ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের রিপোর্ট: সহিংস হতে পারে নির্বাচন, আসতে পারে নিষেধাজ্ঞা
বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সহিংস হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ। বিরোধীদের দাবি মানছে না সরকার। সঙ্গে আছে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার হুমকি। ফলে চীন ও ভারতের ওপর নির্ভরতা বাড়তে পারে বাংলাদেশের। গ্রুপটি ১৮ই অক্টোবর তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বাংলাদেশ নিয়ে এক প্রতিবেদনে এ কথা বলেছে। এতে আরও বলা হয়, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পদত্যাগের দাবি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার উপেক্ষা করবে বলে মনে হচ্ছে। একই সঙ্গে নির্বাচন তদারকি করার জন্য একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর দাবিও উপেক্ষা করবে। পক্ষান্তরে তারা বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে দমনপীড়ন চালাবে।
এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের সমর্থকরা রাজপথের সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারেন। হামলা হতে পারে দলীয় অফিস ও প্রার্থীদের ওপর। সরকারের বিরোধিতায় আরও সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে ইসলামপন্থি গ্রুপগুলো।
বিজ্ঞাপন নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির আশঙ্কায় সম্ভবত নির্বাচন বর্জন করবে বিরোধী দল। এর মধ্য দিয়ে তারা উগ্র হয়ে উঠতে পারে। আরও সহিংস কৌশল অবলম্বন করতে পারে। নির্বাচনের পর পরিস্থিতি বিশৃংখল হলে হস্তক্ষেপ করতে পারে বিশেষ কোনো বাহিনী। এতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারির নির্বাচনের আগে অথবা পরে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। জালিয়াতির বা বিতর্কিত নির্বাচন হলে তাতে তীব্র সরকারবিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ হতে পারে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র (এবং পশ্চিমা অন্য দেশগুলো) যেহেতু নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে (এর মধ্যে থাকতে পারেন সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা), তাই সরকার অধিক পরিমাণে ভারত ও চীনের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে উঠতে পারে।
ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদ্রোহ নতুন করে দেখা দিতে পারে। কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে সরকারের অস্ত্রবিরতি চুক্তির মর্যাদা অনিশ্চিত। বিদ্রোহী সশস্ত্র শক্তির বিরুদ্ধে সহিংসতা অব্যাহত থাকতে পারে এই গ্রুপটির। পার্বত্য চট্টগ্রামে কথিত ভিত্তি আছে নতুন ইসলামপন্থি গ্রুপ জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়া’র। তাদেরকে নিষ্ক্রিয় করতে অভিযান বৃদ্ধি পেতে পারে। এতে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাবে। এতে আরও বলা হয়, পর্যবেক্ষণ করতে হবে নির্বাচন সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড। এর মধ্যে আছে প্রচারণা ও ভোটগ্রহণ। এসবই সহিংসতার কারণ হয়ে উঠতে পারে। ভারতের উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলো থেকেও অশান্তি ছড়িয়ে পড়তে পারে।
সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ তার রিপোর্টে বলেছে, বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও ভারতের তিনদেশীয় সীমান্ত এলাকায় অস্থিতিশীলতায় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতাকে উৎসাহিত করতে পারে।