USA

ইরান বিষয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে তুলসী গ্যাবার্ডের বিরোধ

ইরান বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ডের বিরোধ দেখা দিয়েছে।

ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পদক্ষেপ বিবেচনার প্রেক্ষাপটে তুলসী গ্যাবার্ড মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পছন্দের তালিকা থেকে সরে গেছেন বলেই মনে হচ্ছে। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ট্রাম্প প্রশাসনের একাধিক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এমনটাই জানিয়েছেন।

আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ৪৩ বছর বয়সী তুলসীকে জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক পদে মনোনীত করেন ট্রাম্প। আলোচনা-সমালোচিত এই মনোনয়ন মার্কিন সিনেটে অনুমোদন পাওয়ার পর গত বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি তুলসী দায়িত্ব নেন। আগে গোয়েন্দা বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিজ্ঞতা না থাকলেও দুই দশকের বেশি সময় মার্কিন বাহিনীতে সেনাসদস্য হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তুলসীর।

এনবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, অতীতে তুলসীকে বিদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের কড়া সমালোচনা করতে দেখা গেছে।

তুলসীর ঘনিষ্ঠরা জোর দিয়ে বলছেন, ইরান ইস্যুতে হোয়াইট হাউসে কিছুটা টানাপোড়েন আছে। তবে জনপরিসরে যে প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে, তার অনেকটাই অতিরঞ্জিত।

২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ৪৩ বছর বয়সী তুলসীকে জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক পদে মনোনীত করেন ট্রাম্প। আলোচিত-সমালোচিত এই মনোনয়ন মার্কিন সিনেটে অনুমোদন পাওয়ার পর গত বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি তুলসী দায়িত্ব নেন। আগে গোয়েন্দা বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিজ্ঞতা না থাকলেও দুই দশকের বেশি সময় মার্কিন বাহিনীতে সেনাসদস্য হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তুলসীর।

অবশ্য এনবিসি নিউজের সঙ্গে কথা বলা কেউই এটা মনে করেন না যে ট্রাম্পের ইরান নীতির কারণে তুলসী প্রশাসন ছাড়বেন, এমনকি যুক্তরাষ্ট্র যদি এই সংঘাতে সরাসরি জড়িয়েও পড়ে।

রাজনৈতিকভাবে তুলসীর নাজুক অবস্থানটি চলতি সপ্তাহে প্রকাশ্যে আসে, যখন ট্রাম্প গত মার্চ মাসে কংগ্রেসে দেওয়া তাঁর (তুলসী) সাক্ষ্য নিয়ে তাঁকে একপ্রকার আক্রমণ করেন।

কংগ্রেসে তুলসী বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মনে করে না যে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে, যা ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী উড়োজাহাজ এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘সে (তুলসী) কী বলেছে, তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমি মনে করি, তারা (ইরান) পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর খুব কাছাকাছি রয়েছে।’

বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এক ব্যক্তি বলেছেন, গত মার্চে কংগ্রেসে তুলসীর সাক্ষ্যের পর থেকে এ পর্যন্ত ইরান বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আসেনি।

কিন্তু একজন প্রেসিডেন্ট যদি প্রকাশ্যে তাঁর জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকের বক্তব্য অস্বীকার করেন, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, এই ইস্যুতে তুলসী কি এখন সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া থেকে ছিটকে পড়েছেন?

এনবিসি নিউজের সঙ্গে কথা বলা কেউই অবশ্য এটা মনে করেন না যে ট্রাম্পের ইরান নীতির কারণে তুলসী প্রশাসন ছাড়বেন, এমনকি যুক্তরাষ্ট্র যদি এই সংঘাতে সরাসরি জড়িয়েও পড়ে।

তা ছাড়া এই বিরোধের বিষয়টি ট্রাম্পের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ জোটের মধ্যকার একটি বিভাজনও প্রকাশ করে। মেগার কিছু সমর্থক ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যেকোনো সামরিক পদক্ষেপে পাশে থাকার পক্ষপাতী। আর অন্যরা বলছেন, এ ধরনের হস্তক্ষেপ ‘আমেরিকা প্রথম’ নীতির পরিপন্থী হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইসরায়েল-ইরান সংঘাত নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ আলোচনা থেকে তুলসীকে কার্যত দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে।

ইসরায়েল-ইরানের মধ্যকার উত্তেজনা নিয়ে আলোচনার জন্য ৮ জুন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের ক্যাম্প ডেভিডে শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তাদের একটি বৈঠক হয়। এই বৈঠকে যোগ দেননি তুলসী। এতে করে প্রশাসনে তাঁর অবস্থান নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন ওঠে।

তবে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা এনবিসি নিউজকে বলেছেন, ক্যাম্প ডেভিডের বৈঠকটিতে তুলসী উপস্থিত থাকতে পারেননি। কারণ, ন্যাশনাল গার্ডের সদস্য হিসেবে তখন তাঁকে পূর্বনির্ধারিত প্রশিক্ষণে অংশ নিতে হচ্ছিল।

গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন, তুলসী একজন সাবেক সেনাসদস্য, একজন দেশপ্রেমিক, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একনিষ্ঠ সমর্থক। ২০২৪ সালে ট্রাম্প যে জোট গড়েছেন, তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ তিনি। তুলসী যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা দলের অবিচ্ছেদ্য সদস্য। যুক্তরাষ্ট্রকে বিদেশি হুমকি থেকে নিরাপদ রাখতে তাঁর নিরলস প্রচেষ্টার জন্য তাঁরা কৃতজ্ঞ।

তবে তুলসীর সাম্প্রতিক ইরান-সংক্রান্ত মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন কিছু রিপাবলিকান। তাঁদেরই একজন লুইজিয়ানার রিপাবলিকান সিনেটর জন কেনেডি। গত সপ্তাহে তিনি তুলসীকে কটাক্ষ করে মন্তব্য দেন।

ট্রাম্প প্রশাসনের দুই কর্মকর্তা বলেন, তুলসী অনেক দিন ধরেই ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পদক্ষেপের বিরোধিতা করে আসছেন। পাশাপাশি তিনি পর্দার আড়ালে কূটনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

bacan4d slot toto