ইউনেস্কো থেকে সদস্য পদ প্রত্যাহারের ঘোষণা ট্রাম্পের

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো থেকে ফের সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সংস্থাটিকে ‘ইসরাইলবিরোধী পক্ষপাতদুষ্ট’ এবং ‘বিভাজনমূলক’ বলে অভিযোগ তুলেছেন মার্কিন প্রশাসন। দেশটির স্টেট ডিপার্টমেন্ট মঙ্গলবার (২২ জুলাই) আনুষ্ঠানিকভাবে এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্র আবারও ইউনেস্কোর সদস্যপদ ত্যাগ করছে। ২০১৭ সালেও ট্রাম্পের প্রশাসন ইউনেস্কো থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল, যদিও পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে দেশটি সদস্যপদ পুনরুদ্ধার করে। এবার স্টেট ডিপার্টমেন্ট দাবি করেছে, ইউনেস্কোর কর্মকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এই সিদ্ধান্ত বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের প্রচেষ্টায় প্রভাব ফেলতে পারে।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস জানান, বর্তমানে ইউনেস্কো অতিরিক্তভাবে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যগুলোর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে এবং ‘বিশ্বায়নবাদী ও মতাদর্শিক এজেন্ডা’ নিয়ে এগোচ্ছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, সংস্থাটি ইসরাইলবিরোধী পক্ষপাতদুষ্ট নীতি গ্রহণ করেছে এবং ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের নীতির সরাসরি পরিপন্থী।
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত একেবারেই নতুন নয়। ১৯৮৩ সালে প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগান ইউনেস্কোকে ‘সোভিয়েতপন্থী ও দুর্নীতিগ্রস্ত’ আখ্যা দিয়ে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রকে এই সংস্থা থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। পরে প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের আমলে পুনরায় যুক্তরাষ্ট্র সদস্যপদ ফিরে পায়। ২০১৭ সালে ট্রাম্প আবারও ইউনেস্কো থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য সংরক্ষণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে। অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ, আফ্রিকার সেরেঙ্গেটি, এথেন্সের অ্যাক্রোপলিস ও মিসরের পিরামিডসহ গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিক স্থাপনা সংরক্ষণে সংস্থাটি বিশ্বব্যাপী কাজ করে যাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, এসব কাজের আড়ালে ইউনেস্কো রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব এবং বিতর্কিত নীতি গ্রহণ করেছে।