আলুর দামে ‘রেকর্ড’
বাজারে বেড়েছে আলুর দামও। গত সপ্তাহে খুচরায় ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পুরোনো আলু খুচরায় ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারিতে গত সপ্তাহে ৪৭-৪৮ টাকা দরে বিক্রি হলেও সোমবার পুরোনো আলুর পাইকারি দাম ৬৮ টাকা। বেড়েছে নতুন আলুর দামও।
সোমবার কারওয়ান বাজারের একাধিক দোকান ঘুরে দেখা গেছে, খুচরায় ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি চলছে পুরোনো আলুর।
কারওয়ান বাজারের সবচেয়ে বড় আলুর আড়তদার মো. সবুজ জানান, তার দোকান বিক্রমপুর ভাণ্ডারে প্রতিদিন ২০ টন আলু পাইকারি বিক্রি হয়।
তিনি বলেন, ‘আলুর দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে। সোমবার পাইকারি ৬৮ টাকা কেজি দরে পুরোনো আলু বিক্রি করেছি। গত সপ্তাহে বিক্রি করেছি ৪৭-৪৮ টাকায়। আলুর সংকট দেখা দেওয়ায় দাম বেড়েছে। মুন্সীগঞ্জ, রাজশাহী, রংপুরে আলুর খুব সংকট চলছে, পাওয়া যাচ্ছে না। অতি বৃষ্টি ও ঢলে দুই দফায় আলুর বিজ নষ্ট হওয়ায় এ সমস্যা তৈরি হয়েছে।’
আবুল হোসেন নামের একজন খুচরা বিক্রেতা বলেন, ‘বস্তার ওজন, মাটি, ফাটা আলু এসব কারণে ১০ শতাংশ আলু নষ্ট হয়। সেজন্য পুরোনো আলু পাইকারিতে ৬৮ করে কিনলেও খুচরায় আমাদের ৮০ টাকায় বিক্রি করতে হয়।’
তবে নতুন আলুর দাম বাজারে কিছুটা কম আছে। খুচরায় ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে। যদিও সেটিও গত সপ্তাহের তুলনায় বেশি। গত সপ্তাহে পুরোনো আলুর মতো নতুন আলু খুচরায় বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে।
তবে দমে বেশি হলেও নতুন আলুর তুলনায় অনেক ক্ষেত্রেই পুরোনা আলুর চাহিদা বেশি বলে জানান আলুর আড়তদার সবুজ।
তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলো পুরোনো আলু নেয়। কারণ নতুন আলু দিয়ে পুরি, শিঙাড়া বা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ভালো হয় না।’
বাজারে পাইকারিতে ৬৮ টাকা কেজি দরে পুরোনো আলু বিক্রি হলেও বিশেষ আলু আবার বিক্রি হচ্ছে পাইকারিতে ৮০ টাকা কেজি দরে।
কারওয়ান বাজারের সোনার বাংলা বাণিজ্যালয়ের মালিক মো. জিয়া জানান, তার কাছে যে বিশেষ ধরনের বড় পুরোনো আলু আছে, তা তিনি পাইকারিই বিক্রি করেন ৮০ টাকা দরে।
তিনি বলেন, ‘শুধু বড় বড় রেস্টুরেন্ট, চাইনিজ হোটেলগুলো এসব আলু নেয়। এগুলো বাছাই করা আলু, যা ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের জন্য মূলত কিনে থাকে রেস্টুরেন্টগুলো।’
আলুর আড়তদার মো. সবুজ জানান, পুরোনো আলুর দামে সোমবার এটা রেকর্ড। এর আগে গত মাসে পাইকারিতে ৫৭ টাকা কেজি আর খুচরায় ৬৫ টাকা কেজি হয়েছিল পুরোনো আলু, সেটিই এর আগে সর্বোচ্চ দাম ছিল।
কারওয়ান বাজারে আসা ক্রেতা সাইদুর রহমান বলেন, ‘আমি নিজে পুরোনো আলুই খাই মূলত। নতুনটা ভালো লাগে না। তিন দিন আগেও ৫৫ টাকা কেজি দরে পুরোনো আলু কিনেছি। এখন ৮০ টাকা চাচ্ছে। নতুন আলু তিন দিন আগে দেখেছিলাম ৫৫ টাকা কেজি। এখন ৭০ টাকার নিচে নেই।’
‘খরচ কমানোর জন্য আলুই বেশি খেতাম। সেটারও যদি এত দাম হয়, খাব কী এখন?’, যোগ করেন তিনি।