International

ইরানে ব্যাপক হামলা করতে চেয়েও যে কারণে সিদ্ধান্ত বদলায় ইসরায়েল

সিরিয়ার দামেস্কে নিজের কনস্যুলেটে হামলার জেরে গত ১৪ এপ্রিল ইহুদিবাদী ইসরায়েলে প্রতিশোধমূলক নজিরবিহীন হামলা চালায় ইরান। এই হামলায় দেশটি তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে।

এর জবাবে ১৯ এপ্রিল ইরানেও ব্যাপক পরিসরে হামলা করতে চেয়েছিল ইসরায়েল। দেশটির রাজধানী তেহরানের নিকটবর্তী সামরিক ঘাঁটিতেও হামলার পরিকল্পনা ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। ইসরায়েলের কর্মকর্তাদের বরাতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানে বড় ধরনের হামলার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমেরিকাসহ অন্য কয়েকটি মিত্রদেশের কূটনৈতিক চাপে পড়ে ইসরায়েল। শেষ পর্যন্ত ছোট পরিসরে হামলার সিদ্ধান্ত নেয় দেশটি। এর পেছনে আরেকটি কারণ উল্লেখযোগ্য। ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ইরানের ছোড়া প্রায় সবগুলো ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনই ঠেকিয়ে দিয়েছিল ইসরায়েল। এ কারণে বড় পরিসরে হামলা এড়ানোর পক্ষে মত দেয় মিত্রদেশগুলো।

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরান কনস্যুলেটে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এর জবাবে ১৪ এপ্রিল ইসরায়েল লক্ষ্য করে নজিরবিহীন হামলা চালায় তেহরান। তবে ওইসব ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের ৯৯ শতাংশ ঠেকিয়ে দেওয়ার দাবি করে ইসরায়েলি বাহিনী। 

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেহরানের কাছের সামরিক ঘাঁটিসহ ইরানের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটিতে বড় হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল ইসরায়েল। এতে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা ছিল। এমন হামলা চালানো হলে তা এড়িয়ে যাওয়া তেহরানের পক্ষে কঠিন ছিল। ফলে দেশটির পক্ষ থেকে শক্তিশালী পাল্টা হামলা চালানোর ঝুঁকি বাড়ত।

ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সূত্রে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে বড় পরিসরে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ুক, তা চায়নি ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্ররা। তাই ইরানে ব্যাপক হামলা না চালানোর জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। যুক্তরাজ্য ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও একই অনুরোধ জানান। এর জেরেই শেষ পর্যন্ত পরিকল্পনা বাতিল করেন নেতানিয়াহু।

ইসরায়েল ও পশ্চিমা কর্মকর্তাদের মতে, ১৯ এপ্রিল ইরানের পশ্চিমে কয়েক শ কিলোমিটার দূর থেকে ‘অল্প কিছু ক্ষেপণাস্ত্র’ ছোড়ে ইসরায়েলের যুদ্ধবিমান। এছাড়া ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে বিভ্রান্ত করতে ‘কোয়াডকপ্টার’ নামে পরিচিত হামলাকারী ড্রোনও ছোড়া হয়। যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর একটি ইরানের একটি বিমানবিধ্বংসী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় আঘাত হানে। প্রথম ক্ষেপণাস্ত্রটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে—তা জানার পর দ্বিতীয় আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই ধ্বংস করে ইসরায়েলি বাহিনী। এ পদক্ষেপের লক্ষ্য ছিল অত্যধিক ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েল প্রাথমিকভাবে ১৫ এপ্রিল ইরানে হামলা চালাতে চেয়েছিল। এর জেরে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ উত্তর ইসরায়েলে ‘উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হামলা বাড়াতে পারে’—এমন শঙ্কায় পরে ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।

অবশ্য ১৯ এপ্রিল ইরানে হামলার দায় আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি ইসরায়েল। তবে হামলা যে ইসরায়েলই চালিয়েছে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেশটির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। 

অন্যদিকে, ইসরায়েলের পাল্টা হামলা নিয়ে তেমন উচ্চবাচ্য করেনি তেহরানও। এমনকি হামলার জন্য সরাসরি ইসরায়েলকে দায়ীও করেনি দেশটি। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে আরও বড় ধরনের সংঘাতের ঝুঁকি অনেকটাই কেটে গেছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d