Science & Tech

আলো দূষণ কী এবং এর প্রভাবে কী কী ক্ষতি হয়

দূষণ বিষয়ক আলোচনা শুরু হলেই বায়ুদূষণ, পানিদূষণ, শব্দদূষণ সহ নানা ধরনের দূষণের নাম উঠে আসে। কিন্তু আলোও যে দূষণ ঘটাতে পারে, তা আমরা কতজন জানি?

আপনি নিজেও কি জানতেন যে আলো দূষণ আসলে কী? আর এর কারণে মানুষের যে ক্ষতি হতে পারে, তা কি জানেন? হলে ঠিক কী ক্ষতি হয় এর ফলে?

বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসন নিজেও হয়তো জানতেন না যে, মাত্র দুই শ’ বছরেরও কম সময়ের ব্যবধানে তার আবিষ্কৃত বৈদ্যুতিক বাতি এতটা সমস্যা তৈরি করবে মানুষের জন্য।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ যদি এখন থেকেই ওইসব কারণের দিকে আলোকপাত করে আলোর দূষণ না কমায়, তবে একসময় তা বায়ুদূষণের মতো জটিল আর বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

আলোর সঠিক মাত্রা কত?
আলো দূষণ, ইংরেজিতে একে বলা হয় লাইট পলিউশন। মানুষ এবং প্রাণীজগতের সকল সদস্যের দিনের কর্মযজ্ঞের যে চক্র তাতে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় শরীরের আলো থেকে দূরে বিশ্রাম দরকার।

আবার প্রয়োজনের চেয়ে বেশি মাত্রায় এবং বেশি সময় ধরে জ্বলে থাকা আলো অস্বস্তি আর বিরক্তির পাশাপাশি অন্য সমস্যাও তৈরি করে।

সহজভাবে বলতে গেলে, কোথাও যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রার আলো থাকে, বা কোথাও যদি অপ্রয়োজনীয় আলো থাকে, তাহলে সেটিকেই আলো দূষণ বলে ব্যাখ্যা করেন বিশষজ্ঞরা।

এই দূষণের জন্য মূলত কৃত্রিম আলো দায়ী।

যত্রতত্র নিয়ম না মেনে সড়ক বাতি স্থাপন, ভবনের ভেতরে ও বাইরের অতিরিক্ত আলোকসজ্জা, সড়কে ছোট-বড় নানা আকারের বিলবোর্ড বসিয়ে তাতে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন সহ নানা কারণে আলো দূষণ হচ্ছে।

তবে ঠিক কত মাত্রার আলো হলে তা দূষণের পর্যায়ে পড়বে না, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো মানদণ্ড নেই। কারণ কোনো স্থানে কতটুকু আলো প্রয়োজন, তা অনেক ধরনের নিয়ামকের ওপর নির্ভর করে। যেমন- স্থানের ধরণ, আয়তন, গুরুত্ব ইত্যাদি।

তবে বাংলাদেশ জাতীয় বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি)-তে ভবনে কী ধরনের আলো ব্যবহার করা উচিৎ, তা নিয়ে কিছু নির্দেশনা দেয়া আছে।

অ্যাডেক্স লাইটিং সিস্টেম লিমিটেড নামক কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারানা আলী বলেন, আলোর ক্ষেত্রে ঘরে কী ধরনের আসবাবপত্র আছে, ঘরটি কোনো কাজে ব্যবহার করা হবে, তা আয়তন বা ভবনটি কী দিয়ে তৈরি ইত্যাদি দেখতে হয়।

ধরা যাক, কোনো অফিসের আয়তন এক শ’ বর্গ ফুট, সেক্ষেত্রে সেখানের অভ্যন্তরীণ আলোর মাত্রা আনুমানিক ৭৪ থেকে ২১০ ওয়াটের মাঝে থাকতে হবে।

আবার ভবনের বাইরের আলোর ক্ষেত্রে এটি হওয়া উচিৎ ৪৯ থেকে ৯১ ওয়াটের মাঝে।

‘তবে এর কোনোটাই সুনির্দিষ্ট না’ বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের কভেন্ট্রি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করা তারানা আলী।

