ইজতেমায় সংঘর্ষের নেপথ্যে কারা? সঙ্কটময় মুহূর্তে টঙ্গীতে বিপুল জনসমাগম করা উচিত কি-না প্রশ্ন
বিদেশি রাষ্ট্রের ইন্ধনে কিছুু রাজনৈতিক শক্তি দেশের অন্তর্বর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকারকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এ পরিস্থিতিতে তাবলিগ জামাতের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণকর হবে : অ্যাডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিব
পুকুরে ঢিল ছুড়ে মারলে স্থির পানিতে ঢেউয়ের সৃষ্টি হয় এবং পানির কণাগুলো আন্দোলিত হয়ে তরঙ্গের সৃষ্টি করে। রাজধানীর অদূরে টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে যেন মাওলানা সাদ কান্ধলভীপন্থিরা হঠাৎ ঢিল ছুড়েছে। এতে পানির ঢেউ অনুপ্রস্থ তরঙ্গের মতো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে সংঘর্ষে তিনজনের প্রাণহানি ঘটে। তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দান দখলকে কেন্দ্র করে মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষই একে অপরকে দায়ী করছে।
জুবায়েরপন্থীরা বলছেন, ইজতেমার মাঠে অবস্থানকালে রাত সাড়ে ৩টায় ‘ছুরি, ক্ষুর, হাতুড়ি, ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে মুসল্লিদের ওপর হামলা চালান সাদপন্থীরা। অন্যদিকে সাদপন্থীদের দাবি, কামারপাড়া থেকে সøুইস গেট পর্যন্ত সড়কে ঘুমানোর প্রস্তুতি নেয়ার সময় রাত সাড়ে ৩টার দিকে জুবায়েরপন্থীরা তাদের দিকে ‘ইট-পাটকেল, জলন্ত মশাল’ নিয়ে হামলা করে। তাবলিগ জামাতের এই দুটি পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত তিনজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনার পর গাজীপুরে টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে বৈঠক করেছেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, ইজতেমা ময়দানের হত্যাকাÐের সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে। খুনিদের তো কোনো অবস্থায়ই ছাড় দেয়ার কোনো অবকাশ নেই। তবে ওরা নিজেরা বসেই সিদ্ধান্ত নিক।
তাবলিগ জামাতের ইজতেমা নিয়ে দু’পক্ষের পুরোনো বিরোধ মীমাংসিত। গত ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা পালন করেন কাকরাইল মারকাজের মাওলানা জুবায়ের অনুসারীরা। এরপর ইজতেমা মাঠে ২০ ডিসেম্বর থেকে পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা পালনের ঘোষণা দেন দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা। তারপরও কেন এই প্রাণঘাতী সংঘর্ষ? এর নেপথ্যে কি হাসিনা ও ভারতের ইন্ধন রয়েছে? ইসকন ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের ইস্যুতে বিশৃঙ্খল সৃষ্টির ধারাবাহিকতায় ভারতের নাগরিক মাওলানা সাদ কান্ধলভীপন্থীদের নামানো হয়েছে?
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজেনদের অনেকের ধারণা, ইজতেমা ইস্যুতে সংঘর্ষের নেপথ্যে রয়েছে ভারতের আশ্রয়ে থাকা গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার কালো হাত। বিদেশে পাচার করা টাকা খরচ করে পর্দার আড়াল থেকে তিনি কলকাঠি নাড়ছেন। ৫ আগস্ট হাসিনা পালানোর পর দিল্লিতে বসে ভারতের সহায়তায় জুডিশিয়াল ক্যু, গার্মেন্টসে অস্থিরতা, পাহাড়ে অশান্তি, আনসারদের দিয়ে সচিবালয় ঘেরাও, সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং ইসকন ইস্যু পুঁজি করে বাংলাদেশে একের পর এক অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতে নানা প্রক্রিয়ায় চক্রান্ত করেছেন। ইসকন ইস্যু নিয়ে ভারতের গণমাধ্যমগুলো এখনো ফেক নিউজ প্রচার করছে। তারই ধারাবাহিকতায় কি টঙ্গীর ইজতেমাকে রক্তাক্ত করার টার্গেট করা হয়েছে? সূত্রের দাবি, অন্তর্বর্তী সরকারের ‘তথাকথিত প্রগতিশীলতার চেতনাধারী’ একজন প্রভাবশালী উপদেষ্টা যিনি নানা কারণে বিতর্কিত তিনি দুদিন আগে গাজীপুরের পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ফোন করে টঙ্গীর ইজতেমায় মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের নিরাপত্তা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। শুধু তাই নয়, টঙ্গীর ইজতেমা ইস্যুতে বিবদমান দুই গ্রæপের বিরোধ নিরসনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগকির কমিটির নেতাদের দুই পক্ষের মধ্যে বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই বলছেন, ওই সমন্বয়করা কি সরকারের কোনো পদে রয়েছেন? নাকি তারা সরকারের অংশ? স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ধর্ম মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টারা থাকার পরও ছাত্রনেতারা কার নির্দেশে টঙ্গী গিয়ে সাদপন্থী ও কাকরাইল মসজিদে জুবায়েরপন্থীদের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে সমঝোতার চেষ্টা করলেন? সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনদের অভিযোগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষক বিতর্কিত ওই উপদেষ্টা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের ‘ঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করছেন। সংস্কারের নামে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ দীর্ঘায়িত করতে তিনিই ছাত্রদের ‘কিংস পার্টি’ গঠনে উদ্বুদ্ধ করছেন।
প্রতি বছর টঙ্গী ইজতেমার অংশগ্রহণ করেন ধর্মপ্রিয় শান্তিপ্রিয় নিরীহ মানুষ এবং আলেম ওলামাগণ। টঙ্গী, উত্তরা, সাভার, আশুলিয়াসহ আশপাশের এলাকার মানুষের কাছে এই ইজতেমা ধর্মীয় উৎসবের মতোই। এলাকার নি¤œ আয়ের শ্রমজীবীরা ইজতেমা উপলক্ষে নানান পেশায় নিযুক্ত হয়ে আয়-রোজগার করেন। হাসিনা রেজিমে বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় সরকারের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথকভাবে ইজতেমা করার রেওয়াজ করে দেয়া হয়। তারা সেটি মেনে নিয়ে কয়েক বছর ধরে দুই পক্ষই পৃথক পৃথকভাবে ইজতেমার আয়োজন করে। হঠাৎ করে এবার ইজতেমায় তৌহিদা জনতাকে উস্কে দিলো কারা? কারা রক্তাক্ত হত্যাকাÐ ঘটাল এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রহরাকে উপেক্ষা করে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করল? সংঘর্ষে জড়িতদের চিহ্নিত এবং গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় ভুক্তোভোগীরা। টঙ্গী ও পাশের উত্তরায় বসবাস করেন এমন অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা আতঙ্কের মধ্যে পড়ে গেছেন। ইজতেমায় বিশৃঙ্খলা নিয়ে তারা চরম বিক্ষুব্ধ। তাদের অনেকেই বলছেন, দেশের এই সঙ্কটময় মুহূর্তে টঙ্গীতে ইজতেমা করতে দেয়া উচিত কি-না, তা নিয়ে সরকারের দায়িত্বশীলদের নতুন করে ভেবে দেখা উচিত। কারণ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপাকে ফেলতে ভারত একের পর এক ষড়যন্ত্র করছেন। দেশি অ্যাজেন্ডদের দিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টি করছেন। ইজতেমায় ১০ লাখ থেকে ১৫ লাখ লোকের সমাগম ঘটে। এ সময় পলাতক হাসিনা কিছু তাঁবেদারকে ব্যবহার করে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটালে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কারণ সিভিল প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনে এখনো হাসিনার অনুগত কর্মকর্তারা সক্রিয়। এমনকি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে একাধিক উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ‘ভারতের তাঁবেদারির’ অভিযোগ উঠেছে।
জানতে চাইলে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিব বলেন, নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত তাবলিগ জামাতের যাবতীয় কার্যক্রম দেশের সর্বস্তরে বন্ধ রাখা উচিত। তাবলিগ জামাতের উভয় গ্রæপের কার্যক্রমের সঙ্গে প্রতিবেশী কিছু বিদেশি রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এ কার্যক্রম ব্যবহার করে কিছু রাজনৈতিক শক্তি দেশের অন্তর্বর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকারকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সহজ-সরল তাবলিগ জামাতের উলামায়ে কেরাম ও নেতৃবৃন্দকে বিভ্রান্ত করে দেশে অশান্তি সৃষ্টি করার প্রচেষ্টা চলছে। এ পরিস্থিতিতে তাবলিগ জামাতের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণকর হবে। তিনি আরো বলেন, তাবলিগ জামাতের মধ্যে বিদ্যমান বিভক্তি, ঝগড়া-ফ্যাসাদ এবং সঙ্ঘাতের ফলে ইসলামের শান্তিপূর্ণ ও মহান ভাবমর্যা নষ্ট হচ্ছে। এমনকি এসব ঘটনায় খুন-খারাবির মতো গুরুতর অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, যা ইসলাম ধর্মের মূল শিক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। পবিত্র ইসলামকে কলুষিত করা থেকে বিরত থাকতে সব উলামায়ে কেরাম ও মুসলমানদের সচেতন হওয়া জরুরি। পরবর্তী নির্বাচিত জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত তাবলিগ জামাতের উভয় গ্রæপের কার্যক্রম বন্ধ রাখা উচিত। তাবলিগ জামাতের কার্যক্রমকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। একতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন এবং ইসলামের মর্যাদা রক্ষা করা আমাদের ঈমানি দায়িত্ব।
গাজীপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, বিশ্ব ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের তিন কিলোমিটার এলাকায় জনসমাগম ও নির্দিষ্ট কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি)। এই আদেশ ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখ দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কার্যকর থাকবে বলে এক গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে; টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের তিন কিলোমিটার এলাকায় দুই বা ততোধিক ব্যক্তি একত্রে ঘোরাফেরা, জমায়েত, মিছিল বা সমাবেশ করা যাবে না; কোনো প্রকার অস্ত্র-শস্ত্র, ছুরি, লাঠি, বিস্ফোরক দ্রব্যাদি বহন করা নিষিদ্ধ; কোনো প্রকার লাউড স্পিকার বা উচ্চ শব্দ সৃষ্টি করে জনস্বার্থ বিঘিœত করা যাবে না।
মো. হেদায়েত উল্লাহ, টঙ্গী থেকে জানান, রাত ৩টার দিকে সাদপন্থীরা তুরাগের পশ্চিম তীর থেকে কামারপাড়া ব্রিজসহ বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করতে থাকে। এ সময় ময়দানের ভেতর থেকে জুবায়েরপন্থীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। জবাবের সাদপন্থীরাও পাল্টা হামলা চালায়। এক পর্যায়ে সাদপন্থীরা ময়দানে প্রবেশ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে বহু হতাহত হয়।
গতকাল বুধবার সকালে সাদপন্থীদের অতর্কিত হামলা ও সাথীদের হত্যার প্রতিবাদে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে পুনরায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে ইজতেমা মাঠ, মহাসড়ক ও টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ জেনারেল হাসপাতালেও দুই পক্ষের মুসল্লিদের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েন। বেলা ১১টার পর সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা এসে সব পক্ষকে মাঠ ত্যাগের আহŸান জানালে মুসল্লিরা মাঠ ছেড়ে দেন। এরপর বিজিবি মাঠের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। বিজিবি জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানান, চার প্লাটুন বিজিবি বর্তমানে ইজতেমা মাঠে মোতায়েন রয়েছে।
পুলিশ জানায়, বেশ কিছু দিন ধরেই তাবলিগ জামাতের মাওলানা সাদ অনুসারীদের জোড় ইজতেমাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রæপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। মাওলানা জুবায়ের অনুসারীরা গত ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত জোড় ইজতেমা করেন। এরপর ২০ ডিসেম্বর থেকে মাওলানা সাদ অনুসারীরা জোড় ইজতেমা আয়োজনের ঘোষণা দেন। তাবলিগ জামাতের শূরায়ে নেজামের (জুবায়ের অনুসারী) সাথীরা সরকারি অনুমোদন ছাড়া সাদ অনুসারীদের জোড় ইজতেমার ঘোষণাকে ষড়যন্ত্র ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা বলে অভিহিত করেন এবং তাদেরও প্রতিহত করার ঘোষণা দেন। এ নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলাও দায়ের করে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে সাদ অনুসারীদের ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ ঠেকাতে ময়দানের চারপাশে ও বিভিন্ন সড়কের মোড়ে লাঠি হাতে পাহারা বসায় জুবায়ের অনুসারীরা।
অন্যদিকে, যেকোনো মূল্যে ইজতেমা মাঠ দখলে নিয়ে জোড় ইজতেমা করতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সাদ অনুসারীরা ইজতেমা ময়দানের উদ্দেশে বাস-ট্রাক নিয়ে মাঠে আসতে থাকে। মধ্য রাতে সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে সাদ অনুসারীদের গাড়ি আটকে দেন জুবায়েরপন্থীরা। একপর্যায়ে রাত আড়াইটার দিকে সাদ অনুসারীরা ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করলে উভয় গ্রæপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় গ্রæপের তিনজন নিহত ও অন্তত অর্ধশত মুসল্লি আহত হয়েছেন।