ইরানে পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলছে, রক্ষণশীলদের এগিয়ে থাকার আভাস
ইরানে পার্লামেন্ট ও বিশেষজ্ঞ পরিষদের নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। আজ শুক্রবার সকাল থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এবারের নির্বাচনে ভোট গ্রহণের হার কম হবে এবং রক্ষণশীলরা তাঁদের ক্ষমতাকে আরও দৃঢ় করবেন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশে ইসলামিক কনসালটেটিভ অ্যাসেম্বলির (পার্লামেন্ট) ১২তম মেয়াদে ও অ্যাসেম্বলি অব লিডারশিপ এক্সপার্টসের (বিশেষজ্ঞ পরিষদ) ষষ্ঠ মেয়াদে নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলছে।
একই সূত্রে জানা গেছে, আজ সর্বপ্রথম ভোট দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। তেহরানের মধ্যাঞ্চলীয় খোমেনি হুসাইনিয়া ভোটকেন্দ্রে ভোট দেন তিনি।
ইরানের জনসংখ্যা ৮ কোটি ৫০ লাখ। এর মধ্যে ৬ কোটি ১০ লাখের বেশি মানুষ এবার পার্লামেন্ট ও বিশেষজ্ঞ পরিষদের নির্বাচনে ভোট দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। বিশেষজ্ঞ পরিষদের সদস্যরা ইরানের সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করেন।
পার্লামেন্ট নির্বাচনে ২৯০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৫ হাজার ২০০ প্রার্থী। আর ৮৮ সদস্যের বিশেষজ্ঞ পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৪৪ জন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন পরিচালিত এক জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি মানুষের এ নির্বাচনের ব্যাপারে আগ্রহ নেই।
ইরানে ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত সবশেষ পার্লামেন্ট নির্বাচনে ৪২ দশমিক ৫৭ শতাংশ ভোট পড়েছিল। ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লব সংঘটিত হওয়ার পর দেশটিতে সবচেয়ে কম ভোট পড়ার ঘটনা ছিল এটি।
আজ খামেনি জনগণকে ভোট দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সব জায়গা থেকে আমাদের দেশের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। বন্ধুদের (ইরানের) খুশি করুন এবং অমঙ্গল-কামনাকারীদের হতাশ করে দিন।’
এর আগে খামেনি বলেছিলেন, নির্বাচনে মানুষ অংশ নিচ্ছে কি না, সেদিকে ইরানের শত্রু দেশগুলো তাকিয়ে আছে। তাঁর মতে, ‘যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলসহ বেশির ভাগ ইউরোপীয় দেশ, ইহুদিবাদী, পুঁজিবাদী ও বড় বড় প্রতিষ্ঠান ইরানের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে।’
যুক্তরাষ্ট্র ও এর পশ্চিমা মিত্র দেশ এবং ইসরায়েলকে নিজের শত্রু বলে বিবেচনা করে থাকে তেহরান। ইরানের দাবি, এসব দেশ তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে।
২০২০ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অনুমতি পাননি সংস্কারপন্থী ও মধ্যপন্থী প্রার্থীরা। ওই বছর রক্ষণশীল ও অতিরক্ষণশীলরা পার্লামেন্টের ২৯০ আসনের মধ্যে ২৩২টি আসন পান। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রক্ষণশীলরা এবারও পার্লামেন্টে ক্ষমতা সুসংহত করবেন।