Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
International

আলজাজিরার বিশ্লেষণ : ক্ষমতার শেষ প্রান্তে নেতানিয়াহু?

  • জনপ্রিয়তা কতটা কমেছে
  • রাজনৈতিকভাবে কী কী সমালোচনা উঠেছে
  • জোট সরকার ভাঙার সম্ভাবনা কতটা
  • আন্তর্জাতিকভাবে ইসরায়েল কতটা একঘরে
  • আইনি সংকট কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে
  • নেতানিয়াহুর সময় কি শেষ

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যেদিকেই তাকান, চারপাশে শুধু সংকটই যেন ঘনিয়ে আসছে। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজা উপত্যকায় তার সরকারের যুদ্ধ নিয়ে সমালোচনা বাড়ছে। গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলেছেন বিদেশি নেতারা, এমনকি সাবেক ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীরাও। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরায়েল ক্রমেই একঘরে হয়ে পড়ছে।

কারণ গাজায় যে দুর্ভিক্ষ চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে তার ছবি এখন বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে।

নিজ দেশে নেতানিয়াহু তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন। অনেকেই মনে করেন, তিনি শুধু ক্ষমতা ধরে রাখতেই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করছেন। আইনি দিক থেকেও তার বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতির মামলায় কৌঁসুলিরা এখন তাকে জেরা শুরু করেছেন।

রাজনৈতিক দিকেও তিনি বিপদের মুখে। তার জোট সরকার ভেঙে পড়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।

নিজের পুরো রাজনৈতিক জীবনে নেতানিয়াহু কখনো এতটা চাপে পড়েননি। কিন্তু সত্যিই কি এটাই ইসরায়েলের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রধানমন্ত্রীর শেষ অধ্যায়? আমরা যা জানি :

ইসরায়েলি জনগণের মধ্যে নেতানিয়াহুর জনপ্রিয়তা কতটা কমেছে?

খুবই এবং আরো কমছে।

গাজায় যুদ্ধকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করার অভিযোগ বহুদিন ধরেই তার বিরুদ্ধে আছে। কিন্তু মার্চ মাসে এই অভিযোগ নতুন মাত্রা পায়, যখন ইসরায়েল হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে এবং গাজায় জিম্মি ইসরায়েলিদের জীবন আরো ঝুঁকির মধ্যে ফেলে।

মে মাসের শেষ দিকে চ্যানেল ১২ টেলিভিশনের এক জরিপে দেখা যায়, অধিকাংশ ইসরায়েলি বিশ্বাস করেন, নেতানিয়াহু গাজায় আটক ইসরায়েলিদের চেয়েও বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন নিজের ক্ষমতা ধরে রাখাকে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস নেতৃত্বাধীন হামলার সময় জিম্মি হওয়াদের মুক্তির দাবি ঘিরেই ইসরায়েলের বিক্ষোভগুলো মূলত আবর্তিত হয়েছে। অনেকেই মনে করেন, নেতানিয়াহু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করে জিম্মিদের আরো বিপদে ফেলছেন।

সম্প্রতি একটি ছোট, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অংশের ইসরায়েলিরা গাজার মানুষের ওপর যে ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হচ্ছে, তার বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ করছেন। শিক্ষাবিদদের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক খোলা চিঠিতে গাজায় ইসরায়েলের ধ্বংসযজ্ঞের নিন্দা জানানো হয়েছে। তেল আবিবে শনিবার রাতের বিক্ষোভে এখন অনেকেই ফিলিস্তিনি শিশুদের ছবি বহন করেছেন।

এমনকি সেনাবাহিনীতেও অসন্তোষ বাড়ছে। সংরক্ষিত সেনারা (রিজার্ভিস্ট) যুদ্ধ করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন—এমন খবর প্রকাশের পর বিভিন্ন বিভাগের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তারা যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে খোলা চিঠি প্রকাশ করেছেন।

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে কী কী সমালোচনা উঠেছে?

সম্প্রতি ইসরায়েলের দুই সাবেক প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলেছেন। সাবেক সেনা জেনারেল এবং ১৯৯৯ থেকে ২০০১ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকা এহুদ বারাক টাইম ম্যাগাজিনে বলেছেন, নেতানিয়াহুর এখন দুটি পথ—মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় জিম্মিমুক্তি ও যুদ্ধ শেষ, অথবা রাজনৈতিক স্বার্থে চালানো ‘প্রতারণার যুদ্ধ’ চালিয়ে যাওয়া।

এ ছাড়া ২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা এহুদ ওলমার্ট হারেৎজ পত্রিকায় লিখেছেন, গাজায় ইসরায়েল যুদ্ধাপরাধ করেছে এবং ‘এটি এখন একটি ব্যক্তিগত রাজনৈতিক যুদ্ধ’।

এ ছাড়া রেশেত বেত রেডিওকে ডেমোক্র্যাটস পার্টির নেতা ও সাবেক জেনারেল ইয়াইর গোলান বলেন, ‘একটি সুস্থ দেশ বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালায় না, শিশুদের হত্যা করে না এবং জনগণকে গণহারে উচ্ছেদ করে না।’

তিনি এ কথা বলেন, যখন ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থী মন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ ও ইতামার বেন-গভির গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে সেখানে ইহুদি বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা প্রকাশ করেন।

ওলমার্ট মঙ্গলবার আরো বলেন, ট্রাম্পের উচিত নেতানিয়াহুকে সোজাসুজি বলা, ‘এবার যথেষ্ট হয়েছে।’

নেতানিয়াহুর জোট সরকার ভাঙার সম্ভাবনা কতটা?

