Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Trending

আস্থা সংকটে বিনিয়োগে মন্দা

দেশে বিনিয়োগে মন্দা চলছে। উচ্চ সুদের হার, উচ্চমূল্যেও বিদ্যুৎ-গ্যাস-জ্বালানি সংকট, ডলার সংকটে টাকার অবমূল্যায়ন, দুর্নীতি, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ নানা কারণে দেশের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের মধ্যে আস্থাহীনতা চরমে। এ কারণে তাঁরা বিনিয়োগে আগ্রহ পাচ্ছেন না। আবার এসঅ্যান্ডপি, মুডিস ও ফিচ রেটিংয়ে বাংলাদেশের ঋণমানের অবনমনসহ নানা সূচকের দুর্বলতার কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরও সাড়া নেই কাঙ্ক্ষিত মাত্রায়।

এর ফলে বিনিয়োগ কমে এখন গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থায় রয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসেই নেট এফডিআই কমেছে ২০.১৫ শতাংশ।

ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যবসায় পরিবেশ, আইন-শৃঙ্খলার উন্নতিসহ আস্থার সংকট কাটিয়ে উঠতে না পারলে দেশি-বিদেশি কোনো বিনিয়োগই আসবে না। এদিকে বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি তাদের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ‘রক্ষণশীল’ জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে।

একই সঙ্গে বলেছে, এ বছর বাংলাদেশে নতুন করে আরো ৩০ লাখ মানুষ অতিদরিদ্র হবে। অতিদরিদ্রের হার বেড়ে ৯.৩ শতাংশে পৌঁছবে। মূলত বিনিয়োগ না হওয়ার ফলে নতুন কর্মসংস্থান না হওয়া এবং মানুষের আয় না বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতেই অতিদরিদ্রের হার বাড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা, বিশ্বব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ এবং ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশ বিনিয়োগের দিক থেকে একটি ক্রান্তিকাল পার করছে।

দেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করছেন না, বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরও সাড়া কম। গত কয়েক বছরের দুর্বল ব্যবস্থাপনা, সুশাসনের ঘাটতি, ঋণ কেলেঙ্কারি, অর্থপাচার, ডলার সংকট, রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে খরচ বেড়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন দুর্বলতার ধারাবাহিকতায় এমনিতেই ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ কিংবা ব্যবসা প্রসারে ‘ওয়েট অ্যান্ড সির’ মধ্যে ছিলেন।

জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর আশা করা হয়েছিল পরিস্থিতির উন্নতি হবে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এরপর মব সংস্কৃতির কারণে আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতিসহ একের পর এক বিনিয়োগ প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়। এর সঙ্গে বড় ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের নানাভাবে হয়রানি করা, মামলা-হামলা, কারখানায় অসন্তোষ, কারখানা বন্ধ করা, লেনদেন-এলসি খোলায় কড়াকড়ি, ব্যাংকগুলো নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণাসহ সার্বিকভাবে একটি ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ওই রেশ এখনো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। ফলে বিনিয়োগে যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে, সেটি এখনো বহাল রয়েছে। নতুন করে নির্বাচন দিয়ে রাজনৈতিক সরকার আসার জন্য ব্যবসায়ীদের অপেক্ষার বিষয়টিও সামনে এসেছে। বলা হচ্ছে, রাজনৈতিক সরকার এলে দীর্ঘ সময় নীতির স্থায়িত্ব থাকবে। এতে উদ্যোক্তারা ব্যবসার পরিকল্পনা করতে পারবেন। স্বল্পকালীন সরকারের সময়ে একটি স্থিতিশীল ব্যবসার গ্যারান্টি পাচ্ছেন না তাঁরা। এর ফলে দেশি বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও এগিয়ে আসছেন না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ও যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক অ্যাট কোর্টল্যান্ডের অধ্যাপক ড. বিরূপাক্ষ পাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বর্তমান সরকারের সময়ে সার্বিকভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যটা খারাপ হয়েছে। অর্থনীতিতে এ সরকারের পারফরম্যান্স সন্তোষজনক নয়। এ সময়ে কলকারখানা বন্ধ হওয়া কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মতো অবস্থা। আর বাংলাদেশ এমন কোনো বিপর্যয়ে যায়নি যে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাবে। অর্থনীতির যে জায়গাটায় সরকারের মনোযোগ বাড়ানো দরকার, সে জায়গাটায় মনোযোগ বাড়ায়নি। কিছু রাজনৈতিক আদর্শিক প্রশ্ন, কিছু নৈতিক প্রশ্ন, কিছু ভাষাগত সংযোজন-বিয়োজন, সেগুলোর পেছনে মনোযোগ, সমাজের মধ্যে কিছুটা বিশৃঙ্খলা, কিছুটা মব কালচার এগুলো সৃষ্টি হয়েছে, তাতে ব্যবসা কমেছে আর নতুন বিনিয়োগও থমকে গেছে। এসব কারণে বেকারত্ব বেড়েছে।’

জানা যায়, বিনিয়োগ না হলে বা ব্যবসার সম্প্রসারণ না হলে কাজের সুযোগ কমে যায়। বেকারত্ব বাড়ে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়। এর ফলে মানুষ গরিব হয়। দুই দিন আগে বিশ্বব্যাংক তাদের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দিয়েছে যে চলতি বছরে বাংলাদেশে নতুন করে আরো ৩০ লাখ মানুষ অতিদরিদ্রের তালিকায় যুক্ত হবে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, অতিদারিদ্র্যের হার ৭.৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৫ সালে ৯.৩ শতাংশ হবে। জাতীয় দারিদ্র্য হার গত বছর ছিল সাড়ে ২০ শতাংশ। ২০২৫ সালে তা বেড়ে ২২.৯ শতাংশ হবে। বাংলাদেশের ২০২২ সালের জনশুমারি অনুসারে, দেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটির বেশি। বিশ্বব্যাংকের হিসাবটি বিবেচনায় নিলে ২০২৫ সাল শেষে অতিগরিব মানুষের সংখ্যা হবে এক কোটি ৫৮ লাখের মতো। অন্যদিকে জাতীয় দারিদ্র্য হার বা গরিব মানুষের সংখ্যা হবে তিন কোটি ৯০ লাখের মতো। ফলে দেখা যাচ্ছে যে বিনিয়োগ স্থবিরতার নেতিবাচক প্রভাব মানুষের আয়হীনতার পাশাপাশি দারিদ্র হারের ওপরও পড়তে যাচ্ছে।

সম্প্রতি সরকার দেশে একটি বিনিয়োগ সম্মেলন করেছে। এতে অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী ও ব্র্যান্ড অংশ নেয়। ওই সম্মেলনে আশা প্রকাশ করা হয় যে বাংলাদেশ ২০৩৫ সালে সিঙ্গাপুর বা থাইল্যান্ড হবে অথবা হওয়ার পথেই রয়েছে। তবে দ্য গ্লোবাল ইকোনমির তথ্যভাণ্ডার থেকে দেখা যায় যে ‘রিটার্ন অন ইকুইটি’ বা ব্যবসায় মূলধন অনুপাতে লাভের অংশের হিসাবে বৈশ্বিক তালিকায় ১৩৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৫৩তম। ২১ বছরের গড় হিসাবে এটি ১৩.৮৫ শতাংশ।

কিন্তু ‘রিটার্ন অন অ্যাসেট’ তালিকায় বাংলাদেশ নেমে পড়ে ৯৬তম স্থানে, যেখানে রিটার্ন ০.৯৬ শতাংশ। এটি ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানেরও চেয়ে কম। বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুর হতে হয়, তাহলে প্রতিবছর প্রবৃদ্ধির হার হতে হবে ৩৩ শতাংশের ওপর, যা পৃথিবীতে আজ পর্যন্ত কোথাও অর্জিত হয়নি।

অর্থনীতি বিশ্লেষক মামুন রশীদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সাধারণত অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে নীতির ধারাবাহিকতার সন্দেহে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করতে চান না। আর তাঁরা সাধারণত দেশি বিনিয়োকারীদেরও দেখেন। সুদের হারের ঊর্ধ্বগতি, তারল্য সংকট, বেশির ভাগ ব্যাংকের নিজেদেরই সমস্যা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইন্সপেকশনে কড়াকড়ি, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, করনীতির দুর্বলতা, অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার দুর্বলতা, ডলারের ঊর্ধ্বগতিতে টাকার অবমূল্যায়ন কত হতে পারে—এ ব্যাপারে মোটামুটি একটা দৃশ্যমান নজরদারি না রেখে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করতে চান না।’

তিনি প্রথমত, একটি সরকারের অন্তর্বর্তী অবস্থা; দ্বিতীয়ত, স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করছেন না জানিয়ে বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে বিদেশিরা কোন সাহসে আসবেন? এখানে রিটার্ন অন ইকুইটি বা ব্যবসা থেকে মূলধনের অনুপাতে লাভের অংশ অন্যান্য দেশের তুলনায় খুবই কম। সেই ক্ষেত্রে পুরনো বিনিয়োগকারী ছাড়া নতুন সম্ভাবনা অন্যান্য দেশের তুলনায় খুবই ক্ষীণ।’

অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা বলেন, বাংলাদেশে যখন বিদেশি উদ্যোক্তাদের সামনে বিনিয়োগ সম্মেলন চলছিল, তখন বাটা, কোকা-কোলাসহ বিভিন্ন বিদেশি ব্র্যান্ডের প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর হচ্ছিল মব সংস্কৃতির কারণে। এই বার্তাও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বে। এর আগে বিশ্বখ্যাত সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বাংলাদেশ এ সংবাদের প্রতিবাদ করলেও ওই গণমাধ্যম প্রতিবাদটি এখনো ছাপেনি। ফলে নানাভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এটিও বিনিয়োগে আস্থার সংকট তৈরি করে।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট মীর নাসির হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিনিয়োগে বাংলাদেশে প্রচুর সম্ভাবনা আছে। বড় বাজার, প্রচুর লোকের দেশ। তবে এখানে গ্যাসের সংকট রয়েছে। এটা নিশ্চিত করতে হবে। অনেক পুরনো কারখানা গ্যাস পাচ্ছে না। আর নতুন সম্প্রসারণেও গ্যাস লাগবে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের জন্য শিল্পের প্রসার দরকার। এখন মার্কিন শুল্কনীতির পরিবর্তনের কারণে চীনের বেশ কিছু ব্যবসা ও শিল্প এখানে আসার সুযোগ তৈরি হতে পারে। তবে তার জন্য ব্যবস্থাপনাটা ঠিক করে দিতে হবে। অবকাঠামো, কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস ইত্যাদি ক্ষেত্রে উন্নতি করতে হবে।’

তিনি গ্যাসের দাম বাড়ানোর ফলে নতুন যাঁরা বিনিয়োগ করবেন, তাঁদের ৩৩ শতাংশ বেশি দামে গ্যাস কিনতে হবে জানিয়ে বলেন, ‘এটা নতুনদের উৎসাহিত করবে না। কারণ একই শিল্প যদি কম দামে পায়, আবার নতুন উদ্যোক্তাকে আরো বেশিতে কিনতে হয় তাহলে তার প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমে যাবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংক কয়েক দিন আগে বিনিয়োগের সর্বশেষ তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায়, ২০২৪ সালে দেশে মোট নেট এফডিআই এসেছে ১.২৭ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১৩.২৫ শতাংশ কম। ২০২৩ সালে এই অঙ্ক ছিল ১.৪৬ বিলিয়ন ডলার।

এর আগে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) বিদেশি বিনিয়োগ আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে কমে চার ভাগের প্রায় এক ভাগে নেমেছিল। এ সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ আগের বছরের চেয়ে ৭১ শতাংশের মতো কমে গিয়েছিল। ওই ছয় মাসে মাত্র ২১ কোটি ৩০ লাখ ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ আসে। গত অর্থবছরের একই সময়ে পরিমাণ ছিল ৭৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার।

পর্যালোচনায় জানা যায়, বিনিয়োগ না হলে অর্থনীতিতে কাঙ্ক্ষিত গতি ফিরবে না। মানুষের কর্মসংস্থান হবে না। আয়ও বাড়বে না। বেসরকারির পাশাপাশি চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়নের গতিও শ্লথ। কাটছাঁট করা হয়েছে বরাদ্দ। এতেও তৃণমূলের শ্রমজীবী মানুষের আয়ের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto