ইরানকে ঠেকাতে এক হয়ে লড়বে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল: নেতানিয়াহু

ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা এবং মধ্যপ্রাচ্যে দেশটির প্রভাব ঠেকাতে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গতকাল রোববার ইসরায়েল সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে বৈঠকের পর নেতানিয়াহু এমন মন্তব্য করেন।
রুবিওর সঙ্গে বৈঠকের পর জেরুজালেমে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, তাঁরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল ইরান প্রসঙ্গ।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইরানের হুমকি মোকাবিলায় ইসরায়েল ও আমেরিকা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়বে। তিনি বলেন, ‘আয়াতুল্লাহরা (ইরানের সর্বোচ্চ নেতার পদবি) যাতে কোনোভাবেই পারমাণবিক অস্ত্র না পান, সে বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। একই সঙ্গে এই অঞ্চলে ইরানের আগ্রাসন অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে।’
ইরানে পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার ইঙ্গিত দিয়ে নেতানিয়াহু বলেন, ‘গত ১৬ মাসে ইরানের সন্ত্রাসী অক্ষের (ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো) ওপর কঠিন আঘাত হেনেছে ইসরায়েল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শক্তিশালী নেতৃত্বের অধীনে এই (হামলার) কাজও যে সম্পন্ন করতে পারব, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।’
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বলেন, প্রতিটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর পেছনে, প্রতিটি সহিংস কর্মকাণ্ডের পেছনে, প্রতিটি অস্থিতিশীল কর্মকাণ্ডের পেছনে, এই অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি হুমকিসহ সবকিছুর পেছনে রয়েছে ইরান। পারমাণবিক অস্ত্রধারী ইরানের কোনো স্থান হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কড়া প্রতিক্রিয়া ইরানের
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া হুমকির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তেহরান। আজ সোমবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকায়েই বলেছেন, অন্য দেশকে এ ধরনের হুমকি দেওয়া আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদ উভয়েরই সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেন, জাতিসংঘের পারমাণবিক সংস্থার নিরাপত্তা বিধান মেনেই পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে ইরান। পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির বিষয়ে তেহরানের অঙ্গীকারের বিষয়েও জোর দেন তিনি।
প্রায় ১৬ মাস ধরে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের পাশাপাশি ইরান-সমর্থিত লেবাননের হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনের হুতি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়েছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের প্রতি সহানুভূতিশীল এসব গোষ্ঠীকে ‘প্রতিরোধ অক্ষ’ হিসেবে অভিহিত করে থাকে ইরান।
গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর ইরানের বিরুদ্ধে ‘সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের’ নীতি পুনর্বহাল করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদে তিনি এই নীতি গ্রহণ করেছিলেন।