International

ইউক্রেন নিয়ে আলোচনার জন্য সৌদি আরবকে কেন বেছে নিল ট্রাম্প প্রশাসন

ইউক্রেন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার জন্য সৌদি আরবকে বেছে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এর মধ্য দিয়ে এটাই প্রমাণিত হয় যে ২০১৮ সালে সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পর মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি কূটনৈতিকভাবে যেভাবে প্রায় অচ্ছুত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিল, সেখান থেকে রিয়াদ বের হয়ে এসেছে।

সৌদি আরব, বিশেষ করে দেশটির ‘ডি ফ্যাক্টো’ নেতা যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ওপর যে চাপ তৈরি হয়েছিল, তা সরে গেছে বলেই দেখা যাচ্ছে। যদিও এখনো মাঝেমধ্যে আন্তর্জাতিক ফোরামে সৌদি আরবের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়ে থাকে।

বিশ্বমঞ্চে গুরুত্বপূর্ণ স্থান করে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা থেকে সৌদি আরব বিনোদন, খেলাধুলাসহ আরও অনেক খাতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করছে। কূটনৈতিক দিক থেকেও সৌদি নেতৃত্ব নিজেদের ভূমিকা বাড়াচ্ছে। জো বাইডেনের মেয়াদের বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হওয়া হওয়ার পরও ওয়াশিংটনের ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়েছে রিয়াদ।

 সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। রিয়াদে, ১৭ ফেব্রুয়ারি

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। রিয়াদে, ১৭ ফেব্রুয়ারি

সৌদি আরব তখন স্পষ্ট করে বলেছিল যে তাদের স্বার্থের জন্য যা যা প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হবে, সেগুলো তারা অনুসরণ করবে। সেই অবস্থান থেকে রাশিয়া ও চীনের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে শুরু করেছিল রিয়াদ।

এর মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছে সৌদি আরব। প্রথমবার ক্ষমতায় এসে প্রথম বিদেশ সফরের জন্য সৌদি আরবকে বেছে নিয়েছিলেন ট্রাম্প। তাঁর দেওয়া–নেওয়ানির্ভর পররাষ্ট্রনীতি সৌদি আরবের বর্তমান নেতৃত্বের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে বেশি খাপ খায়।

সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে যদি কোনো শান্তিচুক্তি হয়, সেটাকেই সম্ভবত নিজের সবচেয়ে বড় অর্জন হিসেবে তুলে ধরতে চাইবেন ট্রাম্প। কারণ, এতে করে ক্ষমতার প্রথম মেয়াদে তিনি যে আব্রাহাম অ্যাকর্ডস (চুক্তি) শুরু করেছিলেন, সেটা পূর্ণতা পাবে এর মধ্য দিয়ে। আরব ও মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে ট্রাম্পের উদ্যোগে ২০২০ সালের শেষে দিকে আব্রাহাম অ্যাকর্ডস সই হয়।

একপর্যায়ে চুক্তি সইয়ের প্রায় কাছাকাছি চলে এসেছিল সৌদি-ইসরায়েল। কিন্তু এর মধ্যে গাজা যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। এতে করে সৌদি আরবের দিক থেকে চুক্তির শর্ত বেড়ে যায়। এখন দেশটি ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য গাজা শান্তিচুক্তিকে শর্ত হিসেবে জুড়ে দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি গাজাকে ফিলিস্তিনিশূন্য করে উপত্যকাটিকে অবকাশযাপনকেন্দ্র হিসেবে হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। সৌদি আরব তাৎক্ষণিক তা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে।

পাশাপাশি অন্য আরব দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য একটি বিকল্প পরিকল্পনা তৈরির জন্য কাজ শুরু করে সৌদি আরব। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজাবাসীকে রেখেই উপত্যকাটি পুনর্গঠন করা হবে এবং তা ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের ইতি টানতে দুই রাষ্ট্র সমাধানকে এগিয়ে নেবে।

গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরবিষয়ক নীতি নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বর্তমান চিন্তাভাবনার সঙ্গে সৌদি আরবের মতপার্থক্য রয়েছে। এসব কীভাবে সমাধান করা হবে, সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বিকাশের ক্ষেত্রে সেটাই প্রধান বিষয় হয়ে উঠবে।

দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্কের এই পর্যায়ে এই বিষয়টি পরিষ্কার যে বৈশ্বিক কূটনীতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দেশ হওয়ার যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা, সেটাতে লাগাম পরানোর কোনো ইচ্ছা সৌদি আরবের নেই।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor