USA

ইউক্রেনই পারবে পুতিনকে থামাতে : বাইডেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, পুতিন ইউক্রেনকে সম্পূর্ণ পরাস্ত করতে, ইউক্রেনের গণতন্ত্রকে শেষ করতে ও ইউক্রেনের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে চান। তিনি দেশটিকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলতে চান। আপনারা জানেন, পুতিন কিন্তু ইউক্রেনে থামবেন না। কাজেই কোনো ভুল করা যাবে না। ইউক্রেনই পুতিনকে থামাতে পারে এবং দেশটি তা করবেই।

গতকাল মঙ্গলবার ন্যাটোর ৭৫তম শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় বাইডেন এসব কথা বলেন। ওয়াশিংটন ডিসির রোনাল্ড রিগ্যান ইনস্টিটিউটে সম্মেলনটি শুরু হয়। এই ইনস্টিটিউটেই ১৯৪৯ সালে দ্য নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন (ন্যাটো) যাত্রা শুরু করেছিল।

ন্যাটোর এই সম্মেলন বাইডেনের রাজনৈতিক জীবনের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। গত ২৭ জুন ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম নির্বাচনী বিতর্কে  ভালো করতে না পারায় তিনি চাপে আছেন। ওই বিতর্ক বিপর্যয়ের পর থেকে নিজ দলের সদস্য, অর্থদাতা ও সাধারণ ভোটারদের বড় একটা অংশ বাইডেনের সরে দাঁড়ানোর আওয়াজ তুলেছেন, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে ন্যাটোর সম্মেলনে ইউরোপীয় মিত্রদের নেতাদের সামনে নিজেকে প্রমাণ করার দরকার ছিল বাইডেনের। তিনি তা মোটামুটি ভালোভাবেই পেরেছেন। এ দিন বক্তৃতা দিতে গিয়ে তিনি থেমে যাননি। বড় ধরনের তেমন কোনো ভুলও করেননি।

  ন্যাটো বর্তমানে আগের চেয়ে শক্তিশালী উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, আমেরিকার উভয় দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনপ্রণেতা ও সিনেটর মনে করেন, ন্যাটো আমাদের আগের চেয়ে নিরাপদে রেখেছে। ন্যাটো না থাকলে কী হতে পারে তা আমেরিকার জনগণ জানে।

সামরিক জোটটির ৩২ সদস্যের মধ্যে ২৩টি দেশ নিজেদের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করতে পারছে বলেও জানান বাইডেন। ন্যাটোর নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি দেশকে নিজেদের প্রতিরক্ষা খাতে বাধ্যতামূলকভাবে এই পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয়।

এটা উল্লেখ করার মধ্য দিয়ে বাইডেন ট্রাম্পের একটা প্রচ্ছন্ন হুমকির জবাব দিয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প বলেছিলেন, ন্যাটোর যেসব সদস্য দেশ নিজেদের ভাগের প্রতিরক্ষা ব্যয় মেটাতে পারবে না, সেসব দেশ আক্রান্ত হলে তাদের রক্ষায় এগিয়ে আসবে না যুক্তরাষ্ট্র। তা ছাড়া ইউক্রেনের জন্য দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ট্রাম্প।

বক্তৃতার একপর্যায়ে জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, রোমানিয়া ও ইতালির সঙ্গে মিলে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের জন্য আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আরও কয়েক ডজন কৌশলগত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাঠাবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন বাইডেন। 

পরিশেষে ন্যাটোর গুরুত্ব ও আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতার ওপর জোর দিয়ে বক্তৃতা শেষ করেন বাইডেন।

ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলনে জোটটির সদস্য দেশের নেতাদের পাশাপাশি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও যোগ দিয়েছেন। অনুষ্ঠান শুরুর আগে এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, মিত্রদের থেকে আমরা আরও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, আর্থিক সহায়তা ও এফ-১৬-সহ অন্য যুদ্ধবিমান চাইব।

মঙ্গলবার বিকেলে সম্মেলনে জেলনস্কির বক্তৃতা দেওয়ার কথা রয়েছে। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার তিনি হোয়াইট হাউসে বাইডেনের সঙ্গে দেখা করবেন।

এদিকে  ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রতিনিধি পরিষদের আইনপ্রণেতারা গতকাল ওয়াশিংটনে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক করেছেন। একই দিন দলটির সিনেট সদস্যরাও বৈঠক করেছেন। বৈঠকে বাইডেনকে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী রাখা নিয়ে মতবিরোধ বিদ্যমান ছিল। এই পরিস্থিতিতে বাইডেন বৃহস্পতিবার একক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন বলে জানা গেছে। এখন সবার চোখ এই সংবাদ সম্মেলনের দিকে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button