ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি ট্রাম্পের পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান রাশিয়ার
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ইউক্রেনে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে নব নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। সোমবার প্রকাশিত রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস-এর সাথে একটি সাক্ষাতকারে, ল্যাভরভ ট্রাম্পের পরিকল্পনার সমালোচনা করেন।
প্রায় তিন বছর ধরে চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে একটি পরিকল্পনা প্রকাশ করেন ট্রাম্প। তাতে বলা হয়েছিল, পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোয় ইউক্রেনের সদস্যপদ না দেয়ার বিনিময়ে রাশিয়াকে এই যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। এ বিষয়ে ল্যাভরভ বলেন, পরিকল্পনাগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাম্পের দ্বারা ঘোষণা করা হয়নি। তবে মার্কিন নির্বাচনের পরদিন গত ৬ নভেম্বর সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে সূত্রের বরাতে বলা হয়েছিল, ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনা অংশ হিসেবে ন্যাটোয় ইউক্রেনের সদস্যপদ পাওয়া ২০ বছরের জন্য পিছিয়ে দেয়া হবে।
ট্রাম্প প্রচারাভিযানের পথে দাবি করেছিলেন যে তিনি কয়েক দিনের মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারবেন, তবে তিনি কীভাবে তা করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি। ১২ ডিসেম্বর টাইম ম্যাগাজিনের সাথে একটি সাক্ষাতকারে, লাভরভ দ্বারা উদ্ধৃত, ট্রাম্প আবার বলেছিলেন যে, তিনি তার পরিকল্পনাটি বিশদভাবে বর্ণনা করতে পারবেন না। তিনি বলেছিলেন যে, তিনি ‘একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে’ চান এবং যুদ্ধে নিহতের সংখ্যাকে অসহনীয় বলে বর্ণনা করেছেন। এটি ইউক্রেনকে উন্মুক্ত সমর্থন প্রদান এবং কিয়েভ পর্যন্ত রাশিয়ার সাথে কখন আলোচনা করতে হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নীতি থেকে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন চিহ্নিত করে। ট্রাম্প টাইম সাক্ষাতকারে বলেছিলেন যে, ইউক্রেনকে রাশিয়ায় ভেতরে হামলার অনুমতি দেয়া বাইডেনের জন্য ভুল ছিল, যার কারণে সংঘাত আরও বেড়েছে।
ল্যাভরভ জানান, রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ২০ বছরের জন্য ন্যাটো সদস্যপদে ইউক্রেনের অগ্রগতি স্থগিত করার সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করে। তিনি বলেছেন যে, রাশিয়া একটি চুক্তি চায় ‘যা সংঘাতের মূল কারণগুলিকে নির্মূল করবে এবং তাদের লঙ্ঘনের সম্ভাবনাকে বাদ দিয়ে একটি ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে।’ ক্রেমলিন দীর্ঘদিন ধরে দাবি করেছে যে, তারা ন্যাটোর সম্ভাব্য পূর্বমুখী সম্প্রসারণ থামাতে ইউক্রেনে ২০২২ সালের পূর্ণ-মাত্রার অভিযান শুরু করেছে। পশ্চিমা দেশগুলো এবং ইউক্রেন, দাবি করে যে ইউক্রেন রাশিয়ার জন্য কোনও হুমকি তৈরি করেনি এবং বলে যে পুতিন পরিবর্তে সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল এমন অঞ্চল জয় করতে চান। মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক দ্য ইনস্টিটিউট ফর স্টাডি অফ ওয়ার বলেছে যে, ল্যাভরভের মন্তব্য থেকে বোঝা যায় যে রাশিয়া সম্ভবত ইউক্রেনকে স্থায়ীভাবে নিরপেক্ষ হওয়ার এবং তার সামরিক বাহিনীকে বিলুপ্ত করার দাবিতে ‘কোনও আপস বিবেচনা করতে’ অস্বীকার করবে।