ইসরায়েলকে আচমকা ধাক্কা মিসরের
![](https://miprobashi.com/wp-content/uploads/2024/05/prothomalo-bangla_2024-05_163ed153-fe8d-4c13-bd4b-ed4a4042cbb5_Rafa_2.webp)
আইসিজেতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মামলায় যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে মিসর। কোনো কোনো বিশ্লেষক ভাবছেন, মিসরের এই ঘোষণা কি ইসরায়েলের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ক্যাম্পডেভিড শান্তি চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার আভাস?
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ইসরায়েলকে কেউ থামাতে পারছে না। গাজায় নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ, প্রতিবাদ, বিক্ষোভ সত্ত্বেও মিসর সীমান্তসংলগ্ন রাফায় অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। রাফার প্রায় কেন্দ্রে ঢুকে পড়েছে ইসরায়েলি ট্যাংকসহ সাঁজোয়া যান। আগেই রাফা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। যদিও গাজায় নিরাপদ আশ্রয় বলতে কোনো স্থান নেই।
রাফায় ইসরায়েল সর্বাত্মক অভিযান শুরুর সময় মিসরের এক ঘোষণা নেতানিয়াহুর ইসরায়েলের জন্য আচমকা ধাক্কা হয়ে এসেছে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যা চালানোর যে মামলা দক্ষিণ আফ্রিকা করেছে, তাতে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে মিসর। মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১২ মে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজা উপত্যকায় বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে, বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করছে, আইসিজের অন্তর্বর্তী আদেশ অমান্য করছে। এ কারণে কায়রো আইসিজেতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে।
গত অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলের অভিযান শুরুর পর ইরান বা তুরস্কের মতো কড়া ভাষায় কথা বলেনি মিসর। যদিও হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির তৎপরতায় প্রথম থেকেই সক্রিয় রয়েছে দেশটি। আইসিজেতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মামলায় মিসরের যোগ দেওয়ার ঘোষণা আচমকাই ধাক্কা হয়ে এসেছে ইসরায়েলের জন্য।
কেউ কেউ ভাবছেন, মিসরের এই ঘোষণা কি ১৯৭৯ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ক্যাম্পডেভিড শান্তি চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার আভাস?
কেন ধাক্কা
ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্য তথা উত্তর আফ্রিকার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যার যে দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে, তার যোগসূত্র বলা হয়ে থাকে মিসরকে। ইসরায়েল-মিসরের মধ্যে হওয়া ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি যার মূল ভিত্তি। ১৯৭৯ সালে স্বাক্ষরিত ওই চুক্তির মাধ্যমে ইসরায়েল প্রথম কোনো আরব দেশের সঙ্গে কূটনীতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ পায়।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র দপ্তরের সাবেক পরিচালক অ্যালন লিয়েলের মতে, মিসরের এই সিদ্ধান্ত সত্যিই ইসরায়েলের জন্য বড় এক কূটনৈতিক ধাক্কা। ইসরায়েলকে এটা গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। আল–জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের অবস্থানের মূল ভিত্তি মিসর। জর্ডান, বাহরাইন, মরক্কো, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ (ইউএই) যে দেশগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক এগিয়েছে, সেটা মিসরের গত ৪০ বছরের প্রচেষ্টার ফল।
লিয়েলের মতে, ইসরায়েলের যে মানুষগুলো এখন প্রতিশোধের জন্য গাজা অভিযান চালিয়ে যাওয়ার কথা বলছে, শুধু তাদের কথা শুনলে হবে না, ইসরায়েলকে বিশ্ব জনমতের কথাও শুনতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের সার্বিকভাবে বিস্তৃত দৃষ্টিতে দেখতে হবে, শুধু সামনের কয়েক সপ্তাহে গাজায় কী হবে, সেটা নয়, বরং দীর্ঘ মেয়াদে ইসরায়েলের নিরাপত্তার কথা ভাবতে হবে।’
ইসরায়েলি বাহিনী ইতিমধ্যে মিসর সীমান্তের সামরিক উপস্থিতি নিষিদ্ধ থাকা এলাকায় ঢুকে পড়েছে। ফিলাডেলফি করিডোরে ইসরায়েলি বাহিনীর উপস্থিতি দেখা গেছে।
আইসিজে গত শুক্রবার রাফায় অভিযান বন্ধ করতে ইসরায়েলকে নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে কয়েক মিনিটের মধ্যোই রাফায় হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। আইসিজের নির্দেশ মানবে না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলের কয়েকজন মন্ত্রী।
এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) কৌঁসুলি করিম খান গাজায় সম্ভাব্য গণহত্যার জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন, যার কঠোর সমালোচনা করছেন ইসরায়েলের নীতিনির্ধারকেরা।
![](https://images.prothomalo.com/prothomalo-bangla%2F2024-05%2F44136288-39ab-4c09-9287-d5aff6a3fef3%2FRafa-Infographic.jpg?auto=format%2Ccompress&fmt=webp&format=webp&w=640&dpr=1.0)
কিন্তু এই দুই আন্তর্জাতিক আদালতকে উপেক্ষা করায় ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইসরায়েলের পশ্চিমা কিছুমিত্র দেশ ইসরায়েল সরকারের সমালোচনা করা সত্ত্বেও পিছু হটছেন না নেতানিয়াহু। কোনো কোনো বিশ্লেষকের মতে, বিশ্ব জনমত, আন্তর্জাতিক আদালত, মিত্র দেশগুলোর সমোলাচনা—সব মিলিয়ে কখনোই এতটা চাপে পড়েনি ইসরায়েল।
তারপরও গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত মানুষের সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে ৮০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
মিসর কেন কঠোর হচ্ছে
মিসর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছে নিজের ভবিষ্যতের কথা ভেবে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে কাজ করা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আটলান্টিক কাউন্সিলের জ্যেষ্ঠ ফেলো সাহিরা আমিনের মতে, ইসরায়েল যদি রাফায় অভিযান চালায় তাহলে হয়তো অভ্যন্তরীণ ও বহির্বিশ্বের চাপে ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দিতে রাফা ক্রসিং খুলে দিতে মিসর বাধ্য হবে। তখন সীমান্ত পেরিয়ে লাখো ফিলিস্তিনি মিসরের সিনাই উপত্যাকায় আশ্রয় নিতে পারে। সেই ফিলিস্তিনিদের আর কখনোই গাজায় ফিরতে দেবে না ইসরায়েল। ইসরায়েলের কট্টরপন্থী নেতারা ইতিমধ্যে তাদের এই ভাবনার কথা প্রকাশ্যেই বলেছেন। এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সেটা মিসরের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
আরেকটি বিষয় হলো সিনাইদের দিকে ফিলিস্তিনি ঢল নামলে সেই স্রোতে হামাসের নেতা–কর্মীরাও সিনাইয়ে প্রবেশ করবে। তখন সিনাই তথা মিসরের রাফা অংশ থেকে হামাস ইসরায়েলে হামলা চালাতে পারে। ইসরায়েলও পাল্টা হামলা চালালে একটা পর্যায়ে মিসর-ইসরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হবে।
মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি ইতিমধ্যে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে বলেছেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকট সমাধানের ক্ষেত্রে যেন অন্য দেশের ওপর বোঝা চাপিয়ে দেওয়া না হয়। তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করে মিসরে পাঠানো কিংবা ফিলিস্তিনিদের ‘জাতিগত নিধন’ দেখতে চায় না কায়রো।
![ফিলিস্তিনের গাজায় আল দারাজ এলাকায় ইসরায়েলি হামলার পর ধ্বংসাবশেষ থেকে জীবিত লোকজনকে খুঁজে বের করার চেষ্টা স্থানীয়দের। ফিলিস্তিন, ২৪ মে](https://images.prothomalo.com/prothomalo-bangla%2F2024-05%2F6aa06d61-7d95-4caa-91cd-08f0b9ffe8ad%2F151937-01-02.jpg?auto=format%2Ccompress&fmt=webp&format=webp&w=640&dpr=1.0)
ফিলিস্তিনের গাজায় আল দারাজ এলাকায় ইসরায়েলি হামলার পর ধ্বংসাবশেষ থেকে জীবিত লোকজনকে খুঁজে বের করার চেষ্টা স্থানীয়দের।
মিসরের আরেকটি উদ্বেগের জায়গা হলো, ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েল-মিসর সীমান্তে কিছু এলাকা ‘সি’ ও ‘ডি’ হিসেবে চিহ্নিত করা আছে। চুক্তি অনুযায়ী এই এলাকাগুলোয় কোনো সামরিক উপস্থিতি ঘটাবে না দুই দেশ। আবার কিছু এলাকায় নির্দিষ্ট সংখ্যা বা পরিমাণের বেশি সামরিক উপস্থিতি নিষিদ্ধ। এসব এলাকায় সাময়িক বা স্থায়ী কোনো পরিবর্তন করতে চাইলে তা দুই দেশের পারস্পরিক সমন্বয়ে করতে হবে। ইসরায়েল রাফা পূর্ণমাত্রায় অভিযান চালালে চুক্তির এই বিষয়গুলো লঙ্ঘিত হবে বলে আশঙ্কা কায়রোর। তখন চুক্তি টিকে থাকা নিয়েই প্রশ্ন উঠবে।
১৫ মে সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি বাহিনী ইতিমধ্যে সীমান্তের সামরিক উপস্থিতি নিষিদ্ধ থাকা এলাকায় ঢুকে পড়েছে। ফিলাডেলফি করিডোরে ইসরায়েলি বাহিনীর উপস্থিতি দেখা গেছে।
কী বলছে মিসর
রাফায় ইসরায়েলি অভিযান ঘিরে দেশটির সঙ্গে সম্পর্কের পরিধি সীমিত করার কথা বিবেচনা করছে মিসর। মিসরের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সম্প্রতি সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘সবকিছুই সম্ভব। সম্পর্কের পরিধি সীমিত করাসহ সব কিছুই আলোচনার টেবিলে। কিন্তু আমরা এখনো সেই জায়গায় পৌঁছাইনি। আমরা ইসরায়েলিদের সঙ্গে কথা বলছি, একটা ঐকমত্যে পৌঁছতে সবকিছু ব্যাখ্যা করে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি।’ রাফার বিষয়ে মিসর ও ইসরায়েলের মধ্যে সমন্বয় না হলে ‘মারাত্মক প্রতিক্রিয়া’ হবে, সেটা ইসরায়েলকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ওই কর্মকর্তা।
