ইসরায়েলকে ২ হাজার পাউন্ডের ১৪ হাজার বোমা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েলকে ইরানের হুমকি, হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধ ঠেকাতে তৎপরতা ওয়াশিংটনের
গাজায় বর্বর হামলা ও গণহত্যা শুরুর পর থেকে প্রায় ৯ মাসে ইসরায়েলকে ২ হাজার পাউন্ডের অন্তত ১৪ হাজার বোমা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব বিধ্বংসী বোমা ছাড়াও দেওয়া হয়েছে হাজার হাজার হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র, যেগুলোর মাধ্যমে নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো যায়। গত বছরের ৭ অক্টোবর পর থেকে ইসরায়েলকে দেওয়া অস্ত্রের চালানের তালিকা থেকে এমন তথ্য দিয়েছেন দুই মার্কিন কর্মকর্তা। খবর রয়টার্সের।
নিজেদের নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই দুই কর্মকর্তা জানান, অস্ত্রের চালানের মধ্যে ছিল ১৪ হাজার এমকে-৮৪ দুই হাজার পাউন্ড বোমা, ২৫ পাউন্ড বোমা ৬ হাজার ৫০০, ৩ হাজার হেলফায়ার স্পষ্টতা-নির্দেশিত এয়ার-টু-গ্রাউন্ড ক্ষেপণাস্ত্র, ১ হাজার বস্টার ও এয়ার ড্রপড ছোট ব্যাসের বোমা ২ হাজার ৬০০। এ ছাড়া ছিল অন্যান্য অস্ত্র।
তবে ওই কর্মকর্তারা সুনির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করেননি, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে কত তারিখ পর্যন্ত এসব চালান গেছে। কিন্তু মোট অস্ত্রের সংখ্যা থেকে বোঝা যায়, অস্ত্র সরবরাহ সীমিত করার আন্তর্জাতিক চাপ এবং সম্প্রতি অস্ত্রের বড় একটি চালান আটকে দেওয়ার সিদ্ধান্তের পরও মার্কিন সামরিক সহায়তায় বড় কোনো ভাটা পড়েনি।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, চালানের বর্ণনা থেকে বোঝা যায়, গাজায় তীব্র সামরিক অভিযানে ব্যবহারের পর যে ঘাটতি হয়েছে, তা পূরণে ইসরায়েলের কী কী প্রয়োজন, তার সঙ্গে এই তালিকার মিল রয়েছে।
সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অস্ত্র বিশেষজ্ঞ টম কারাকো বলেছেন, ‘এই তালিকা সুস্পষ্টভাবে মিত্র ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন প্রকাশ করে। তালিকাভুক্ত অস্ত্রশস্ত্রগুলো ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বা হিজবুল্লাহর সঙ্গে সম্ভাব্য সংঘাতে ব্যবহার করবে।’
গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলে পাঠানো অস্ত্রের সবচেয়ে পূর্ণাঙ্গ পরিসংখ্যান এটি। তবে এই তালিকার ব্যাপারে হোয়াইট হাউস কিংবা ওয়াশিংটনে ইসরায়েলের দূতাবাস কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
এদিকে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার শুরু থেকেই প্রতিবাদ হিসেবে ইসরায়েলি সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোয় রকেট ও ড্রোন হামলা চালাচ্ছে হিজবুল্লাহ। ইরান-সমর্থিত এই সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলা ঠেকাতে লেবানন সীমান্তে সেনা সরিয়ে নিচ্ছে ইসরায়েল। এ অবস্থায় ইরানের জাতিসংঘের মিশন হুমকি দিয়েছে, ইসরায়েল যদি লেবাননে হামলা চালায়, তাহলে ‘ধ্বংসকারী যুদ্ধ শুরু হবে’।
গত কয়েক মাস ধরে ইসরায়েলে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠীটির হামলার তীব্রতা আরও বেড়েছে। হিজবুল্লাহ যেন সীমান্ত এলাকায় আর হামলা না চালাতে পারে, সেজন্য তাদের বিরুদ্ধে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের হুমকি দিয়ে আসছে দখলদার ইসরায়েল।
এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, তারা ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সংঘাত শান্ত করার জন্য কাজ করছেন।
যুদ্ধের আশঙ্কায় এরই মধ্যে জার্মানি ও কানাডাসহ বেশ কয়েকটি দেশ তাদের নাগরিকদের লেবানন ছেড়ে যাওয়ার জন্য সতর্ক করেছে। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র এখনও নিজ নাগরিকদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়নি।