বহু বছর ধরেই ইসরায়েল সমাজে বিতর্ক চলছে—আল্ট্রা-অর্থোডক্স (কট্টরপন্থী ধর্মীয়) যুবকদের সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক নিয়োগ দেওয়া হবে কিনা। তারা যদি পূর্ণকালীন ধর্মীয় শিক্ষার্থী হন, তবে এত দিন এই নিয়োগ থেকে ছাড় পেতেন। ২০২৪ সালের জুনে ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট রায় দেন, এই ছাড় আর চলবে না। এটি ছিল ধর্মনিরপেক্ষ ইসরায়েলিদের দীর্ঘদিনের দাবি, যারা এই দ্বৈত নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছিলেন।

কিন্তু ক্ষমতাসীন জোটের দুই আল্ট্রা-অর্থোডক্স দল—শাস ও ইউনাইটেড তোরাহ জুদাইজম হুমকি দিয়েছে, এই রায়কে অকার্যকর করতে সরকার যদি আইন না করে, তাহলে তারা জোট থেকে বেরিয়ে যাবে।

নতুন নির্বাচন হলে সংসদে আল্ট্রা-অর্থোডক্সের পক্ষে ফল আসবে কি না, তা অনিশ্চিত। কিন্তু সাম্প্রতিক পদক্ষেপ, যেমন আল্ট্রা-অর্থোডক্স শিক্ষার্থীদের জন্য সেনানিয়োগের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা এই বিষয়টিকে আরো সামনে নিয়ে এসেছে।

আন্তর্জাতিকভাবে ইসরায়েল কতটা একঘরে হয়ে পড়েছে?

আরব ও ইউরোপীয় নেতারা নেতানিয়াহু ও তার গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে সমালোচনায় আরো সরব হয়েছেন। তবে আপাতত তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমর্থক এখনো রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

মে মাসের শুরুতে সৌদি আরব ও আরব লিগ নেতানিয়াহুর সমালোচনা করে। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, উচ্ছেদ করা ফিলিস্তিনিরা সৌদি আরবে গিয়ে বসবাস করতে পারবে। এ ছাড়া মে মাসের শেষ দিকে কানাডা, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য এক যৌথ বিবৃতিতে গাজার মানবিক সংকটকে ‘সহ্য করা অসম্ভব’ বলে উল্লেখ করে। কিন্তু তারা আগে ইসরায়েলের যুদ্ধকে সমর্থন করেছিল।

স্পেন ও আয়ারল্যান্ড, যারা ২০২৪ সালের মে মাসে নরওয়ের সঙ্গে মিলে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়, তারাও নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড ও নরওয়ে মঙ্গলবার একসঙ্গে ইসরায়েলি মন্ত্রী স্মোট্রিচ ও বেন-গভিরের ওপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার কথা জানায়।

তবে ট্রাম্প কত দিন এই সমর্থন ধরে রাখবেন, তা স্পষ্ট নয়। অনেকেই বলছেন, এই পরিবর্তনশীল মার্কিন প্রেসিডেন্ট নেতানিয়াহু থেকে বিরক্ত হতে শুরু করেছেন।

আইনি সংকট কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে?

এদিকে ২০১৯ সাল থেকে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির তদন্ত চলছে। তিনি দোষী প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।

২০২০ সালে তার বিচার শুরু হলেও কভিড-১৯ মহামারি এবং পরে গাজার যুদ্ধের কারণে তা বারবার বিলম্বিত হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এই বিচার এড়াতে তিনি যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করছেন।

সমালোচকেরা আরো বলছেন, ৭ অক্টোবরের হামলায় তার সরকারের ব্যর্থতার জন্য জবাবদিহি এড়াতেই তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন।

তাহলে কি নেতানিয়াহুর সময় শেষ?

পুরো রাজনৈতিক ক্যারিয়ারজুড়ে নেতানিয়াহু ছিলেন বিতর্ক ও কেলেঙ্কারির কেন্দ্রবিন্দুতে। বর্তমানে দেশে ও পশ্চিমাবিশ্বে তার বিরোধিতা বাড়ছে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, তবু তিনি হয়তো টিকে যেতে পারেন।

কিন্তু তা করতে হলে তার সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ধরে রাখতে হবে, আর যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে—যা ট্রাম্প এখন থামাতে চাইছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নেতানিয়াহুর এক সাবেক সহযোগী মিচেল বারাক আলজাজিরাকে মে মাসে বলেন, ‘আমি নিশ্চিত না নেতানিয়াহু এখান থেকে ফিরতে পারবেন কি না। অনেকেই বলছেন, তার সময় শেষ।…তারা এটা অনেক বছর ধরেই বলে আসছেন, আর তবু তিনি এখনো টিকে আছেন।…কিন্তু আমি আর কোনো ম্যাজিক ট্রিক তার হাতে আছে বলে মনে করি না।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto