Bangladesh

আ.লীগের নির্বাচনি ইশতেহার ২০১৮: দুর্নীতি নির্মূল ও সুশাসনের অঙ্গীকার উপেক্ষিত

প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন -মতিয়া চৌধুরী

আওয়ামী লীগ ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে। টানা তিন মেয়াদের এই সরকারের পৌনে পাঁচ বছর ইতোমধ্যে অতিবাহিত হয়েছে। এখন চলছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি। কিন্তু আওয়ামী লীগ সর্বশেষ অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তাদের নির্বাচনি ইশতেহারে দেশবাসীর কাছে যে ওয়াদা করেছিল, তার কতটা পূরণ হয়েছে-দ্বাদশ নির্বাচনের আগে সেই প্রশ্ন উঠেছে।

এদিকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নতুন নির্বাচনি ইশতেহার প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার প্রণয়ন উপকমিটির প্রথম সভায় দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, সময়ের সঙ্গে বাস্তবতার আলোকে আগামী নির্বাচনি ইশতেহার প্রস্তুত করা হবে। তিনি কমিটির সদস্যদের বলেন, আমাদের অ্যাকশনে যেতে হবে। এমন ইশতেহার করতে হবে, যাতে নিষেধাজ্ঞা, পালটা নিষেধাজ্ঞার বিষয় ভাবতে হবে। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব ভাবতে হবে। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ, সর্বোপরি ২০৪০ সাল আমাদের মাথায় রাখতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়ে গেছে, এখন স্মার্ট বাংলাদেশ করতে হবে।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের ইশতেহার প্রণয়ন উপকমিটির এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং ইশতেহার প্রণয়ন উপকমিটির আহ্বায়ক কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, বিগত নির্বাচনগুলোয় দেওয়া ইশতেহার মূল্যায়ন করে এবারের নির্বাচনি ইশতেহার তৈরি করা হবে। তবে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহারে গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। কৃষিমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক সমস্যার কারণে কঠিন সময় পার করছি। তাই আগামী দিনে কৃষি, সেবা, শিল্প খাতসহ বিভিন্ন খাতে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগের ২০১৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহারের মূলকথা ছিল ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’। দলটি তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য জনগণের কাছে কিছু বিশেষ অঙ্গীকার করেছিল। এর মধ্যে ছিল ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ স্লোগান দিয়ে প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণের অঙ্গীকার। ‘তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের সমৃদ্ধি’ স্লোগান দিয়ে তরুণ-যুবসমাজকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর এবং কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তার অঙ্গীকারও ছিল আওয়ামী লীগের ইশতেহারে।

নির্বাচনি ইশতেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ, জাতীয় সংসদকে কার্যকর করা এবং সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ ও মাদক নির্মূলের অঙ্গীকার করেছিল আওয়ামী লীগ। এতে আরও ছিল মেগা প্রকল্পগুলোর দ্রুত ও মানসম্মত বাস্তবায়ন, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ় করা, সার্বিক উন্নয়নে ডিজিটাল প্রযুক্তির অধিকতর ব্যবহার, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা, দক্ষ ও সেবামুখী এবং জবাবদিহিমূলক জনপ্রশাসন, জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, ব্লু-ইকোনমি-সমুদ্রসম্পদ উন্নয়ন এবং নিরাপদ সড়কের নিশ্চয়তা দিয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, গত নির্বাচনের আগে ইশতেহারে আমরা যে অঙ্গীকার করেছিলাম, তা একে একে বাস্তবায়ন করছি। দেশের মানুষ তা লক্ষ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিয়েছেন, যার অসংখ্য দৃষ্টান্ত রয়েছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনি অঙ্গীকার বাস্তবায়নের পথেই আছে। ইতোমধ্যে অধিকাংশ অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করেছে। আর যেগুলো এখনো বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি, তা করা হবে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এসব অঙ্গীকারের দিকে তারা ফিরেও তাকায় না। ভোট নেওয়ার জন্য নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা এবং অঙ্গীকারের কথা বলতে হয় বলেই তারা বলেন।

গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ় করার অঙ্গীকার : আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারের ৩.১ অনুচ্ছেদে ‘গণতন্ত্র, নির্বাচন ও কার্যকর সংসদ’ অংশে বলা হয় : বিগত ১০ বছরে (২০০৯-২০১৮) জাতীয় সংসদই ছিল সব রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু। আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের চলমান প্রক্রিয়াকে আরও জোরদার করব। সংসদকে আরও কার্যকর করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। একই সঙ্গে মানবাধিকার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, গণমাধ্যম, বিচার বিভাগকে আরও শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। কিন্তু গত পৌনে পাঁচ বছরে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ কিংবা জাতীয় সংসদকে আরও কার্যকর করার কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বরং এই সময় বিরোধী দল বিএনপির সংসদ-সদস্যরা জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করে সরে গেছেন।

এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষক সোহরাব হাসান বলেন, এখন জাতীয় সংসদের বিতর্ক নিয়ে জনগণের কোনো আগ্রহ নেই। আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব গণতন্ত্রকে এ অবস্থায় নিয়ে এসেছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করার কথা বলেছে। দুদক ছোট ও মাঝারি দুর্নীতিবাজদের ধরলেও রাঘববোয়ালরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে। তার মতে, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের যে মূল ভিত্তি গণতন্ত্র, তা ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো আরও দুর্বল হয়েছে। নির্বাচনি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এটাই আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ওয়াদার বড় বরখেলাপ। ইশতেহারের ৩.২ অনুচ্ছেদে ‘আইনের শাসন ও মানবাধিকার সুরক্ষা’ অংশে ছিল সর্বজনীন মানবাধিকার সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে কোনো প্রচেষ্টা প্রতিহত করার অঙ্গীকার। আওয়ামী লীগের টানা তিন মেয়াদে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠান হিসাবে র‌্যাব এবং এর সাবেক ও সেসময়কার সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে, যা বাংলাদেশে অতীতে কখনো ঘটেনি। মানবাধিকার ইস্যুতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন ধারাবাহিকভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এর অর্থ প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোকে জনবান্ধব হিসাবে গড়ে তুলতে পারেনি।

র‌্যাব ও প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর উদ্বেগ প্রকাশের কারণে দেশের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করেন বিএনপিসহ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা। জানা যায়, মানবাধিকার ইস্যুতে সরকারের উচ্চপদস্থ একাধিক কর্মকর্তার ভিসা প্রত্যাখ্যান করেছে আমেরিকা।

দক্ষ, সেবামুখী ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসনের অঙ্গীকার : ইশতেহারের ৩.৩ অনুচ্ছেদে দক্ষ, সেবামুখী ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসনের অঙ্গীকার করা হয়েছিল। কিন্তু জনপ্রশাসনের উচ্চপদস্থ ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্তৃক সাধারণ মানুষ এমনকি গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর চড়াও হওয়ার পাশাপাশি মামলা এবং বিভিন্নভাবে হয়রানির নানা তথ্য পাওয়া গেছে আওয়ামী লীগের তৃতীয় মেয়াদের শাসনামলে। সচিবসহ মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ক্ষমতাসীন দলীয় নেতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বক্তৃতা-বিবৃতি দিতেও দেখা গেছে। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি অঙ্গীকার হোঁচট খেয়েছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের অঙ্গীকার : আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারের ৩.৫ অনুচ্ছেদে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের অঙ্গীকার করে বলা হয়, দুর্নীতি একটি বহুমাত্রিক ব্যাধি। পেশিশক্তির ব্যবহার ও অপরাধের শিকড় হচ্ছে দুর্নীতি। যার ফলে রাষ্ট্র ও সমাজজীবনে অবক্ষয় বা পচন শুরু হয় এবং অর্থনীতি, রাজনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রশাসন প্রভৃতি কোনো ক্ষেত্রেই ঈপ্সিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয় না। কিন্তু দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখা এবং জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করার অঙ্গীকার ফলাও করে ঘোষণা হলেও তা বাস্তবায়নে সরকারের কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায়নি।

বার্লিনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) দুর্নীতির ধারণাসূচক ২০২২ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগের বছর বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৩তম। আগেরবারের চেয়ে বাংলাদেশের এক ধাপ অবনমন হয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ১০০ স্কোরের মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে ২৫, যা গতবারের চেয়ে ১ পয়েন্ট কম।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করে আসা বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ব্যাংক সেক্টরের বর্তমান চিত্র টিআই-এর রিপোর্টের সত্যতা প্রমাণ করে। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি চালুর মাধ্যমে দুর্নীতির পরিধি ক্রমান্বয়ে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছিল আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে। কিন্তু সরকারের ঘোষিত এই নীতির প্রতিফলন এ সরকারের তিন মেয়াদেই দেখা যায়নি।

বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পর্যালোচনা, পর্যবেক্ষণ ও তদারকি ভবিষ্যতে আরও জোরদার করার অঙ্গীকার করা হয়েছিল আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে।

দুর্নীতি প্রতিরোধে আইনি ব্যবস্থার পাশাপাশি রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ জোরদার করা হবে। ঘুস, অনুপার্জিত আয়, কালোটাকা, চাঁদাবাজি, ঋণখেলাপি, টেন্ডারবাজি ও পেশিশক্তি প্রতিরোধ এবং দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন নির্মূলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কিন্তু আমেরিকায় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় নেতা ও সংসদ-সদস্যের একাধিক আলিশান বাড়ি ও সম্পদ এবং কানাডায় বেগমপাড়ার যে সংবাদ গণমাধ্যমে ছাপা হচ্ছে, তাতে এ অঙ্গীকার বাস্তবায়ন নিয়ে সব মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে। রাজনীতিক না আমলা-কে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত, তা নিয়ে সরকারি পর্যায়েই বিতর্ক হচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কানাডায় যারা সেকেন্ড হোম বানিয়েছেন, তাদের মধ্যে আমলার সংখ্যা বেশি। আবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে একজন দলীয় সংসদ-সদস্যের এ সংক্রান্ত তথ্য তার কাছে আছে জানিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

স্থানীয় সরকার ও জনগণের ক্ষমতায়নের অঙ্গীকার : গত নির্বাচনের আগে ঘোষিত আওয়ামী লীগের ইশতেহারের ৩.৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছিল ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা পরিষদসহ পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনকে শক্তিশালী করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করা হবে। আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে অধিকতর আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রদান করা হবে। কিন্তু স্থানীয় সরকার ও সুশাসন নিয়ে কাজ করে আসছে-এমন সংগঠনগুলো মনে করছে, প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ তো হয়ইনি, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান না ইউএনও-কার কাছে থাকবে এই (উপজেলা প্রশাসন) প্রতিষ্ঠানের কতৃত্ব, তাও ঠিক করতে পারেনি সরকার। বিষয়টি এখন ঝুলে আছে আদালতে।

সবার সঙ্গে বন্ধুত্বের অঙ্গীকার : ইশতেহারের ৩.৩২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকারের অনুসৃত পররাষ্ট্রনীতির জন্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি ও ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। জাতির পিতার আদর্শ ও সংবিধানের ২৫নং অনুচ্ছেদে বিধিবদ্ধ নীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’-এর আলোকে সব রাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক জোরদার করা হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত আমলের দুর্নীতিগ্রস্ত ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’, ‘অকার্যকর রাষ্ট্র’ প্রভৃতি কলঙ্ক ঘুচিয়ে বাংলাদেশ এখন বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় স্বার্থে অর্থনৈতিক কূটনীতিকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।

কিন্তু কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের দুর্বল পররাষ্ট্রনীতির কারণে বাংলাদেশ কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে এখনো কার্যকর কোনো আশ্বাস পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি সম্পাদনের বিষয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি। বন্ধ হয়নি সীমান্ত হত্যা। র‌্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এবং ভিসানীতি ঘোষণার কারণে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের পররাষ্ট্র নীতি এবং তাদের দাবিকৃত সাফল্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

অবশ্য করোনা মহামারিকে শক্তভাবে মোকাবিলা করে অর্থনীতির চাকা সচল রেখে বাংলাদেশকে বিশ্বদরবারে সম্মানের আসনে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রশংসিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার টানা তৃতীয় মেয়াদের সরকারের আমলে উদ্বোধন হয়েছে বহুলপ্রত্যাশিত পদ্মা সেতু। বাংলাদেশ প্রবেশ করেছে মেট্রোরেলের যুগে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সুবিধা পাচ্ছে রাজধানীর মানুষ। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল এবং কর্ণফুলী টানেলসহ আরও বেশকিছু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
totoslotgacor
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
toto gacor
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor
situs togel
Toto Slot
bacan4d
bacan4d