International

ইউক্রেন ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার কথা জানালেন ম্যাক্রোঁন ও ট্রাম্প

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে তারা ইউক্রেন সংকট সমাধানে যৌথ প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

ট্রাম্প উল্লেখ করেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষীদের উপস্থিতি মেনে নিতে পারেন। এছাড়া, তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শীঘ্রই ওয়াশিংটন সফর করবেন, যেখানে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। এই চুক্তির মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভের খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানে অ্যাক্সেস পাবে।

ট্রাম্প ম্যাক্রোঁনকে ‘খুবই বিশেষ ব্যক্তি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং বৈঠকে উভয় নেতা ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আলোচনা করেছেন। ট্রাম্প বলেন,‘আমরা যদি বুদ্ধিমানের সাথে কাজ করি, তাহলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এটি (সংঘাত) শেষ করতে পারব। যদি না করি, এটি চলতেই থাকবে। তিনি আরও জানান, পুতিন ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষীদের গ্রহণ করতে প্রস্তুত।

ম্যাক্রোঁন উল্লেখ করেছেন, তারা একটি ‘দৃঢ় ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তি’ চান এবং ইউরোপ প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াতে প্রস্তুত। তিনি আরও বলেন, ইউরোপ শান্তিরক্ষী মোতায়েন করতে প্রস্তুত, তবে এতে যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী সম্পৃক্ততা চান।

তবে, ইউরোপীয় দেশগুলো ট্রাম্পের সাম্প্রতিক রাশিয়া সম্পর্কিত মন্তব্যে উদ্বিগ্ন। এটা (ট্রাম্পের মন্তব্য) ৮০ বছরের পুরনো ট্রান্সআটলান্টিক জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ট্রাম্প রাশিয়ার সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় শুরু করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন এবং ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করতে চান। তবে সেখানে ইউরোপীয় মিত্র বা কিয়েভের সম্পৃক্ততা থাকবে না।

এই পরিস্থিতিতে, ম্যাক্রোঁন ইউরোপীয় নেতাদের সাথে সমন্বয় করে ওয়াশিংটনের নীতিগত পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়া জানাতে চেষ্টা করছেন। তিনি ট্রাম্পকে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অব্যাহত রাখতে এবং ইউরোপীয় শান্তিরক্ষীদের জন্য ‘দৃঢ় নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’ প্রদানে আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া, ট্রাম্প ও ম্যাক্রোঁন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা করেছেন।

সাম্প্রতিক সময়ে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন এবং ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদকে নিরাপত্তার সর্বোত্তম উপায় হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে, হোয়াইট হাউস মনে করে, রাশিয়ার আপত্তির কারণে এটি বাস্তবসম্মত নয় এবং এর পরিবর্তে ইউক্রেনের সাথে একটি খনিজ সম্পদ চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছে।

ম্যাক্রোঁন ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার উভয়েই ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার পর ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী মোতায়েনের প্রস্তাব দিয়েছেন, যদিও রাশিয়া ন্যাটো সম্পর্কিত কোনো সৈন্যের উপস্থিতির বিরোধিতা করেছে। সার্বিকভাবে, ম্যাক্রোঁন ও ট্রাম্পের এই বৈঠক ইউক্রেন সংকট সমাধানে একটি সমন্বিত প্রচেষ্টার ইঙ্গিত দেয়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button