আসছে আইফোন ১৬, দাম ৭৯৯ ডলার থেকে শুরু
অ্যাপলের সর্বশেষ ঘোষণা মতে ১২৮ গিগাবাইটের আইফোন ১৬’র দাম হবে ৭৯৯ ডলার (প্রায় ৯৫ হাজার ৮৮০ টাকা)। আইফোন ১৬ প্লাস (১২৮ জিবি) মডেলের দাম ৮৯৯ ডলার (প্রায় এক লাখ সাত হাজার ৮৮০ টাকা)।
আইফোন ১৬ বাজারে আনার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে অ্যাপল। ‘ইটস গ্লোটাইম’ নামের অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটি তাদের বহুল প্রত্যাশিত ফ্ল্যাগশিপ ফোনের নতুন মডেলের বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।
নতুন আইফোনের উন্নত হার্ডওয়্যার, বর্ধিত এআই সক্ষমতা ও আরও কার্যকর ডিজাইনের ওপর জোর দিয়েছে অ্যাপল।
অ্যাপল জানিয়েছে, এটাই জেনারেটিভ এআই সক্ষমতাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে সক্ষম প্রথম আইফোন। অ্যাপলের দাবি, মুখের ভাষা ব্যবহার করেই আইফোন ১৬’র এআই সক্ষমতাকে কাজে লাগানো যাবে।
নতুন ডিভাইসটিতে বেশ কিছু হার্ডওয়্যার আপডেট রয়েছে। ফোনটি দেখতে এর আগের মডেল আইফোন ১৫ এর মতোই, তবে এর ডিজাইনে কিছু সূক্ষ্ম পরিবর্তন আনা হয়েছে।
অ্যাপল জানিয়েছে, নতুন আইফোনের পাশাপাশি অ্যাপল ওয়াচ সিরিজ ১০ ও এয়ারপড ৪-ও আসছে বাজারে।
যেসব মডেল থাকছে
আইফোন ১৬, ১৬ প্লাস, ১৬ প্রো ও ১৬ প্রো ম্যাক্সের ঘোষণা দিয়েছে অ্যাপল। বেশ কয়েকটি নতুন রঙে আইফোন ১৬’র ডিভাইসগুলো পাওয়া যাবে, যার মধ্যে আছে আল্ট্রামেরিন, টিল, গোলাপি, কালো ও সাদা।
প্রো মডেলের ডিসপ্লের আকার সামান্য বাড়ছে। আইফোন ১৬ প্রোতে ৬.৩ ইঞ্চি স্ক্রিন ও প্রো ম্যাক্সে ৬.৯ ইঞ্চি স্ক্রিন থাকবে।
দাম
আইফোন ১৬ মডেলের ফিচার। ছবি: অ্যাপল
অ্যাপলের সর্বশেষ ঘোষণা মতে ১২৮ গিগাবাইটের আইফোন ১৬’র দাম হবে ৭৯৯ ডলার (প্রায় ৯৫ হাজার ৮৮০ টাকা)। আইফোন ১৬ প্লাস (১২৮ জিবি) মডেলের দাম ৮৯৯ ডলার (প্রায় এক লাখ সাত হাজার ৮৮০ টাকা)।
টাকার মানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বোচ্চ বিনিময় মূল্য (১ ডলার = ১২০ টাকা) ধরা হয়েছে।
আগামী শুক্রবার থেকে আইফোন ১৬ ও আইফোন ১৬ প্লাস প্রিঅর্ডার করা যাবে। ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ফোনগুলো মার্কিন বাজারে পাওয়া যাবে।
তবে বাংলাদেশের বাজারে কবে এই ফোন পাওয়া যাবে তা এখনো নিশ্চিত নয়।
ডিজাইনে যেসব পরিবর্তন
আইফোন ১৬ প্রো।
আইফোন ১৬’র ডিজাইনে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ফোনের পেছনের দুইটি রিয়ার ক্যামেরা (আজকাল সেলফি ক্যামেরা নামেও পরিচিত) আবারও আগের মতো ওপর-নিচে বসানো হয়েছে। আইফোন ১৫, ১৪ ও ১৩ মডেলে এটি কোনাকুনি ভাবে বসানো হয়েছিল। সর্বশেষ আইফোন ১২ মডেলে এভাবে ক্যামেরার অবস্থান ছিল।
এই পরিবর্তনের মাধ্যমে আইফোনের ‘স্প্যাশিয়াল ভিডিও’ ফিচারের কার্যকারিতা বাড়বে। তবে এ ধরনের ভিডিও উপভোগ করতে অ্যাপল ভিশন প্রো হেডসেট প্রয়োজন।
আইফোন ১৫ মডেলের অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলো নতুন মডেলে অপরিবর্তিত থাকছে, যেমন চতুর্ভুজাকৃতির অফ-ফ্রেম, রিয়ার গ্লাসের মাধ্যমে ম্যাগসেফ ওয়ারলেস চার্জিং সুবিধা, ফ্রন্ট ক্যামেরা ও ফেস আইডি সেন্সরের জন্য অ্যাপলের ডায়নামিক আইল্যান্ড কাটআউট ডিজাইন।
অ্যাকশন বাটন
আইফোন ১৫ প্রোর মতো ১৬ মডেলের ফোনগুলোতেও একটি অ্যাকশন বাটন থাকছে, যা কাস্টোমাইজ করা সম্ভব। আপনার পছন্দ অনুযায়ী এই বাটনের মাধ্যমে ক্যামেরা চালু বা নোটিফিকেশন সাইলেন্ট করার মতো আরও কিছু কাজ করতে পারবেন।
ক্যামেরা কন্ট্রোল বাটন
আইফোন ১৬ মডেলে থাকছে একটি নতুন ক্যামেরা কন্ট্রোল ফিচার। ফোনের এক পাশের বাটন চেপে এই ফিচার ব্যবহার করা যাবে। অ্যাপলের কর্মকর্তাদের মতে, এর মাধ্যমে ইউজাররা ‘ভিজুয়াল ইন্টেলিজেন্স’ সেবা পাবেন।
উদাহরণ হিসেবে বলেন, ক্যামেরা কন্ট্রোলে ক্লিক করে একটি রেস্টুরেন্টের দিকে ফোনটি তাক করলে আইফোন ১৬ সেই রেস্টুরেন্টের রিভিউ, মেনু এবং কীভাবে রিজার্ভেশন পাওয়া যাবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাবে। একই ভাবে, পোষা বেড়ালের দিকে তাক করে সেটি কোন জাতের বেড়াল, বা কোনো ভবন বা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার দিকে তাক করে এই বাটন চাপলেও সেগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।
চিপসেট
আইফোন ১৬ মডেলের ফিচার। ছবি: অ্যাপল
আইফোন ১৬ ও ১৬ প্লাস মডেলে থাকছে এ১৮ চিপ। প্রোতে থাকছে এ ৮ প্রো চিপ। এই প্রসেসরগুলো অ্যাপলের এআই স্যুট ‘অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স’ পরিচালনায় ব্যবহার হবে। শক্তিশালী এই প্রসেসরগুলো আগে শুধু আইফোন ১৫ প্রোর সঙ্গে যুক্ত ছিল।
ক্যামেরা
আইফোন ১৬ প্রো মডেলে ৪৮ মেগাপিক্সেলের আল্ট্রাওয়াইড সেন্সর ও ৫এক্স টেলিফটো ক্যামেরা থাকছে। সঙ্গে থাকবে ‘টেট্রাপ্রিজম ডিজাইন’। অ্যাপল জানিয়েছে, এই আইফোন ১৬ প্রোর মাধ্যমে ফোরকে ১২০ এফপিএস ডলবি ভিশন অথবা স্লো-মো ভিডিও ধারণ করা যাবে।
আইফোন ১৬ মডেলের মূল ক্যামেরাটি একটি ৪৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। এতে ১২ মেগাপিক্সেল ২এক্স টেলিফটো অপশন ও ১২ মেগাপিক্সেল আলট্রা ওয়াইড ক্যামেরা সুবিধা রয়েছে। সঙ্গে থাকছে অটোফোকাস ও ম্যাক্রো ফটোগ্রাফি ফিচার।
আইফোনের প্রোডাক্ট ম্যানেজার পীযুষ প্রতীক বলেন, ‘মেইন ক্যামেরার ইমেজ পাইপলাইন একটি সুপার-হাই রেজোল্যুশনের ছবির সঙ্গে একটি লাইট ক্যাপচার অপটিমাইজ করা ছবিকে ফিউজ করতে পারে। এ ক্ষেত্রে প্রতি চারটি পিক্সেলকে একত্র করে অপেক্ষাকৃত বড় একটি পিক্সেলে রূপান্তর করা হবে। এর ফলাফল হল একটি ২৪ মেগাপিক্সেলের ছবি, যার মধ্যে গুণগত মান, আলো ও ডিটেইলের ভারসাম্য রক্ষা হয়, এবং একইসঙ্গে, এর আকারও ছোট হয়। যার ফলে খুব সহজেই তা সংরক্ষণ ও শেয়ার করা যায়।’
আইফোন ১৬ আগের মডেলগুলোর তুলনায় পানি ও ধুলা থেকে আরও সুরক্ষিত থাকবে বলে দাবি করেছে অ্যাপল। চার ফলে এটি আরও টেকসই হবে।