USA

ইলন মাস্ক কেন হঠাৎ রাজনৈতিক ব্যয় কমানোর ঘোষণা দিলেন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্ক তাঁর রাজনৈতিক ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমাবেন বলে জানিয়েছেন। গত বছর ট্রাম্পের প্রেসিডেনশিয়াল প্রচার ও অন্য রিপাবলিকান নেতাদের পেছনে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন (৩০ কোটি) ডলার খরচ করেছিলেন তিনি।

বিনিয়োগকারীদের ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাস্ক গতকাল মঙ্গলবার এ ঘোষণা দেন। এটি তাঁর মনোযোগ আবারও নিজ ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যে ফিরিয়ে নেওয়ার সর্বশেষ প্রকাশ্য ইঙ্গিত।

মাস্ক বলেন, তিনি আরও পাঁচ বছর টেসলার সিইও হিসেবে থাকার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর মধ্য দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনে সম্পৃক্ত থেকেও কীভাবে গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানে নিজ নেতৃত্বের ভূমিকায় ভারসাম্য বজায় রেখেছেন, সে–সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন মাস্ক। ট্রাম্প প্রশাসনে যুক্ত থেকে ফেডারেল সরকারে ব্যাপক কাটছাঁট (খরচ ও জনবল) করেছেন তিনি।

‘রাজনৈতিক ব্যয় ভবিষ্যতে আমি অনেক কম করব,’ কাতারে এক অর্থনৈতিক ফোরামে বলেন মাস্ক। তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, আমি যথেষ্ট করেছি।’

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মাস্ক যদি তাঁর পরিকল্পনা কার্যকর করেন, তবে ট্রাম্প ও রিপাবলিকান পার্টি তাদের সবচেয়ে বড় দাতাকে হারাতে পারে। কিন্তু এটি মাস্কের নিজস্ব প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য লাভজনক হতে পারে। তাঁর সম্পদের বেশির ভাগ অংশ টেসলা ও রকেট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সে বিনিয়োগ করা। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও তাঁর শেয়ার রয়েছে এবং তাতে নেতৃত্বও দেন তিনি।

মাস্ক বলেন, তিনি আরও পাঁচ বছর টেসলার সিইও হিসেবে থাকার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর মধ্য দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনে সম্পৃক্ত থেকেও কীভাবে গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানে নিজ নেতৃত্বের ভূমিকায় ভারসাম্য বজায় রেখেছেন, সে–সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন মাস্ক।

ট্রাম্পের অন্যতম প্রভাবশালী সমর্থক হিসেবে মাস্কের ভূমিকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের মালিকানা পাওয়ার মাধ্যমে আরও জোরালো হয়েছে। তবে টেসলার বিরুদ্ধে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে এবং এর জের ধরে প্রতিষ্ঠানটির বিক্রি ও শেয়ারমূল্য কমে গেছে।

রাজনীতিতে ব্যয় কমানোর ঘোষণা দিলেও ভবিষ্যতে এ ব্যয় পুরোপুরি বন্ধ করার দরজা একেবারে আটকে দেননি ব্যবসায়ী মাস্ক। তিনি বলেছেন, ‘যদি ভবিষ্যতে রাজনৈতিক ব্যয় করার কোনো যৌক্তিক কারণ দেখি, আমি তা করব।’

হোয়াইট হাউসের একটি সূত্র মাস্কের সিদ্ধান্তকে তেমন একটা গুরুত্ব না দিয়ে বলেছে, তিনি এখনো ট্রাম্প ও তাঁর দলের প্রতি পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মাস্কের সমর্থন বিভিন্ন উপায়ে অব্যাহত থাকবে—উপদেষ্টা হিসেবে, আর্থিক অনুদান ও দাতা নেটওয়ার্কে অনানুষ্ঠানিক প্রভাবের মাধ্যমে।

সূত্রটি আরও জানায়, হোয়াইট হাউস মাস্কের এমন পিছু হটাকে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক আক্রমণের যৌক্তিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখছে এবং তিনি কতটা দৃশ্যমান সমর্থক হতে চান, তা পুনর্বিবেচনা করার তাঁর সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

রাজনৈতিক ব্যয় ভবিষ্যতে আমি অনেক কম করব। আমি মনে করি, আমি যথেষ্ট করেছি

ইলন মাস্ক, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সহযোগী

মাস্কের ভাবনা সম্পর্কে অবগত আছেন, এমন আরেকটি সূত্র বলেছেন, মাস্ক পুরোপুরি রাজনৈতিকভাবে সরে যাবেন, এ আশা তাঁরা করছেন না এবং তাঁর সিদ্ধান্ত নিজ ব্যবসাগুলো পুনরুদ্ধারে সহায়তা করার ইচ্ছা থেকেই অংশত এসেছে।

সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচনেও রক্ষণশীল প্রার্থীকে জেতাতে অর্থ ঢেলেছেন মাস্ক

মাস্কের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে রাজনৈতিক খাতে তাঁর প্রধান অর্থায়নকারী সংস্থা ‘আমেরিকা পিএসি’।

গত বছর মাস্ক রিপাবলিকানপন্থী সুপার ‘পিএসি’গুলোর মাধ্যমে কোটি কোটি ডলারের জোগান দেন; যা মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্যগুলোতে দলটির পক্ষে প্রচার ও মিডিয়া কার্যক্রমে ব্যয় হয় এবং ট্রাম্পের বার্তা ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মাস্ক যদি তাঁর পরিকল্পনা কার্যকর করেন, তবে ট্রাম্প ও রিপাবলিকান পার্টি তাদের সবচেয়ে বড় দাতাকে হারাতে পারে। কিন্তু এটি মাস্কের নিজস্ব প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য লাভজনক হতে পারে। তাঁর সম্পদের বেশির ভাগ অংশ টেসলা ও রকেট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সে বিনিয়োগ করা। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও তাঁর শেয়ার রয়েছে এবং তাতে নেতৃত্বও দেন তিনি।

ইলন মাস্ক এ বসন্তে উইসকনসিন সুপ্রিম কোর্টের এক নির্বাচনে রক্ষণশীল প্রার্থীকে সমর্থন দিতে ২০ মিলিয়ন (২ কোটি) ডলারের বেশি ব্যয় করেন। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিচার বিভাগীয় প্রতিযোগিতায় পরিণত হয় এটি। তবে এ নির্বাচনে উদারপন্থী প্রার্থী সহজেই জয়ী হন।

মাস্কের এ পিছু হটা (রাজনৈতিক ব্যয় কমানোর সিদ্ধান্ত) রিপাবলিকানদের ঐতিহ্যবাহী বড় দাতাদের ওপর আরও নির্ভর করতে এবং আগামী বছরের কংগ্রেস নির্বাচন সামনে রেখে তৃণমূল পর্যায়ে তহবিল সংগ্রহ বাড়াতে বাধ্য করতে পারে।

‘এটি কি প্রভাব ফেলতে পারে—এমন প্রশ্নের জবাব হলো, সম্ভবত না–ও ফেলতে পারে। কারণ, অর্থ সংগ্রহের আরও অনেক উৎস রয়েছে,’ বলেন ওয়াশিংটনের একজন অভিজ্ঞ রিপাবলিকান কৌশলবিদ রন বোনজিয়ান। তিনি বলেন, ‘মাস্ক বিষয়টি সহজ করে দিয়েছিলেন। তবে এখন যেহেতু ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট, তিনিই প্রধান তহবিল সংগ্রাহক।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto