Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
International

ইউক্রেনের আকাশজুড়ে ড্রোন, বদলে দিচ্ছে যুদ্ধ

এই রূপান্তর এনেছে ড্রোন। নানা ধরনের, নানান ডিজাইনের ও সক্ষমতার। ছোট-বড় এসব ড্রোন আজ বহুল ব্যবহৃত। এমনকি ইউক্রেনের রণাঙ্গনে সেনাদের চেয়েও বিচরণ বেশি ড্রোনের। শুরুটা ইউক্রেনই করেছিল।

গত বছরের ডিসেম্বরে রাশিয়ার এক ক্ষেপণাস্ত্র বিস্ফোরণে আহত হন মিকায়তা লুশক। ২৭ বছরের এই ইউক্রেনীয় সেনা বিস্ফোরণের ঝটকায় ছিটকে পড়েন, শরীরেও বিদ্ধ হয়েছিল শার্পনেল। ছিটকে পড়ার পর চাপ লেগে মোবাইল থেকে কল চলে যায় তাঁর স্ত্রীর নম্বরে। যার সাথে কিছুক্ষণ আগেই কথা বলেছিলেন এই সৈনিক। মিকায়তা তিন জনের একটি ড্রোন ইউনিটের সদস্য ছিলেন, মিসাইল হামলায় তিনি কিছুটা আহত হলেও মারাত্মক আহত হন ইউনিটের আরেকজন। বিস্ফোরণে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয় তাঁর পা। মিকায়তা আহত অবস্থায় তাঁকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন, এভাবে কীভাবে তাঁরা প্রাণের বাঁচাতে পালাচ্ছিলেন— সবই ফোনের ওপর পাশে স্পষ্ট শুনতে পান তাঁর স্ত্রী। পরে স্বামীসহ তিন যোদ্ধাকে উদ্ধার করতে তিনিই ফোন করেছিলেন কর্তৃপক্ষকে। 

মিকায়তা লুশকের ক্ষত এখন সেরে গেছে। তবে মাঝেমধ্যেই মৃগীর মতো কাঁপুনি আসে তাঁর। বিস্ফোরণের ফলে স্নায়বিক আঘাত থেকেই এই সমস্যা হয়েছে। আগে তিনি ছিলেন প্রশিক্ষিত এক ড্রোন পাইলট, তবে চলতি বছরের অক্টোবরে এই সমস্যার কারণে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। দুই বছর ধরে ইউক্রেন যুদ্ধে লড়েছেন মিকায়তা, আর এই সময়ের মধ্যেই আমূল বদলে গেছে যুদ্ধের ধরন।

এই রূপান্তর এনেছে ড্রোন। নানা ধরনের, নানান ডিজাইনের ও সক্ষমতার। ছোট-বড় এসব ড্রোন আজ বহুল ব্যবহৃত। এমনকি ইউক্রেনের রণাঙ্গনে সেনাদের চেয়েও বিচরণ বেশি ড্রোনের। শুরুটা ইউক্রেনই করেছিল। লুশক বলেন, আমাদের তখন যথেষ্ট পদাতিক সেনা ছিল না। থাকলে একদল বিশ্রাম নিতো, আরেকদল তখন থাকতো যুদ্ধের ময়দানে। কিছু সময় পর পর তাঁদের বদলি করা যেত। কিন্তু, জনবলের ঘাটতি থাকায়– ড্রোনই হয়ে ওঠে আমাদের সেনাবাহিনীর প্রধান শক্তি।

মনুষ্যহীন আকাশযান (ইউএভি বা ড্রোন) অনেক দশক ধরেই যুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে। স্নায়ুযুদ্ধের সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নও গোয়েন্দা নজরদারির কাজে করেছে ড্রোনের ব্যবহার, বিশেষত ভিয়েতনাম যুদ্ধের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল এটি। তবে কয়েক দশক আগে ড্রোনকে বহুদুরের লক্ষ্যে আঘাত হানতে ব্যবহার শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র।

