুপাতে রেমিট্যান্স আসছে তাতে রিজার্ভ নিয়ে আগামী দিনে আর চিন্তার কিছু দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা।
এস আলম মুক্ত ব্যাংক খাত
রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ইসলামী ব্যাংকসহ অন্তত আটটি ব্যাংক নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল এস আলম গ্রুপ। অন্য ব্যাংকগুলো হলো ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক। গত দুই মাসে আর্থিক খাতে সবচেয়ে বড় দৃশ্যমান পদক্ষেপ হলো এসব ব্যাংকের পরিষদ ভেঙে দেয়া। বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন পরিষদ গঠনের মাধ্যমে এসব ব্যাংক এস আলম মুক্ত করেছে। এস আলম গ্রুপ ব্যাংক ও আর্থিক খাত থেকে নামে-বেনামে যে প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, তা কীভাবে উদ্ধার করা হবে, তা অবশ্য এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ঋণ আদায় না হলে ব্যাংক খাতের ঝুঁকির মাত্রা আরো বাড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এছাড়া সালমান এফ রহমানের আইএফআইসি ব্যাংকেরও পরিষদ ভেঙে দেয়া হয়েছে। ভেঙে দেয়া হয়েছে আরো কয়েকটি ব্যাংকের পরিষদ, যেগুলো হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠরা নিয়ন্ত্রণ করত। এ ছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে সরিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যদিও এ নিয়ে ব্যাংকগুলোতে অস্থিরতা বিরাজ করছে।
রাজনৈতিক প্রকল্পের ব্যয় পর্যালোচনা করবে সরকার
গত আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া সাতটি মেগা প্রকল্প বর্তমানে চলমান আছে। এসব প্রকল্পে প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। এর মধ্যে একমাত্র রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ছাড়া বাকি ছয়টি প্রকল্পের ৯১ শতাংশের বেশি কাজ শেষ হয়েছে। তবে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ে এ রকম প্রকল্প নেয়ার কী প্রয়োজনীয়তা ছিল এবং প্রকল্পগুলো যৌক্তিকভাবে নেয়া হয়েছে কি না, এসব পর্যালোচনা করা হচ্ছে। প্রকল্পগুলোর ব্যয় পর্যালোচনার কাজটি করছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। জানতে চাইলে আইএমইডি সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, বড় প্রকল্পগুলোর একটি মূল্যায়ন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিগগিরই এ পর্যালোচনা শেষ হবে।
তৈরি পোশাক খাতের অস্থিরতা
ক্ষমতার পালাবদলে আইনশৃঙ্খলার অবনতির মাঝে ভারত এবং আওয়ামী ব্যবসায়ীদের ষড়যন্ত্রে পোশাক খাতের শ্রমিকদের অসন্তোষ, আন্দোলন, কর্মবিরতি এবং একের পর এক কারখানা বন্ধের ঘটনায় রফতানি আয়ে ৮৫ শতাংশের মতো অবদান রাখা এ খাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানামুখী শঙ্কা দানা বাঁধছে। উৎপাদন তলানীতে নেমে যাওয়া, কার্যাদেশ পাশের দেশে চলে যাওয়া, আয় কমে ব্যাংক ঋণে নির্ভরশীলতার পাশাপাশি সামনের দিনে বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁঁকি তৈরি হয়েছে দেশের রফতানিতে অবদান রাখা অনেক বড় কোম্পানির। উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাতছাড়া হওয়া কার্যাদেশগুলো বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশ ভারত, ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া এবং পাকিস্তানে যাচ্ছে। শ্রমিক অসন্তোষের প্রেক্ষিতে প্রায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কার্যাদেশ বাতিল হয়ে গেছে বলে সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলনে জানান শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তবে বিজিএমইএ সভাপতি রফিকুল ইসলাম জানান, ৩০ শতাংশের মতো কার্যাদেশ অন্যান্য দেশে চলে গেছে।
টানা দরপতনের বৃত্তে পুঁজিবাজার
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রথম সপ্তাহে পুঁজিবাজারে লেনদেন বৃদ্ধি ও সূচকের উত্থান হলেও পরের সাত সপ্তাহ টানা দরপতনে নাজেহাল বিনিয়োগকারীরা। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে কমিশন চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি জানান তারা। এদিকে, শিগগিরই পুঁজিবাজারে সুখবরের আশা দেখছেন না বাজার বিশ্লেষকরাও। তারা জানান, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের অবস্থা দেখার কেউই নেই। ঠিকমতো খেয়ে পরে বাঁচার উপায়ও নেই। গত দেড় মাসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) পুঁজি হারিয়েছে ৩১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে গত সপ্তাহেই ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা। এমন টালমাটাল অবস্থায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেছেন বিনিয়োগকারীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন কমিশনের নির্বাহী পরিচালকরা। বিএসইর নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম বলেন, টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা সবকিছু বিশ্লেষণ করে যে পরামর্শ দেবে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পাচারের অর্থ ফেরাতে ১২ দেশে ৭১ চিঠি
বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনতে বিশ্বের ১২টি দেশে ৭১টি চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে ২৭টি চিঠির জবাব পেয়েছে সংস্থাটি। দুদক কর্মকর্তারা বলেছেন, বিশ্বের ১২টি দেশে টাকা পাচারের তথ্য পেয়েছে দুদক। বিভিন্ন দেশে বাড়ি, গাড়ি ক্রয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগসহ ব্যাংকে টাকা রাখা হয়েছে। টাকা পাচার করা দেশের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, সুইজারল্যান্ড, সাইপ্রাস, জাপান, হংকং, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া। যারা এসব দেশে টাকা পাঠিয়েছেন তাদের বিষয়ে ২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৭১টি এমএলএআর পাঠানো হয়েছে। এদিকে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে এবং প্রতিরোধে করণীয় নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক করেছে দুদক।