ইংল্যান্ডে সন্ধান মিলল প্রাচীন পাথরের বৃত্তাকার স্থাপনা
ইংল্যান্ডের ডার্টমুরের প্রাচীন নিওলিথিক যুগের দুটি পাথরের বৃত্তাকার স্থাপনার সন্ধান মিলেছে। স্থানীয় গবেষকদের ধারণা অনুযায়ী, এটা ‘পবিত্র চক্র’ তত্ত্বকে আরও বেশি বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছে। এই চক্রের ধারনা অনুসারে, ডার্টমুরের কেন্দ্রস্থলে বিশেষ একটি বৃত্তাকার স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি হয়েছিল।
এই দুটি নতুন পাথরের বৃত্তের মধ্যে একটি স্টোনহেঞ্জের মতো কিছু বৈশিষ্ট্য ধারণ করে। দ্বিতীয়টি এই পবিত্র চক্রের বাইরে স্থাপিত হয়েছে এবং ধারণা করা হয় এটি হয়তো তীর্থযাত্রীদের প্রবেশপথ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এটি আবিষ্কারের পেছনে রয়েছেন ডেভনের প্রত্নতাত্ত্বিক এবং কাঁচের শিল্পী অ্যালান এন্ডাকট। ২০০৭ সালে তিনি দক্ষিণ ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ পাথরের বৃত্তাকার স্থাপনা ‘সিটাফোর্ড’ আবিষ্কার করেছিলেন। এটি শতাব্দীর মধ্যে ডার্টমুরে প্রথম আবিষ্কৃত পাথরের বৃত্ত যা ‘পবিত্র চক্র’ তত্ত্বকে জোরালো করেছিল।
এন্ডাকট এবং তার দল সম্প্রতি সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও কাজ চালিয়ে গেছেন। তাদের নতুন আবিষ্কারগুলোর মধ্যে একটি মেথেরাল বৃত্ত নামে পরিচিত হয়েছে, যেখানে ২০টি পাথর রয়েছে। বৃত্তটি প্রায় ৪০ মিটার লম্বা এবং ৩৩ মিটার চওড়া।
এই বৃত্তের চারপাশে একটি বাহ্যিক বাঁধেরও নিদর্শন মিলেছে যা নিওলিথিক যুগের হেঞ্জ স্থাপনার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। এটি স্টোনহেঞ্জ, বোডমিন মূরের স্ট্রিপল স্টোনস বা অর্কনি দ্বীপের রিং অব ব্রডগারের মতো।
এন্ডাকট মনে করেন, সেই সময়ে মানুষ দূরবর্তী স্থান থেকে ভ্রমণ করতো। মেথেরালের পাথরের বৃত্ত নির্মাতারা হয়তো স্টোনহেঞ্জ বা অর্কনি সফরও করেছিল। তারা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিল।
দ্বিতীয় বৃত্তটি ডার্টমুরের উত্তরে আইরিশম্যানের প্রাচীর নামে পরিচিত স্থানে অবস্থিত। সেখানে একটি ভেঙে পড়া ডলমেনও পাওয়া গেছে, যা ‘ফলেন ব্রাদার ডলমেন’ নামে নামকরণ করা হয়েছে। এটি বিশ্বযুদ্ধে নিহত ডার্টমুর সম্প্রদায়ের স্মরণে উৎসর্গ করা হয়েছে।
অ্যালান এন্ডাকট ১৯৭০-এর দশক থেকে ডার্টমুরের পাথরের বৃত্ত খুঁজছেন। তিনি আরও বৃত্তাকার স্থাপনার সম্ভাবনা নিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে চান এবং বলেছেন, এই অনুসন্ধানে নতুন প্রমাণ মিলেছে যা আমাদের বুঝতে সাহায্য করবে। তবে আরও প্রশ্নও উত্থাপিত হয়েছে কেন এগুলো তৈরি হয়েছিল। আমাদের গবেষণা এখনও শেষ হয়নি।