কৃত্রিম আলোর শহর ঢাকা
সর্বশেষ ২০১৬ সালে করা ‘ওয়ার্ল্ড অ্যাটলাস অব আর্টিফিশিয়াল নাইট স্কাই ব্রাইটনেস’ নামে এক গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বের ৮০ শতাংশ মানুষ আকাশ জুড়ে থাকা কৃত্রিম আলোর নিচে বসবাস করে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের ৯৯ শতাংশ মানুষ ওই আলোর জন্য রাতের প্রকৃত চিত্র প্রায় দেখতেই পায় না।

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আলো দূষণের ভয়াবহতা কতটা, সে সম্বন্ধে সাম্প্রতিক সময়ে করা বিশদ কোনো গবেষণা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে ২০০৩ থেকে ২০১৩ সাল, এই ১০ বছরের তথ্য নিয়ে করা ‘নেক্সাস বিটুইন লাইট পলিউশন অ্যান্ড এয়ার টেম্পারেচার: আ স্টাডি অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক গবেষণায় দেখা গেছে, আলো দূষণ বাড়ছে বাংলাদেশে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুল ইসলামের করা সেই গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০০৩ সালে সমগ্র বাংলাদেশের মাত্র সাত দশমিক এক শতাংশ এলাকায় আলো দূষণ হতো। কিন্তু এক দশক পরে আলো দূষণ বেড়ে হয়েছে ২৫ দশমিক চার শতাংশ।

সেখানে বলা হয়েছে, ২০০৩ সালে শহর এলাকাগুলোতে আলো দূষণ লক্ষ্য করা যেত। কিন্তু ২০১৩ সালে সেই দূষণ শহরতলি পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।

গবেষণা অনুযায়ী, আলো দূষণের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। ঢাকার পরেই আছে চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট, রাজশাহী, যশোর, রংপুরের নাম।

আলো দূষণের অন্যতম উৎস বিলবোর্ড?
ঢাকাসহ সারাদেশের যে আলো দূষণের পেছনে সড়কবাতির পাশাপাশি বিলবোর্ডের প্রত্যক্ষ ভূমিকা আছে বলে মনে করেন বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞরা।

ওইসব বিলবোর্ড ও সড়কবাতির কারণে প্রচুর সড়ক দুর্ঘটনাও হয় বলে মনে করেন তারা।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়- বুয়েটের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো: হাদিউজ্জামান বলেন, ‘ডেস্ট্রাক্টিভ ড্রাইভিংয়ের অন্যতম কম্পোনেন্ট শহরের যত্রতত্র জুড়ে থাকা বিলবোর্ড। এর আলো ক্ষণে ক্ষণে পরিবর্তন হয় এবং তাতে বিজ্ঞাপন চলে। এতে ড্রাইভারদের মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটে।’

‘আমাদের বিলবোর্ডগুলোতে এত উচ্চ মানের কেলভিনযুক্ত আলো থাকে যে দিনের বেলায়ও বিলবোর্ডগুলো স্পষ্ট দেখা যায় এবং রাতে তা আরো প্রকট হয়ে চোখে অস্বস্তি তৈরি করে। এগুলা দুর্ঘটনার জন্যও দায়ী,’ বলেন নগর পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবিব।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুল ইসলামের বক্তব্যও একই।

তিনি বলেন, উন্নত যেকোনো দেশে বিলবোর্ডের জন্যও একটা স্ট্যান্ডার্ড লুমেন থাকে, সেই অনুযায়ী তাদেরকে এসব স্থাপন করতে হয়।

‘কিন্তু আমাদের দেশে তো কোনো নিয়ম নেই, আলো দূষণ বিষয়ক সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা নেই। সড়কবাতি বা বিলবোর্ডের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে এখনো কোনো নির্দেশনা নেই।’

তিনি বলেন, বাইরের যে লাইট, তা তো আকাশের দিকেও যায়, সড়কের দিকেও আসে, সেগুলো কিভাবে বসাতে হবে, বিলবোর্ড কেমন হবে, তা নিয়ে কোনো স্ট্যান্ডার্ড ফিক্স করা নাই।

‘আপনি যদি কোনো বিলবোর্ডের সামনে গিয়ে দাঁড়ান, দেখবেন যে চোখ ধাঁধিয়ে যাবে। এমনকি রিকশা করে কোনো বিলবোর্ড ক্রস করলেও আপনার ঠিক এমনই অনুভূত হবে,’ তিনি যোগ করেন।

মানবদেহে অতিরিক্ত আলোর প্রভাব
অতিরিক্ত আলো মানুষের শরীরে কী ধরনের প্রভাব ফেলে জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা: লেলিন চৌধুরী বলেন, লাইট পলিউশন নিয়ে আমাদের দেশে কোনো কথা হয় না। কিন্তু এটা যে কি পরিমাণ স্বাস্থ্যহানি ঘটায়, আমাদের ধারণ নাই।

তিনি বলেন, ‘মানুষের দেহে একটা জৈব ঘড়ি আছে, যা সূর্য ওঠা এবং ডোবার সাথে সম্পর্কিত। কিন্তু এই অনাহূত আলোর জন্য ঘড়ির কাজে ব্যাঘাত ঘটে।’

আর মস্তিষ্ক যখন দিন-রাতের পার্থক্য বুঝতে পারে না, তখন নানা ধরনের শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি বিভিন্ন মানসিক ব্যাধিও দেখা দেয়। যেমন ‘অতিরিক্ত আলোতে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, প্রেশার বেড়ে যায়, ডায়াবেটিসসহ নানা সমস্যা হয়।’

কিন্তু চলাফেরা ও নিরাপত্তার জন্য রাস্তাঘাটে আলো থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। তবে তার প্রভাব কোনোভাবে বসতবাড়িতে পড়তে পারবে না।

বসবাসের জায়গায় উজ্জ্বল আলো দেয়া যাবে না, তাতে মানুষের ঘুমের সমস্যা হয়। হাসপাতাল এরিয়াতে দেয়া যাবে না, তাতে রোগীদের অসুবিধা না হয়।

উজ্জ্বল আলো লাইব্রেরিতেও থাকতে পারবে না। সেজন্যই লাইব্রেরিতে সাধারণত উজ্জ্বল আলো থাকে না। লাইব্রেরির বাতিগুলো এমনভাবে দেয়া হয়, যা শুধু বইয়ের পাতার ওপরই পড়ে।

‘অতি আলো চোখে পড়লে মানুষ বিরক্ত হয়। সেজন্যই শাস্তি দেয়ার জন্য আসামিকে আলোর মাঝে রাখা হয়, কারণ এটা মারাত্মক যন্ত্রণাদায়ক,’ ডা. চৌধুরী যোগ করেন।

আলোতে পাখিসহ বাকিদেরও কষ্ট
অনেকেই আছেন, যারা লাইট জ্বেলে ঘুমাতে পারেন না। যদি আলোতে ঘুমাতেও হয়, তাহলে তারা স্লিপিং মাস্ক বা চোখে কোনো কাপড়ের আবরণ দিয়ে ঘুমান।

এখন, মানুষের না হয় চোখে আবরণ দেয়ার উপায় আছে। কিন্তু অন্য প্রাণীদের কি আছে? উত্তর না, নাই।

শহরাঞ্চলে গাছপালা কমে যাওয়ায় এমনিতেই পাখিদের আবাসস্থলের পরিমাণ কমছে। এর মাঝে এই বিভিন্ন ধরনের আলোর কারণে তাদের জীবনচক্র ব্যাহত হচ্ছে।

পিপল ফর এনিম্যাল ওয়েলফেয়ার বা প’ নামক এক প্রাণী কল্যাণ সংগঠনের চেয়ারম্যান রাকিবুল হক এমিল বলেন, ‘লাইটের কারণে পাখিদের জন্য রাত নামে না।’

তিনি মনে করেন যে ঢাকায় আগে যে সোডিয়াম লাইট ছিল, ‘তা পাখিদের জন্য অনেক সুদিং ছিল। কিন্তু এখনকার এলইডি লাইটগুলো ওদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক।’

‘আর লাইট থেকে বাঁচতে ওরা যে গাছের পাতায় আড়াল নিবে, গাছ কমে যাওয়ায় সেই উপায়ও নাই এখন, তাই ভবনের কোণায় কোণায় ওদেরকে আশ্রয় নিতে হয়।’

অতিরিক্ত আলোতে শুধু পাখি না, বিভিন্ন পোকামাকড়ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক সময়ই কোনো কোনো বিলবোর্ডের নিচে তাকালে দেখা যায় যে বিভিন্নরকম পোকামাকড় মরে পড়ে আছে।

আলোকদূষণ রোধে করণীয় কী?
আলো দূষণ থেকে বাঁচার জন্য এই মুহূর্তে ‘লুমেন কন্ট্রোল’ করার বিকল্প নেই।

অধ্যাপক সাইফুল ইসলামের ভাষ্য, ‘লুমেন কন্ট্রোল করার পাশাপাশি রাত ১০টার পর অপ্রয়োজনীয় বাতি বন্ধ করতে হবে, যাতে তা রাতের স্বাভাবিকতা ব্যাহত না করে।’

সেইসাথে, অবশ্যই সড়ক বাতির ওপর শেড দিতে হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। নয়তো ওই আলো আকাশের দিকে বিচ্ছুরিত হয়ে প্রাণীদের বিভ্রান্ত করে।

কিন্তু বিলবোর্ডে যেহেতু শেড দেয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই, সেক্ষেত্রে এগুলো স্থাপনের ক্ষেত্রে আরো বেশি সতর্ক হওয়া বলে মনে করেন তারা।

তবে সবচেয়ে বেশি জোর দেন আইনের প্রয়োগের বিষয়টির ওপর।

কারণ জাতীয় পরিবেশ নীতি ২০১৮-তে আলো দূষণ সম্বন্ধে স্পষ্ট করে বলা আছে যে ‘আলোকদূষণ রোধ করিতে হইবে।’

পরিবেশ অধিদফতরের বক্তব্য
নীতিমালায় উল্লেখ থাকলেও পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালায় আলো দূষণ নিয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। সেজন্য খুব শিগগিরই বিধিমালা সংশোধন করা হবে বলে জানায় পরিবেশ অধিদফতর।

পরিবেশ অধিদফতরের পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক ড. মু: সোহরাব আলি বিবিসিকে বলেন, যত সময় যাচ্ছে, তত বেশি নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আসছে।

‘পলিসিতে এটি বলা আছে, কিন্তু এর জন্য কোনো বিধিমালা করা হয়নি এখনো। আমায় তো একটা স্ট্যান্ডার্ড সেট করে দিতে হবে যে আপনি এর নিচে বা উপরে যাবেন না। আইন প্রয়োগ করতে হলে আগে আমাকে মাপতে হবে যে বেজলাইনের উপরে আছে না কি নিচে আছে।’

তিনি জানান, ‘এ বছর অধিদফতর সেই বিধিমালা সংশোধন করবে। কিন্তু সংশোধন করতে “সময় লাগবে। কারণ অনেক পলিসি মেকার, এক্সপার্টদের সাথে কথা বলতে হবে।’

এত বছরেও বিধিমালা না হওয়ার কারণ সম্বন্ধে তিনি বলেন, ‘এর মাঝে ২০২৩ সালে পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা সংশোধন হয়েছে একবার। এগুলো লম্বা প্রক্রিয়া, করতে সময় লাগে। অনেক কনসাল্টেশন করতে হয়।’

তিনি জানান, এখন আমরা আবার আপডেটের কাজ শুরু করেছি, সেখানে অ্যাড্রেস করব।

বিশ্ব ব্যাংকের পাঁচ বছরমেয়াদী একটি প্রকল্পের আওতায় এটি করা হবে।

রাজশাহী শহরের ঝাড়বাতির মতো দেখতে সড়কবাতি নিয়ে পরিবেশবিদদের সমালোচনা দীর্ঘদিনের। কারণ ওই বাতিগুলোয় কোনো শেড নেই এবং বাতিগুলোর ঘনত্বও বেশি।

ওই ধরনের প্রকল্পের অনুমোদন দেয়ার ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদফতরের ভূমিকা রয়েছে বলে অনেকে মনে করেন।

এ নিয়ে সোহরাব আলি বলেন, ‘আমাদের কাছ থেকে অনুমতি নেয় না তারা। কোনো প্রকল্পের জন্য পরিবেশের ছাড়পত্র নিচ্ছে, আলাদা করে লাইটের জন্য নেয় না।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d