International

ইউরোপিয়ান নির্বাচনে ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি এখন কিংমেকার!

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ৭২০ আসনের নির্বাচনে মধ্যপন্থী, উদার ও সমাজতান্ত্রিক দলগুলো মিলে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখলেও বড় উত্থান হয়েছে ডানপন্থীদের। বিশেষ করে ফ্রান্স ও জার্মানিতে বড় ব্যবধানে জয়লাভ করতে যাচ্ছে কট্টর ডানপন্থী দলগুলো।

ইউরোপিয়ান নির্বাচনে ইতালিতে জয় পেয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির ব্রাদার্স অব ইতালি পার্টি। দলটি মোট ভোটের প্রায় ২৮ শতাংশ ভোট পেয়েছে; যা একক দল হিসেবে সর্বোচ্চ।

বিশ্লেষকদের ধারণা, জয়ের ফলে মেলোনিকে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের কিংমেকারের ভূমিকায় দেখা যেতে পারে। কেননা সেখানে তিনি অন্যতম শক্তিশালী নেতা হতে যাচ্ছেন।

অন্যদিকে নির্বাচনটিতে ইতালির মধ্য-বামপন্থি দল বিরোধী পিডি ২৩ ভাগ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। আর পপুলিস্ট ফাইভ স্টার মুভমেন্ট ১০ ভাগ ভোট পেয়েছেন।

সেন্টার ফর ইউরোপিয়ান পলিসি স্টাডিজের গবেষণা পরিচালক আন্দ্রেয়া রেন্ডা ইউরোনিউজকে বলেন, “দলীয় ফলাফলে বৈচিত্র্যের কারণে কোয়ালিয়েশনে সমস্যা দেখা দিতে পারে। কেননা অন্যান্য দলগুলি বুঝতে পারছে যে তারা ব্রাদার্স অব ইতালির সাথে যত বেশি ক্ষমতায় থাকবে তারা ততই জনসমর্থন হারাবে।”

এদিকে মধ্য-ডানপন্থি ইউরোপিয়ান পিপলস পার্টির ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন এবং ফ্রান্সের মেরিন লে পেন মেলোনির সমর্থন চেয়েছেন। এতে করে নির্বাচন শেষে তিনি আবির্ভূত হয়েছেন কিংমেকার হিসেবে।

এদিকে ডার লেনের দ্বিতীয় দফায় ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হতে মেলোনির সমর্থন প্রয়োজন। যদিও নির্বাচনকালীন সময়ে একজন বিশ্বস্ত সঙ্গী হিসেবে বর্তমান এই প্রেসিডেন্ট ইতালির প্রধানমন্ত্রীর প্রতিই আস্থা ব্যক্ত করেছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ৭২০ আসনের নির্বাচনে মধ্যপন্থি, উদার ও সমাজতান্ত্রিক দলগুলো মিলে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখলেও বড় উত্থান হয়েছে ডানপন্থীদের। বিশেষ করে ফ্রান্স ও জার্মানিতে বড় ব্যবধানে জয়লাভ করতে যাচ্ছে কট্টর ডানপন্থী দলগুলো।

২৭টি দেশের বুথফেরত জরিপে দেখা যাচ্ছে, ইউরোপীয় কমিশনের বর্তমান প্রধান উরসুলা ভন ডার লেনের মধ্য-ডানপন্থি দল ইউরোপীয়ান পিপলস পার্টি (ইপিপি) ইইউ পার্লামেন্টের ৭২০টি আসনের মধ্যে ১৯১টি আসনে জিতেছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মধ্য-বামপন্থি সোস্যালিস্টস অ্যান্ড ডেমোক্র্যাটরা (এস অ্যান্ড ডি) ১৩৫টি আসন পেয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা উদারপন্থি রিনিউ গ্রপ ৮৩টি আসন পেয়েছে।

নির্বাচনে ইউরোপীয়দের ভোট আগামী পাঁচ বছরের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভবিষ্যৎ ঠিক করে দেবে, বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন, জাতীয়তাবাদের মতো বিষয়গুলো নির্বাচনের ফলাফলের ওপর অনেকটা প্রভাব বিস্তার করবে।

ডানপন্থী এবং কট্টর ডানপন্থী দলগুলো ইউরোপে জনপ্রিয়তা পাওয়ায় নির্বাচনের ফলাফলে ইতোমধ্যেই এর প্রভাব দেখতে পাওয়া গেছে। বুথফেরত জরিপ অনুযায়ী, মধ্য-ডানপন্থী ইউরোপিয়ান পিপলস পার্টি ইউরোপীয় পার্লামেন্টে আরও নিয়ন্ত্রণ অর্জন করেছে। ফ্রান্স ও জার্মানিতে কট্টর ডানপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো বুথফেরত জরিপে এগিয়ে থাকলেও আশানুরূপ ফলাফল পায়নি মধ্যপন্থী, উদারপন্থী, গ্রিন পার্টি কিংবা বাম দলগুলো।

ব্রাসেলস ও স্ত্রাসবুর্গে অবস্থিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংসদ ইউরোপের নাগরিকদের জন্য আইন তৈরি করে এবং বার্ষিক বাজেট অনুমোদন করে, যা এই বছরে মোট ১৮৯ বিলিয়ন ইউরো নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি ইইউ অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর সরকারের সাথে সমন্বয় করে গঠিত কাউন্সিলের মাধ্যমে ক্ষমতা ভাগাভাগি করে নেয়। ইইউ নির্বাচনের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেই ইউরোপীয় কমিশনের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হবেন তা নির্ধারণ করা হয়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button