এর আগে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালও এক প্রতিবেদন জানিয়েছিল, রাফা ঘিরে ইসরায়েলি পরিকল্পনার কারণে মিসর ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কের পরিধি কমিয়ে আনার কথা ভাবছে।
ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ সৌকরি অবশ্য ক্যাম্পডেভিড শান্তি চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে কূটনৈতিক উত্তর দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার কোনো পরিকল্পনা কায়রোর নেই। তবে তিনি এটাও বলেছিলেন, তাঁর দেশ তত দিন পর্যন্ত এই চুক্তি মেনে চলবে, যত দিন এই চুক্তি দুই পক্ষের জন্যই লাভজনক হবে।
ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করে মিসরে পাঠানো কিংবা ফিলিস্তিনিদের ‘জাতিগত নিধন’ দেখতে চায় না কায়রো।
আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি, মিসরের প্রেসিডেন্ট
গত সপ্তাহে রাফা সীমান্ত ক্রসিং নিয়ে ইসরায়েলে ও মিসরের মধ্যে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ চলে। অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক ত্রাণ সহায়তা প্রবেশের অন্যতম পথ এই সীমান্ত ক্রসিং। গত মঙ্গলবার ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেন, রাফা সীমান্ত ক্রসিং খুলে দেওয়ার জন্য মিসরকে রাজি করানোর ব্যাপারে তিনি যুক্তরাজ্য ও জার্মানির সঙ্গে কথা বলেছেন। ইসরায়েলি মন্ত্রীর এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় মিসর। মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে জানায়, গাজায় মানবিক বিপর্যয়কর পরিস্থিতির জন্য ইসরায়েল দায়ী। ওই এলাকায় ইসরায়েলে সামরিক অভিযানের কারণে ত্রাণ সহায়তা প্রবেশ করতে পারছে না। সেই দায় মিসরের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে ইসরায়েল।
রাফা সীমান্ত ক্রসিং গত ৬ মে থেকে বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠানোর মূল পথ এই সীমান্ত ক্রসিং
ইসরায়েলের অবস্থান
ইসরায়েলের অবস্থান স্পষ্ট। নেতানিয়াহু বারবার বলে আসছেন, গাজায় হামাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে। রাফায়ও অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। গত ৬ মে যুদ্ধবিরতি প্রশ্নে ‘না’ বলার পর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীকে ‘সবুজ সংকেত’ দিয়েছেন নেতানিয়াহু। এ ক্ষেত্রে বিশ্ব জনমত, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, মানবাধিকার সংগঠনসহ মিত্র দেশগুলোকে উপেক্ষা করছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। তিনি এটাও বলেছেন, কেউ যদি ইসরায়েলের সঙ্গে না–ও থাকে, তবু অভিযান চালিয়ে যাবে ইসরায়েলি বাহিনী।
আইসিজেতে মিসরের যোগ দেওয়ার ঘোষণার পর ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলছেন, মিসরের এ সিদ্ধান্তে আইসিজেতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মামলায় আইনি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কোনো হেরফের হবে না। কিন্তু এই ঘোষণা যে ইসরায়েল–মিসর সম্পর্কের অবনতি আভাস, তাতে সংশয় নেই।
কতটা কঠোর হতে পারবে কায়রো
১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে সিনাই হাতছাড়া হয়েছিল মিসরের। ক্যাম্পডেভিড চুক্তির পর ইসরায়েলের কাছ থেকে সিনাই ফিরে পায় কায়রো। সিনাইয়ে নিজের কর্তৃত্ব বজায় রাখা ও পরোক্ষ সম্পদের মাধ্যমে সামরিক ব্যয় মিটিয়ে অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে চায় মিসর। তাই যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি বজায় রেখে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় রাখতে চায়।
ইসরায়েল-মিসরের চুক্তিকে ‘ঠান্ডা শান্তি’ (কোল্ড পিস) বলা হলেও দুই দেশের মধ্যে শুধু কূটনতিক সম্পর্ক নয়, বাণিজ্যিক ও সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক আছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তিপূণ সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য ওয়াশিংটনের কাছে প্রতি বছর শত কোটি ডলার সামরিক সহায়তা পায় কায়রো, যা ২০১৪ সালে থেকে ক্ষমতায় থাকা মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তা আল সিসির জন্য খুব প্রয়োজন। তাই তিনি যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের বিপক্ষে ঠিক কতটা দৃঢ় অবস্থান নিতে পারেন সে প্রশ্ন থেকেই যায়।