USA

ইরানের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের 

ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি ইসরায়েলে তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শাস্তি হিসেবে ওয়াশিংটন এ পদক্ষেপ নিল। ইরানের তেল বেচাকেনা এবং পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠান ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ও অর্থ বিভাগ গতকাল শুক্রবার ওই নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ঘোষণা করে। ইরানের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে তেল আবিব যখন দেশটির বিরুদ্ধে সামরিকভাবে জবাব দেওয়ার কথা ভাবছে, তখন এ পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিল ওয়াশিংটন।

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়া, লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ ও বৈরুতে একজন ইরানি জেনারেলকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ১ অক্টোবর ইসরায়েলে প্রায় ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে তেহরান। পাল্টাপাল্টি এসব হামলার ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গতকাল এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘ইসরায়েলে ইরানের নজিরবিহীন হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, ওই কর্মকাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় তেহরানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে ওয়াশিংটন। পরিশেষে আজ আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি; যাতে ইরান সরকার তেলবাবদ রাজস্ব আয় তার পারমাণবিক কর্মসূচি ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার উন্নয়ন, সন্ত্রাসী প্রক্সি বাহিনী ও অংশীদারদের সমর্থন প্রদান এবং মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত জিইয়ে রাখায় ব্যয় করার ক্ষেত্রে বাধা পায়।

ইরানের তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প থেকে শুরু করে একগুচ্ছ খাত যুক্তরাষ্ট্রের নেওয়া নতুন এ পদক্ষেপের আওতায় পড়বে। অথচ আগে থেকেই ইরানি তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল খাতের ওপর বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।

নতুন শাস্তিমূলক পদক্ষেপ দৃশ্যত ইরানের রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরও জোরদার করা ও ইসরায়েলের প্রতি ওয়াশিংটনের অব্যাহত সমর্থন দিয়ে যাওয়ারই একটি বার্তা বলে মনে করা হচ্ছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, ‘ইরানের পেট্রোলিয়াম ও পেট্রোকেমিক্যাল খাতের সঙ্গে যুক্ত যেকোনো ব্যক্তির ওপর এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন বদ্ধপরিকর।’

গতকাল পররাষ্ট্র দপ্তর ছয় প্রতিষ্ঠান ও ছয় যানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়। আর অর্থ বিভাগের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে ১৭টি জাহাজ। যানগুলো সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন, পানামা ও আরও কয়েকটি দেশে নিবন্ধিত।

নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পদ জব্দ করবে মার্কিন প্রশাসন। সেই সঙ্গে তাদের সঙ্গে অর্থনৈতিক লেনদেন করতে পারবে না কোনো মার্কিন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি।

তেহরানের ওপর বর্তমানে যেসব নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তাতে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রে ইরানের সব সম্পদ জব্দ রয়েছে, নিষিদ্ধ রয়েছে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া ও অস্ত্র বিক্রি। 

নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পদ জব্দ করবে মার্কিন প্রশাসন। সেই সঙ্গে তাদের সঙ্গে অর্থনৈতিক লেনদেন করতে পারবে না কোনো মার্কিন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কর্মসূচির আওতায় রয়েছে হাজারো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। এসব নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্যবস্তু ইরানি এবং বিদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। গত বছর সিআরএসের করা এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটন চাইছে ইরান সরকারকে দমিয়ে রাখতে এবং তার আচরণ পরিবর্তন করতে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button