যুগের সাথে সাথে বদলেছে প্রযুক্তি। ড্রোনের আকারেও এসেছে পরিবর্তন। তাছাড়া, ইউক্রেন যুদ্ধে প্রমাণিত হয়েছে শত্রুর গুলি ও ক্ষেপণাস্ত্রে বড় ড্রোনের ভূপাতিত হওয়ার ঝুঁকিও থাকে বেশি। বড় ড্রোনগুলো বেশ ব্যয়বহুলও। সে তুলনায়,  আধুনিক ছোট ড্রোনগুলো দামে যেমন কম, তেমনি হারালেও নেই তেমন ক্ষতি। আত্মঘাতী হামলাকারী হিসেবেও হচ্ছে এর ব্যবহার। ইউক্রেনের আকাশ নজরদারি, শত্রুর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ ও সরাসরি হামলায় ব্যবহৃত এমন অজস্র ড্রোনে ছেয়ে গেছে। যা এই সংঘাতের গতিপ্রকৃতিকে নতুন রূপ দিয়েছে। এই যুদ্ধে এখন ড্রোনের নজর এড়ানো প্রায় মুশকিল –উভয় পক্ষের সেনা ও সরঞ্জামের জন্য। 

ফলে দুই পক্ষই ড্রোন উদ্ভাবন ও উন্নয়নের এক অস্ত্র প্রতিযোগিতাতেও নামে। যার হাত ধরে যুদ্ধের প্রয়োজন মাথায় রেখে যোগ হয়েছে ড্রোনের নানান সংযোজন, উন্নত করা হয়েছে প্রযুক্তিকেও। যার একটাই লক্ষ্য শত্রুকে ঘায়েল করা। 

এর আগে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্রে বড় আকারের রিপার ড্রোন ব্যবহার করেছে। প্রায় ৩ কোটি ডলার দামের এই ড্রোনগুলোকে বহুদূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করতেন এর পাইলটরা। সে তুলনায়, ইউক্রেনের সংঘাতে ড্রোন ব্যবহারের ধরন অনেক আলাদা। এখানে রণাঙ্গনের খুবে কাছে অবস্থান করেই ড্রোন উড়ানো ও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। প্রযুক্তিগত জটিলতা যেখানে কম, কিন্তু ড্রোন অপারেটরদের প্রাণের ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। 

ইউক্রেন যুদ্ধ যখন শুরু হয়– তার থেকেও কিন্তু সম্পূর্ণ আলাদা এখন ড্রোনের ব্যবহার। যুদ্ধের শুরুতে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে তুরস্কের তৈরি মাঝারি আকারের বায়রাক্তার ইউএভি ব্যবহার করেছিল ইউক্রেন। রাশিয়া যখন আগ্রাসন চালায় – তখন এ ধরনের কয়েক ডজন ড্রোন ছিল কিয়েভের কাছে। এসব ড্রোন থেকে ছোড়া মিসাইলের হামলায় অনেকটাই গতিরোধ করাও সম্ভব হয় রুশ বাহিনীর। তবে খুব শিগগিরই এগুলোকে শনাক্ত ও ভূপাতিত করতে সক্ষম হয় রুশ সেনারা, এজন্য বিমানবিধ্বংসী অস্ত্রগুলোকে কাজে লাগানো হয়। 

এই পরিস্থিতিতে, সামরিক বাহিনীর দিকে সহযোগিতার হাত বাড়ান বেসামরিক ইউক্রেনীয়রা। তাদেরকে দেন নিজেদের কাছে থাকা বাণিজ্যিকভাবে উপলদ্ধ ড্রোনগুলো। এসব ড্রোনকে তখন কাজে লাগানো হয় আকাশ থেকে শত্রুপক্ষের অবস্তানের ভিডিও ধারণে এবং সেখানে কামানের গোলা নিক্ষেপের দিকনির্দেশনা প্রদানে। এভাবে অগ্রসরমান রুশ বাহিনীর ট্যাংক ও সাঁজোয়া যানের একাধিক বহর ধ্বংস করতে সক্ষমও হয় ইউক্রেন।    

যুদ্ধের আগে ইউক্রেনীয় ও বিদেশি কোম্পানিগুলোর মাঝে ব্যবসায়িক বিরোধ নিষ্পন্নকারী একজন আইনজীবী ছিলেন লুশক। রুশ আগ্রাসন শুরু হলে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। এরপর ওই বছরের নভেম্বরে ১ নং প্রেসিডেন্সিয়াল ব্রিগেডের নবগঠিত ড্রোন ইউনিটে তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরের মাসেই পূর্ব রণাঙ্গনের ছোট মফস্বল বিলোহারিভকায় তাঁকে মোতায়েন করা হয়। 

ততদিনে ছোট ড্রোনের ব্যবহার অনেকটাই সংগঠিত হয়ে উঠেছিল। তবে ইউক্রেনীয়দের কাছে তখনও এসব ড্রোন বা সেগুলো পরিচালনার সাজরঞ্জাম ছিল খুবই সাধারণ মানের, তাও সবসময় পাওয়া যেত না, এবং সামরিক কাজের জন্য নির্ভরযোগ্যও ছিল না। ফলে প্রতিনিয়ত নানান প্রযুক্তি ও উপকরণ নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা চালাতে হয়েছে। ধীরে ধীরে তাঁরা কোনটি কার্যকর আর কোনটি নয়– সে অভিজ্ঞতা লাভ করেন। তারপরেও এ ধরনের জোড়াতালি ব্যবস্থায় ড্রোন নিয়ন্ত্রণ করতে অপারেটরদের হিমশিম খেতে হতো। 

লুশকদের ওই ইউনিটের সদস্য ছিলেন ১৩ জন, ড্রোন ছিল মাত্র ১০টি। ফলে প্রতিটি ড্রোনই ছিল মূল্যবান। ওড়াতে গিয়ে কোনো ড্রোন যদি মাইনফিল্ডেও পড়তো, প্রাণ হাতে নিয়ে সেটিকে তখন উদ্ধার করতে ড্রোন-পাইলট। ওই সময়ে রুশ বাহিনী ড্রোনের সিগন্যাল ব্যাহত করতে জ্যামার মোতায়েন করেছিল– যেকারণে ১০০ মিটারের বেশি গেলেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে মাটিতে আছড়ে পড়তো ড্রোনগুলো। এই অবস্থায়, অনেক সময় রুশ সেনাদের খুব কাছাকাছি অবস্থান নিয়ে ড্রোন ওড়াতে হতো তাঁদের। 

তবে শত চেষ্টা করেও প্রথম তিন মাসে তাঁরা কোনো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারেননি। পরে তাঁদের হাতে আসে ট্রান্সমিশন বুস্টার ও ডুয়েল এন্টেনার মতো সরঞ্জাম, যার সাহায্যে ড্রোন আরও দূর পর্যন্ত ওড়ানো সম্ভব হয়। অন্যদিকে, ড্রোন যুদ্ধে ইউক্রেনীয়দের ঠেকাতে উঠেপড়ে লাগে রুশরাও। 

খাঁড়া এক পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত বিলোহারিভকা, যার চুড়া যুদ্ধের শুরুতেই দখল করেছিল রুশ সেনারা। তাঁদের অবস্থান পর্যন্ত যেতে সাত কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিতে হয় ইউক্রেনীয় সেনাদের। পাহাড়ের ওপর থেকে এই পুরো পথটি দেখতে পেত রুশ সেনারা, ফলে এর ওপর সহজেই আঘাত হানতে পারতো রুশ কামানগুলি। ব্যাপক প্রাণহানির কারণে এই রাস্তা তাই পরিচিত পায় ‘রোড অব ডেথ’ বা মৃত্যুসড়ক নামে। 

রুশ সেনাদের চোখ এড়াতে রাতে এই পথে পাড়ি দেন লুশক ও তাঁর ড্রোন ইউনিটের সঙ্গীরা। হেডলাইট বন্ধ রেখে, উচ্চ গতিতে চলেছিল তাঁদের বহনকারী গাড়িটি। ১৯ বছরের ড্রাইভার ছেলেটি নাইট-ভিশন গগলস পরে গাড়ি চালাচ্ছিল। রাস্তায় পড়েছিল অনেক পোড়া গাড়ির  ধ্বংসাবশেষ। দক্ষ হাতে পাশ কাটাচ্ছিল সেগুলোকে। ইউক্রেনীয় সেনাদের নিয়ে এগুলোও যাত্রা করেছিল রুশ অবস্থানের দিকে, তবে কামানের গোলায় ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। 

সেই অভিজ্ঞতা স্মরণ করে বলেন, সব হয়তো সহ্য করা যেত, কিন্তু চারপাশে যদি না তাকানো যায় তাহলেই। পোড়া গাড়িগুলোকে দেখলেই, বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে ওঠা সামলানো যেত না। আবার নাইটভিশন গগলস পরা অবস্থায় আকাশের দিকে তাকিয়ে অন্তত ৩০টি ড্রোনের আলট্রাভায়োলেট লাইট দেখতে পাই। যারা নজরদারির জন্য মাথার ওপর চক্কর দিচ্ছিল। 

“এরমধ্যে কোন ড্রোন আমাদের, কোনটা শত্রুপক্ষের তা বোঝার উপায় নেই। নজরদারি ড্রোন নাকি এফপিভি ড্রোন – তাও নিশ্চিত না।”

ইউক্রেন যুদ্ধে ফার্স্ট পারসন ভিউ বা এফপিভি ড্রোনগুলোকে আত্মঘাতী বোমারু হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এফপিভি ড্রোন বলতে লুশক এ ধরনের ড্রোনের কথাই বলছিলেন। 

যুদ্ধে যতদিন গড়িয়েছে– উভয় পক্ষ ততোই ঝুঁকেছে বাণিজ্যিকভাবে সহজলভ্য কোয়াডকপ্টার ড্রোন ব্যবহারে। কেবল ইউক্রেনেই গড়ে উঠেছে শত শত ছোট-বড় ড্রোন প্রস্তুতকারক। ফায়ার পয়েন্ট নামক এমন একটি প্রতিষ্ঠান ২০২৩ সালের গ্রীষ্মে একটি ছোট ড্রোন বিমান তৈরি করে। এই ড্রোন ৬০ থেকে ১০০ কেজি বিস্ফোরক নিয়ে এক হাজার কিলোমিটার দূরে গিয়ে আঘাত হানতে পারে। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ গতিবেগ ২০৫ কিলোমিটার। এটি দিয়ে এপর্যন্ত রাশিয়ার ছয়টি বিমানঘাঁটি, দুটি অস্ত্রাগার ও একটি নৌঘাঁটিতে হামলা করেছে ইউক্রেন।  

এছাড়া, তুলনামূলক ছোট ড্রোনগুলোর সক্ষমতাও বেড়েছে। ফ্রন্টলাইন থেকে শত্রুর অবস্থানের ছয় কিলোমিটার ভেতর পর্যন্ত সাঁজোয়া যান বা সেনা সমাবেশের ওপর সেগুলো দিয়ে এখন হামলা করা হচ্ছে। 

ইউক্রেনের নতুন ড্রোনগুলো দামেও সস্তা। বসে নেই রাশিয়াও। ড্রোনের নিজস্ব উৎপাদন ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে দেশটি। ইরানের কাছ থেকেও কিনেছে ড্রোনের চালান। ড্রোন ব্যবহারেও কিছু ক্ষেত্রে ইউক্রেনীয়দের চেয়ে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়ার তৈরি সবচেয়ে মারাত্মক ড্রোন হচ্ছে ল্যানসেট সিরিজ। এই ড্রোনগুলো ইউক্রেনকে দেওয়া পশ্চিমা যুদ্ধ সরঞ্জামও ধ্বংস করেছে। যার বেশকিছু ভিডিও এর আগে প্রকাশও করেছিল ক্রেমলিন। 

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto